• facebook
  • twitter
Thursday, 17 April, 2025

তুঙ্গে আমেরিকা-চিন শুল্ক যুদ্ধ, ভারতের সাহায্য চাইল চিন

তুঙ্গে উঠেছে আমেরিকা-চিন শুল্ক যুদ্ধ। দুই দেশের মধ্যে শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে এবার চিনের উপর ১০৪ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক কার্যকর করেছে আমেরিকা।

তুঙ্গে উঠেছে আমেরিকা-চিন শুল্ক যুদ্ধ। দুই দেশের মধ্যে শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে এবার চিনের উপর ১০৪ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক কার্যকর করেছে আমেরিকা। বুধবার থেকেই কার্যকর হয়েছে এই নয়া শুল্কনীতি। অথাৎ চিনের পণ্য আমেরিকার বাজারে প্রবেশ করার আগে সে দেশের সরকারকে ১০৪ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে। পাল্টা মার্কিন পণ্যে চিনও সমহারে শুল্ক আদায় করবে।

হোয়াইট হাউসের এই ঘোষণার পরই ধস নামে এশিয়ার শেয়ার বাজারে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনড়। শুল্ক নীতি সংশোধনের সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ‘মার্কিন শুল্কের অপব্যবহার’ রুখতে এবং মার্কিন শুল্কের এই ভয়কে প্রতিহত করতে ভারতের কাছে আহ্বান জানিয়েছে বেজিং। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া শুল্কনীতির মোকাবিলা করতে ভারত এবং চিনের আরও কাছাকাছি আসা উচিত এবং সঙ্কটে হাতে হাত মিলিয়ে দুই দেশের একে অপরের পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করেন ভারতের চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিঙ।

ইউ জিঙ তাঁর এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে ভারত এবং চিনের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এই সম্পর্কই সব বাধা কাটিয়ে আমেরিকার শুল্কনীতির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। তাঁর কথায়, ‘দুই বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশের উচিত সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য এক সঙ্গে দাঁড়ানো।’ ইউ জিঙের দাবি, চিনের অর্থনীতি এমন একটি ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যা বিশ্ববাণিজ্যে স্থিতিশীল বৃদ্ধিকে সুনিশ্চিত করে এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র মনে করেন, মার্কিন শুল্কের মোকাবিলা করতে গিয়ে দেশগুলি তাদের উন্নয়নের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। বাণিজ্য বা শুল্কযুদ্ধে কেউ কখনও জয়ী হতে পারে না।

গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প নয়া শুল্ক নীতি চালুর পর বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। আমেরিকার মুখের উপর পাল্টা জবাব দিয়ে পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছে চিন। জবাবে ট্রাম্প চিনা পণ্যের উপর আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এর জবাবে বেজিং পাল্টা বলেছে, চোখ রাঙিয়ে তাদের দমিয়ে দেওয়া যাবে না। তারা এই লড়াইয়ের শেষ দেখে ছাড়বে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার মোকাবিলায় ভারতকে পাশে চেয়ে বার্তা দিয়েছে চিন। চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র বলেছেন, সব দেশকেই নিজেদের মধ্যে লাগাতার আলোচনার নীতি অনুসরণ করতে হবে। চর্চা করতে হবে প্রকৃত বহু-পাক্ষিকতার। একতরফা নীতি আরোপের সব ধরনের চেষ্টার বিরুদ্ধে এক সঙ্গে প্রতিরোধ গড়তে হবে।

এমনও দাবি করা হয়েছে, চিনা পণ্যের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাড়তি শুল্কের ফলে অ্যাপল তাদের আইফোন উৎপাদনের বেশিরভাগই ভারতে সরিয়ে আনার পরিকল্পনায় রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে অ্যাপল ভারতে আইফোন একত্রিত করার কাজ করছে।

চিনের মুখপাত্রের বক্তব্য নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি দিল্লি। তবে মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্পের সঙ্গে বোঝাপড়ার রাস্তায় হাঁটলেও চিনের প্রস্তাব নিয়ে দিল্লি তার অবস্থান জানাবে। গত ১ এপ্রিল থেকে ভারত-চিন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ তম বর্ষ উদযাপন শুরু হয়েছে। দু-দেশই এখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। এই সুযোগে চিন দেখাতে চাইছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা একা নয়।

News Hub