যুক্তরাষ্ট্রে গোষ্ঠীশাসন গণতন্ত্রের বিপদের কারণ হয়ে উঠছে। অল্প কিছু ধনী মানুষের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। বুধবার জাতির উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণে এই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন বলেন, আগামী সোমবার, ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউস থেকে তাঁর বিদায়ের পরেই আমেরিকায় ‘বিপজ্জনক গোষ্ঠীশাসন’ শুরু হতে চলেছে। তাঁর মতে, এটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা এবং তা মার্কিন গণতন্ত্রে বিপদের কারণ।
আগামী ২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। মেয়াদ শেষের পর বিদায় নেবেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বাইডেন। ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার কয়েকদিন আগেই বিদায়ী ভাষণ দিলেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে তাঁর উত্তরসূরির নাম না নিলেও ভাষণে বাইডেন নিশানা করেন ট্রাম্পকেই। তিনি বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ সম্পদ, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি নিয়ে একটি অভিজাত গোষ্ঠীর শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতি দেশের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। আমাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।’
২০২০ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বাইডেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনেও বাইডেন লড়তে চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করেন। তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন।
এদিন বাইডেন অতি ধনীদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। একটি অতি ধনী ‘প্রযুক্তিগত কমপ্লেক্স’ সম্পর্কেও আমেরিকাবাসীকে সতর্ক করেন তিনি। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি নিয়ন্ত্রণহীন ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। দেশের জন্য সত্যিকারের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
বাইডেন তাঁর ভাষণে সমাজ মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলিকেও আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমেরিকার নাগরিকদের ভুল এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হবে। খর্ব হবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা।’ জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধ এবং পরিবেশ রক্ষায় তাঁর সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপগুলি ট্রাম্পের জমানায় অনুসরণ করা হবে কি না, সে বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেন আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। কারণ এক্ষেত্রে তাঁর সমস্ত পদক্ষেপ প্রভাবশালী শক্তির হুমকির মুখে পড়েছে। ক্ষমতা ও মুনাফার স্বার্থে তারা এই কাজ করছে বলে তিনি জানান।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই–এর বিপদ সম্পর্কেও সতর্ক করেন বাইডেন। তিনি বলেন, এআই বিপুল সম্ভাবনা উপহার দিতে পারে । তবে এক্ষেত্রে নজরদারি না থাকলে নতুন হুমকির জন্ম দিতে পারে।