জয়শঙ্করের সাংবাদিক বৈঠক সম্প্রচার করায় অস্ট্রেলিয় সংবাদসংস্থাকে ব্লক করল কানাডা

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের অস্ট্রেলিয়া থেকে সাংবাদিক বৈঠক সম্প্রচারের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই  এক অস্ট্রেলিয় সংবাদসংস্থার সম্প্রচার বন্ধ করল কানাডা৷ বৃহস্পতিবারই  ভারতের তরফে জানানো হয়, জয়শঙ্কর এবং অস্ট্রেলিয়ান বিদেশমন্ত্রী পেনি ওংয়ের বৈঠক সম্প্রচার করার পর ওই সংবাদমাধ্যমের দফতর বন্ধ করে দেয় কানাডা৷ এই ঘটনায় ফের কানাডার সরকারের সমালোচনায় বিদেশ মন্ত্রক। বাক্‌স্বাধীনতার নামে কানাডায় ভণ্ডামি চলছে বলে তীব্র সমালোচনা করলেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন , ‘সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলি এবং অস্ট্রেলিয়া টুডে-র নির্দিষ্ট পেজগুলিকে যেভাবে ব্লক করা হয়েছে তাতে কানাডার এই পদক্ষেপ বাক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে। রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা বুঝতে পেরেছি যে সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলি, এই নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমের পেজগুলিকে ব্লক করা হয়েছে৷ এই পদক্ষেপ পেনি ওংয়ের সঙ্গে এস জয়শঙ্করের সাংবাদিক বৈঠকের মাত্র কয়েকঘণ্টা পরেই হয়েছে।’ কানাডার দর্শকরা এই সম্প্রচার দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন রণধীর। রণধীর জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমাদের অদ্ভুত লাগছে৷ তবে এই ঘটনা বাক স্বাধীনতার প্রতি কানাডার ভন্ডামিকে স্পষ্ট করে দিয়েছে৷’ 
 
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবারই ছিল তাঁর সফরের শেষ দিন। অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার আগে ক্যানবেরায় এক সাংবাদিক বৈঠকে কানাডায় ভারত-বিরোধী মনোভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে সরব হন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়াংও ছিলেন ওই যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে। অভিযোগ, সেই সাংবাদিক বৈঠকের ক্লিপটি কানাডায় ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়।
 
উল্লেখ্য, ক্যানবেরা থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মূলত কানাডার সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক শীতল সম্পর্কের সুর ধরা পড়ে জয়শংঙ্করের বক্তব্যে। তিনি বলেন, কোনও প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ তুলছে কানাডা।  কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের গতিবিধির উপরও নজরদারি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান জয়শঙ্কর।

বৃহস্পতিবার নিরাপত্তাজনিত কারণে বেশ কিছু অস্থায়ী শিবির বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টরোন্টোয় ভারতীয় উপদূতাবাস। টরোন্টোয় বিভিন্ন জায়গায় ভারতীয় উপদূতাবাসের তরফে অস্থায়ী শিবির খোলা হয়েছিল। কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়দের কথা ভেবেই  এই শিবিরগুলি খোলা হয়। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে বেশ কিছু শিবির বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টরোন্টোয় ভারতীয় উপদূতাবাসের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায়  একথা জানানো হয়। স্থানীয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত ।

জয়শঙ্কর ব্রাম্পটনের হিন্দু মন্দিরের ঘটনাকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ হিসাবে উল্লেখ করেন৷ জয়শঙ্কর মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, এটি কানাডায় চরমপন্থী শক্তিকে রাজনৈতিক স্থান দেওয়ার ফল৷ কানাডার ব্রাম্পটনে খলিস্তানি পতাকাধারী বিক্ষোভকারীরা হিন্দু সভা মন্দিরে ভক্তদের হেনস্থা করে ৷ মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং ভারতীয় কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানও ভেস্তে দেয় তারা৷ জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা ব্রাম্পটনের মন্দিরে হামলার নিন্দা করছি ৷ আমরা কানাডা সরকারকে আইনের শাসন বলবৎ রাখতে এবং যারা হিংসাত্মক কাজ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য বলেছি। আশা করব, কানাডা সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’