‘আন্দোলনের নামে তাণ্ডব চলছে, বিচার চাই’, বাংলাদেশ ছাড়ার পর প্রথম বিবৃতি হাসিনার

দেশ ছাড়ার পর প্রথমবারের জন্য মুখ খুললেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দাঙ্গাবাজদের শাস্তির পাশাপাশি তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিচার চেয়েছেন হাসিনা। শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বলে মানা হয়।

ছেলে সজীব ওয়াজেদের এক্স হ্যান্ডেলে তিন পৃষ্ঠার একটি আবেগঘন বিবৃতি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট তাঁর বাবাকে হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হারানোর কথা বলেছেন। সেই রাতেই সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধুর পুত্র ও তাঁদের স্ত্রী, তাঁর ভাইয়ের পরিবার, ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ও সহযোগীদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ খোলেন হাসিনা। তাঁর দাবি, প্রতিবাদের নামে সারাদেশে ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবের জেরে ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, সাধারণ মানুষ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, পথচারী ও অফিস কর্মীর মৃত্যুও ঘটেছে।


হাসিনা লিখেছেন, ‘গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলনের নামে যে নাশকতা, অগ্নি সন্ত্রাস ও সহিংসতার কারণে অনেকগুলি তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ এমন কি অন্তঃসত্তা নারী, পুলিশ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সেবী, কর্মজীবী মানুষ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মী , পথচারী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যারা সন্ত্রাসী আগ্রাসনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁদের প্রতি শোক জ্ঞাপন করছি এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলে বাংলাদেশ সরকার। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বাড়িতে এসেছেন। স্বাধীনতার স্মৃতিবহনকারী এই জাদুঘরটিতে কার্যত তাণ্ডব চালানো হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনারও বিচার চান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হাসিনা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে । আজ তা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। আর যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল, তা পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে। চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি, আত্মপরিচয় পেয়েছি, স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে। আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই।’