গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিরোধিতা করল বাইডেন সরকার

জো বাইডেন ও নেতানিয়াহু। ফাইল চিত্র

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়াল আমেরিকা। রাষ্ট্রপুঞ্জে ভেটো প্রয়োগ করে নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়াল বাইডেন সরকার। যা নিয়ে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহল। প্রথমে ইজরায়েল-হামাস সংঘাত বন্ধে আগ্রহ দেখালেও বুধবার ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাইডেন সরকার। নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো প্রয়োগ করে এশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলির শান্তির উদ্যোগ ভেস্তে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকার।

প্রসঙ্গত, সশস্ত্র হামাস গোষ্ঠীর ওপর হামলার ঘটনায় বছর খানেক আগে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। ইজরায়েলের এই হামলাকে তিনি বাড়াবাড়ি বলে মন্তব্য করেছিলেন। সেসময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই হামলাকে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থাৎ ‘ওভার দ্য টপ’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। বাইডেনের এই মন্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তিনি বাইডেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন।

হামাস ও ইজরায়েলের টানা যুদ্ধের জেরে এমনিতেই কঠিন পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছে সেদেশের শরণার্থীরা। অধিকাংশের অনাহারে দিন কাটছে। তা সত্ত্বেও এখনও গাজার বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। সেখানে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত। এশিয়া ও ইউরোপের অধিকাংশ শান্তিকামী দেশ এই হামলা নিয়ে মানবিকভাবে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জেও সরব হয়েছিল এইসব দেশগুলি। কিন্তু আমেরিকা বাধা হয়ে দাঁড়াতেই সব উদ্যোগ ভেস্তে গেল।


যদিও আমেরিকা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও রাষ্ট্রপুঞ্জের বাকি সব সদস্যরা এই প্রস্তাবের পক্ষে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে। বর্তমানে আমেরিকা ছাড়াও রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া, চিন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স স্থায়ী সদস্য। এছাড়া অস্থায়ী সদস্য হিসেবে রয়েছে আরও ১০টি দেশ। যারা যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু বাইডেন সরকার মাঝপথে মত পরিবর্তন করতেই রহস্য বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন গাজায় শান্তি ফেরাতে চাইছে না বাইডেন সরকার? এবিষয়ে একটি বিষয় জল্পনায় উঠে আসছে, আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। যেহেতু হবু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধে সক্রিয় হতে পারেন, সেই আশঙ্কায় উল্টো পথে হাঁটতে শুরু করেছেন বাইডেন। এমনই ধারণা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলের। নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্পের বক্তব্যে সেই ইঙ্গিতও মিলেছে।

এদিকে বুধবার গাজার হামাসমুক্ত অঞ্চল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেখানে গিয়ে তিনি স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠীকে নির্মূল করার কথা ঘোষণা করেন। বলেন, ‘হামাস আর কোনও দিন এই ভূখণ্ড শাসন করতে পারবে না।’