বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়ন চলছেই। প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনা সামনে আসছে। সেই সঙ্গে সমানতালে চলছে ভারত বিরোধী জিগির। কিন্তু রবিবার যা ঘটল তা বোধহয় সবকিছুকে ছাপিয়ে গেল। রীতিমত হুমকির সুরে ভারতের বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখলের দাবি করলেন বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভি। রীতিমত হুমকির সুরে তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশ নিয়ে যদি ভারতের অশুভ ইচ্ছা থাকে, তাহলে ভারতের তিন রাজ্য তাঁরা যুদ্ধ করে দখল করে নেবেন।
রুহুল কবীর রিজভির এই যুদ্ধ জিগির নিয়ে নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই দাবিকে অনেকে হাস্যকর বললেও, অনেকেই বলছেন চুড়ান্ত উস্কানিমূলক। এই আবহে সোমবার ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশে বিদেশ সচিব পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। হাসিনা সরকার পতনের পর এই প্রথম এই পর্যায়ের বৈঠক হচ্ছে। আলোচনার পরিবেশ ভেস্তে দিতে বিএনপি-র মতো ইসলামপন্থী দলের নেতার এই হুঁশিয়ারি বলে মনে করা হচ্ছে।
শনিবার বিএনপি-র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভির বক্তব্যের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলার সংবাদমাধ্যমগুলিকে একহাত নিয়েছেন তিনি। এমনকি চ্যানেলগুলি হাসিনার ‘ঘুষের টাকায়’ চলছে বলে দাবি ওই নেতার। এর পরই তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে ভারত-বিরোধিতা। রিজভির কথায়, ‘যদি ভাবেন, হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশ আপনারা কব্জা করে নেবেন, এমন অশুভ ইচ্ছা যদি থাকে, তাহলে আমরাও বাংলা-বিহার-ওড়িশা দাবি করব। ওটা আমাদের নবাবের এলাকা। ন্যায্য অধিকার।’ তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, ‘ভারত হিন্দুত্বের জিগির তুলে উপমহাদেশে আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা করছে। তা সফল হবে না।’
বিএনপি যুগ্ম সচিবের এহেন হুঁশিয়ারিতে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে এপারে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, যে ভারতের সাহায্যে ৭১-এর নতুন ইতিহাস লিখেছে বাংলাদেশ, সেই প্রতিবেশীকেই এখন ‘শত্রু’ মনে করছে ইউনূসের বাংলাদেশ। ভারত-বিরোধী শক্তিগুলি সেখানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, বিএনপি নেতার কথাতেই তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে সোমবার ঢাকায় বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠক কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেদিকে নজর থাকবেই।