৬ অগাস্ট – বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাল ব্রিটেন। সোমবার বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর পর ব্রিটেনের কাছে ‘আশ্রয়’ চেয়েছিলেন সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আবেদনে এখনও পর্যন্ত সাড়া দেয়নি ব্রিটেন সরকার। তবে শেখ হাসিনার আবেদন এখনও পর্যন্ত গ্রহণ না করলেও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছে ব্রিটেন সরকার। মঙ্গলবার প্রকাশিত সেই বিবৃতিতে ব্রিটেন জানিয়েছে, তারা গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে ঘটে-যাওয়া রাজনৈতিক ঘটনার ‘নিরপেক্ষ তদন্ত’ চায়, এবং তারা চায় রাষ্ট্রপুঞ্জের নেতৃত্বে স্বাধীন ভাবে ওই তদন্ত হোক। যদিও ওই বিবৃতিতে হাসিনার নাম একবারও উল্লেখ করা হয়নি। তাঁকে ব্রিটেনে ‘নিরাপদ আশ্রয়’ দেওয়ার বিষয়েও বিবৃতিতে কোনও কথা বলা হয়নি।
ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডেভিড ল্যামি বলেন,”গত দুসপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে হিংসা চলছে। তাতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। জারি হয়েছে সেনাশাসন। এই পরিস্থিতিতে হিংসা রুখতে প্রত্যেকের মিলেমিশে থাকা প্রয়োজল। কেন বাংলাদেশে হিংসার ঘটনা ঘটল, রাষ্ট্রসংঘের নেতৃত্বে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”
প্রসঙ্গত, আমেরিকারও বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদল এবং তার জন্য হওয়া আন্দোলনে মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চেয়েছে। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, ‘‘আমরা মনে করি বাংলাদেশের আইন এবং গণতান্ত্রিক নীতিকে মাথায় রেখেই সেখানে নতুন সরকার গঠন করা হবে। সেখানে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত অবশ্যই হওয়া উচিত।’’ হাসিনাকে আমেরিকা রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, হাসিনা আমেরিকার সরকারের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন বলে অন্তত তাঁর জানা নেই।
বাংলাদেশের রাশিয়ার দূতাবাসের তরফেও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে মঙ্গলবার। সেখানে মস্কোর তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি চলছে, তা একান্ত ভাবেই বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে তারা মনে করে। তবে বাংলাদেশ যে হেতু রাশিয়ার বন্ধু দেশ, তাই তারা চায়, সেখানে দ্রুত সাংবিধানিক নিয়মনীতি ফিরে আসুক।
বাংলাদেশ থেকে হাসিনাকে নিয়ে গাজিয়াবাদের বিমানঘাঁটিতে এসে অবতরণ করেছিল বাংলাদেশ বায়ুসেনার বিমান।গাজিয়াবাদে নামার পর থেকে হাসিনা এখনও সেখানকার হিন্দন বিমানঘাঁটিতেই রয়েছেন বলে সূত্রের খবর। যদিও হাসিনা ভারতের কাছ থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। একটি অসমর্থিত সূত্রের দাবি, ভারতে আসার পরে বহু বার তিনি লন্ডনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার আবেদনও করেছেন। সেই অসমর্থিত সূত্রেরই দাবি, সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ব্রিটেন।