• facebook
  • twitter
Wednesday, 23 April, 2025

প্রতিশোধ নেওয়ার পথে হাঁটবেন না, তা হলে পুরস্কৃত করা হবে: ট্রাম্প

আলোচনায় বসতে চাইলে দরজা খোলা, হতে হবে শ্রদ্ধা এবং সমতার ভিত্তিতে, বার্তা বেজিংয়ের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

মোড় ঘুরল শুল্ক যুদ্ধের। শুল্ক যুদ্ধে চিনের একগুঁয়েমি এবং তার পরিণতি হিসেবে শুল্ক আরোপের উদাহরণ তুলে বিশ্বকে বার্তা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শুল্ক নিয়ে হুঁশিয়ারির পাশাপাশি সমঝোতার বার্তা দিতে ‘পুরস্কৃত’ করার ঘোষণা করলেন তিনি। হোয়াইট হাউসের তরফে ট্রাম্পের একটি বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রতিশোধ নেওয়ার পথে হাঁটবেন না, তা হলে আপনাকে পুরস্কৃত করা হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য বেশিরভাগ দেশের উপর তাঁর আরোপ করা শুল্ক স্থগিত রেখেছেন। যদিও চিনের উপর চাপ বৃদ্ধি করেছেন তিনি। চিনের ক্ষেত্রে কোনও ছাড় দেননি ট্রাম্প। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব বেড়েছে বই কমেনি। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জোরের সঙ্গে বলেছেন, দেশগুলোকে দর কষাকষির টেবিলে আনার জন্যই সাময়িকভাবে এই শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত। 
 
এদিকে ট্রাম্প সমস্ত চিনা পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ কর আরোপ করেছেন। পাল্টা চিনও সমস্ত মার্কিন পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করে মোট ৮৪ শতাংশ হারে শুল্ক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বেজিং। গত কয়েকদিন ধরেই দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দেখিয়েছে। চিনের উপর শুল্ক আরোপকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে হোয়াইট হাউজ বিশ্বের উদ্দেশে বার্তা পাঠিয়েছে, ‘প্রতিশোধ নিতে যাবেন না, তাহলে আপনাকেও পুরস্কৃত করা হবে।’   
 
যেসব দেশের উপর ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেছেন, তাঁদের জন্য এই বার্তা তাতপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বণিক মহলের একাংশের ধারণা, ট্রাম্পের প্রধানত নজর রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর দিকে।কারণ, তারা ইতিমধ্যেই সয়াবিন, গাড়ি-সহ বেশ কিছু মার্কিন পণ্যে বাড়তি শুল্ক চাপানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে। 
 
এদিকে চিনও আমেরিকার হুঁশিয়ারিতে পিছু না হঠে মার্কিন পণ্যের উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছে। শুল্ক আরোপের আগে বেজিংয়ের বানিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘পারস্পরিক শুল্ক সকল দেশের বৈধ স্বার্থের গুরুতর লঙ্ঘন।’ এর আগেও চিনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, বানিজ্য যুদ্ধে কেউই জয়ী হয় না। চিন বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। কিন্তু যখন তার জনগণের বৈধ অধিকার এবং স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, তখন চিন সরকার কোনওভাবেই চুপ করে বসে থাকবে না।’  
 
যদিও এর পাশাপাশি, জিনপিং সরকার পাল্টা শুল্ক নিয়ে সমঝোতার রাস্তা খোলা রাখার কথা জানিয়েছেন। শুল্ক নিয়ে আমেরিকা আলোচনায় বসতে চাইলে দরজা খোলা এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কাছে মাথা নত করবে না চিন। বৃহস্পতিবার স্পষ্ট ভাবে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন চিনের বাণিজ্য দপ্তরের মুখপাত্র হে ইয়ংকিয়ান। তিনি বলেন, ‘যদি আমেরিকা কথা বলতে চায়, তবে আমাদের দরজা খোলাই রয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমতার ভিত্তিতে।’ একই সঙ্গে কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘চাপ দিয়ে, হুমকি দিয়ে কিংবা ব্ল্যাকমেল করে চিনের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসা যায় না।’     
 
বৃহস্পতিবার থেকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সরকারের নতুন শুল্কহার কার্যকর করার কথা। এই পরিস্থিতিতে অন্য দেশগুলির উদ্দেশে ট্রাম্পের এই বার্তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ । পাল্টা শুল্ক নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই আমেরিকা এবং চিন আলোচনায় বসে সমঝোতার পথে হাঁটে কি না, সেদিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।