২০০৫ সাল পর্যন্ত জ্ঞানেন্দ্রই ছিলেন নেপালের রাষ্ট্রপ্রধান। তবে, তাঁর কোনও কার্যনির্বাহী বা রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু, সেই সময় সরকার ও সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের বন্দী করে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে, সেনার সাহায্যে দেশের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করেছিলেন তিনি।পরের বছরই নেপাল জুড়ে শুরু হয়েছিল রাজাকে বহিষ্কারের আন্দোলন। হাজার হাজার লোকের বিক্ষোভের মুখে পড়ে, সংসদের ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন শাহ। দুই বছর পরে নেপালি সংসদ, রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পক্ষে ভোট দিয়েছিল। সেই থেকে রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ, রাজপ্রাসাদ ছেড়ে সাধারণের মতো জীবনযাপন করেন।
কিন্তু, যত সময় যাচ্ছে ততই নেপালিদের মনে প্রজাতন্ত্র নিয়ে হতাশা তৈরি হচ্ছে। এর প্রধান কারণ রাজনৈতিক অস্থিরতা । রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর থেকে গত ষোল বছরে তেরোটি সরকার নেপালের সাধারণ মানুষ। অর্থনৈতিক অবনতি এবং দুর্নীতির জন্যও রাজনীতিবিদদেরই দায়ী করছে নেপালি জনগণ।নির্বাচিত রাজনীতিবিদরা সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের চেয়ে ক্ষমতা ভোগ করতে বেশি আগ্রহী। আর এই সকল কারণেই নেপালের একাংশের মানুষ ফের রাজতন্ত্রকে চাইছেন।
নেপালে দীর্ঘকাল মানুষ বিশ্বাস করত, তাদের রাজারা হলেন বিষ্ণুর একেকজন অবতার। বর্তমানে রাজতন্ত্রের সমর্থকরা বলছেন, ভারত, চিন, আমেরিকার মতো দেশগুলি নেপালের উপর যে চাপ তৈরি করছে, প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছে, তা থেকে দেশকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে একমাত্র রাজাই সঠিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। রাজতন্ত্র না ফিরলে দেশে তরুণদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাও থাকে না। তখন দেশের অস্তিত্বের সংকট দেখা দিতে পারে।
তবে নেপালের রাজনীতিবিদরা বলছেন, রাজতন্ত্র ফেরার কোন সম্ভাবনা আর নেই। রাজারও ক্ষমতায় ফেরার কোন সম্ভাবনা নেই। নেপালি কংগ্রেসের নেতা নারায়ণ প্রকাশ সৌদ জানিয়েছেন, একমাত্র সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজতন্ত্রকে ফেরানো যেতে পরে। তবে, সেটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।