• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

ট্রাম্প সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে কি থাকতে পারেন টেসলা কর্তা ইলন মাস্ক? আরও কার কার নাম জল্পনায় রয়েছে?

২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন প্রথমবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখনও নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। তাঁর সরকার গঠিত হওয়ার আগে একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে।

ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ফাইল চিত্র

আমেরিকায় দ্বিতীয়বার মসনদে ট্রাম্প। ইতিমধ্যে তাঁর জয়ের খবরে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়করা। টেসলা কর্তা ইলন মাস্ক নির্বাচনের আগে থেকেই ট্রাম্পের পাশে থেকেছেন। তিনি ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে ছিলেন খুবই আশাবাদী। তাঁর সামাজিক মাধ্যম এক্সে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছিলেন।

প্রচার ও আমেরিকার মানুষের সমর্থনে তিনি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন। এবার তাঁর সরকার গঠনের পালা। কিন্তু দ্বিতীয় বারের ট্রাম্প সরকারে কে কে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। সেই তালিকায় নাম উঠে এসেছে একজন সুসি ওয়াইলস নামে এক সুন্দরী মহিলার নাম। তিনিই প্রথম, যিনি হোয়াইট হাউজে কোনও মহিলা চিফ অফ স্টাফ হচ্ছেন। এই সুসি ওয়াইলসই এবারের নির্বাচনী লড়াইয়ে ট্রাম্পের প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৬ সালে এই দায়িত্ব সম্পাদন করেছিলেন ট্রাম্পের জামাই অর্থাৎ ইভাঙ্কা ট্রাম্পের স্বামী জেরার্ড কুশনার।

সুসি ওয়াইলসের পাশাপাশি, আরও এক বিখ্যাত নাম ট্রাম্পের সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে ভেসে উঠেছে। তিনি হলেন টেসলা কর্তা ও স্পেস এক্স কর্ণধার ইলন মাস্ক। তবে মাস্কের নাম এখনও জল্পনার স্তরে রয়েছে। বাস্তবে সেটা কতটা কার্যকরী হবে, সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

কারণ, ২০১৬ সালে ট্রাম্প যখন প্রথমবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন, তখনও নানা জল্পনা শুরু হয়েছিল। তাঁর সরকার গঠিত হওয়ার আগে একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। শোনা গিয়েছিল, সেইসব বিশিষ্ট ব্যক্তিরা নাকি ইলন মাস্কের সরকারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ঠাঁই পেতে চলেছেন। কিন্তু বাস্তবে সেসব কিছুই মেলেনি। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। দেখার বিষয়, টেসলা কর্তা ইলন মাস্ক দ্বিতীয় ট্রাম্প সরকারের কোনও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন কিনা। এবং ট্রাম্পও এব্যাপারে কোনও প্রস্তাব দিয়েছেন কিনা।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প উচ্চকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পর টেসলা কর্তা ইলন মাস্ক ছাড়াও উঠে এসেছে আরও একাধিক ব্যক্তির নাম। এবিষয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে অর্থ, বাণিজ্য, বিদেশ, প্রতিরক্ষা, অভিবাসন ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সচিব পদে কে কে দায়িত্ব পেতে পারেন সে বিষয়ে একটি যুক্তিগ্রাহ্য সম্ভাবনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হতে পারেন স্কট বেসেন্ট। তাঁকে ট্রেজারি সেক্রেটারি বা প্রধান অর্থ সচিব করার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ধনকুবের জন পলসন এবং ট্রাম্পের অন্যতম অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ল্যারি কুডলো এই তালিকায় রয়েছেন। রিচার্ড গ্রেনেলকে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে রয়টার্স। রিচার্ড গ্রেনেল অতীতে জার্মানিতে নিযুক্ত আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এছাড়া ট্রাম্পের প্রথম দফার মেয়াদে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে থাকা রবার্ট ও’ব্রায়েনবিদেশ সচিব হতে পারেন বলে দাবি করেছে রয়টার্স। প্রভাবশালী রিপাবলিকান নেতা বিল হ্যাগারটি এবং সেনেটর মার্কো রুবিওর নামও জল্পনায় রয়েছে। তিনি ট্রাম্পের প্রদেশ ফ্লরিডা থেকে নির্বাচিত। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিব পদে তিনজনের নাম রয়টার্সের আতস কাঁচের তলায় রয়েছে। তাঁরা হলেন মাইক ওয়াল্টজ, মাইক পম্পেও এবং টম কটন। একইভাবে বাণিজ্য সচিব পদে রবার্ট লাইথাইজ়র, আর্থিক পরামর্শদাতা তথা ক্যান্টর ফিটজেরাল্ডের কর্ণধার হাওয়ার্ড লুটনিক, আমেরিকা সেনার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিথ কেলগ, নিরাপত্তা দফতরের প্রধান চাদ ওলফ এবং টম হোমান পেতে পারেন অভিবাসন সংক্রান্ত দফতরের দায়িত্ব। ভারতীয়দের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল পদে জন র‍্যাডক্লিফ, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স)-এর ডিরেক্টর পদে প্রসিকিউটর মাইক লি ছাড়াও তুলসী গ্যাবার্ডকেও এ বার ট্রাম্পের নয়া ‘টিমে’ দেখা যেতে পারে। এমনই জল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

এদিকে ২০১৬ সালে আমেরিকার নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই জল্পনা ছড়িয়েছিল, ট্রাম্পের জামাই এবার দ্বিতীয় ট্রাম্প সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে পারেন। কিন্তু সরকার গঠনের পর দেখা যায়, ইভাঙ্কার স্বামী জেরার্ড কুশনারের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। তাঁকে শ্বশুর ট্রাম্পের পরামর্শদাতা হিসেবেই ক্ষান্ত থাকতে হয়েছিল।

এবার কী হয়, সেটা অবশ্য বোঝা যাচ্ছে না। তবে যে ব্যক্তিই ক্ষমতায় আসুক না কেন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ধরণটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। অন্তত ভারতীয় রাজনীতির মতো স্বজনপোষণ বা পরিবারতন্ত্রের রাজনীতির সম্ভাবনা খুবই কম। সেজন্য ট্রাম্পের পরিবারের পক্ষ থেকে এই সরকারে কোনও দায়িত্ব পেতে পারেন কিনা, এখনই চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বলা সম্ভব নয়।