মস্কো, ২৫ মে– গত দুই বছর ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ৷ দুই পক্ষের পক্ষ নিতে গিয়ে বিশ্বের বেশ কিছু তাবড়-তাবড় দেশ একে অপরের বিরোধী পক্ষে দাঁড়িয়ে পড়েছে৷ অপ্রতিরোদ্ধ হিসেবে পরিচিত রাশিয়াকে এতদিন ধরে টক্কর দিয়ে চলেছে ইউক্রেনের মতো ছোট দেশ৷ তবে রাশিয়াও কম যায়না৷ মাঝে-মাঝেই ইউক্রেনকে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি দেখিয়ে চলেছে৷ তারওপর ড্রোন হামলা তো রয়েইছে৷ রাশিয়ার ড্রোনও প্রচুর ক্ষতি করেছে ইউক্রেনের৷ এবার রাশিয়ার সেই ড্রোন হামলা রুখতে এবার ড্রোনের প্রাচীর তৈরি করছে ন্যাটো দেশগুলো! ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বাল্টিক দেশগুলো৷ যার মধ্যে অন্যতম লিথুয়ানিয়া৷ শুক্রবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শত্রুদেশের ফৌজকে রুখে দিতে সীমান্তে ড্রোনের প্রাচীর গড়ার চিন্তাভাবনা চলছে৷ বিশ্লেষকদের মতে, “আগ্রাসী’ মস্কোর দিকেই যে লিথুয়ানিয়ার নিশানা তা বলাই বাহুল্য৷
রাশিয়া ও ইউক্রেনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে শুধু এই দুই দেশ নয় ক্ষতিগ্রস্ত এই দুইদেশের সীমান্তবর্তী বেশ কিছু দেশও৷ সম্প্রতি জঙ্গি হামলা, অনুপ্রবেশ, পাচার রুখতে রুশ সীমান্তবর্তী ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো আলোচনায় বসে৷ এই বৈঠকে লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে ছিল এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, নরওয়ে, পোল্যান্ডের মত দেশও৷ এদিন আলোচনার পর লিথুয়ানিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাগ্নে বিলোতাইতে ঘোষণা করেন, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনার পর একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে৷ নরওয়ে থেকে পোল্যান্ড পর্যন্ত একটি ড্রোনের প্রাচীর তৈরি করা হবে৷ এই ড্রোন ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে আমাদের সীমান্তগুলোর সুরক্ষা সুনিশ্চিত হবে৷’
একই সঙ্গে শক্তিশালী পরিকাঠামো ও উন্নত নজরদারি ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে অ্যাগ্নে বলেন, “আমরা সব সময় চাই শত্রু দেশ থেকে আমাদের দেশকে সুরক্ষিত রাখতে৷ যে কোনও উস্কানিমূলক পরিস্থিতি ঠেকাতে ও পাচার আটকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ শত্রুপক্ষের ‘হানাদার’ যান আটকাতে সীমান্তে অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমও মোতায়েন করা হবে৷” তবে কবে থেকে এই পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে তা স্পষ্টভাবে জানাননি অ্যাগ্নে৷
উল্লেখ্য, গত কয়েকমাসে ইউক্রেনের আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া৷ এবার খারকভের দিকে অগ্রসর হচ্ছে রুশ ফৌজ৷ হামলা বাড়ছে যুদ্ধের এই গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্টে৷ যার মোকাবিলা করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে কিয়েভকে৷ তাই প্রবল চাপের মুখে খারকভ থেকে পিছু হঠছে ইউক্রেনীয় বাহিনী! ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে খারকভ দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া৷ কিন্ত্ত রণক্ষেত্রে পালটা মার দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই শহর পুনরুদ্ধার করে নিয়েছিল ইউক্রেনীয় ফৌজ৷ তবে এবার হারানো জমি ফের দখল করতে খারকভে হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে রুশবাহিনী৷ এই পরিস্থিতিতে প্রবল চাপের মুখে সীমান্তের বেশ কিছু গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নিচ্ছে ইউক্রেন৷