ঢাকা,২৪মার্চ- বাংলাদেশের খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ আর নেই। বিবিসির শ্রোতাদের জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের মধ্যে ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ আর ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’ স্থান পাওয়া এই চারটি গানের শিল্পী শাহনাজ গতকাল শনিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে বারিধারায় নিজ বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে তার বারিধারার বাড়িতে ভিড় করেন শিল্প সংস্কৃতি অঙ্গনের বহু মানুষ।
অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিলপী শাহনাজ রহমত উল্লাহ খ্যাতি পেতে শুরু করেছিলেন ষাটের দশকে শিশু বয়সেই। ১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন শাহনাজ । মেধা, পরিশ্রম, আর কিছুটা ব্যতিক্রমী এবং পরিণত কন্ঠের রহমত উল্লাহর গাওয়া গান ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ ‘ দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি তাদের দলীয় সঙ্গীত হিসেবে বেছে নিলে বিতর্কের মধ্যে পড়ে যান তিনি। এক সময় গানের জগত থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলেন জনপ্রিয় এই সঙ্গীত শিল্পী।শিল্পী কুমার বিশ্বজিত, সুরকার মোস্তাফা কামাল সৈয়দ ও গাজী মাজহারুল আনোয়ার তিনজনই মনে করেন, যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মান না পাওয়ায় অনেকটা অভিযান করেই তিনি গানের জগত থেকে সরে যান।
শাহনাজ রহমত উল্লাহ খ্যাতি পেতে শুরু করেছিলেন ষাটের দশকে শিশু বয়সেই। তিনি গান শুরু করেছিলেন মায়ের অনুপ্রেরণায়। গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের শিষ্য ছিলেন তিনি । মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের মুহূর্তে শাহনাজ রহমত উল্লাহর কন্ঠেই ধ্বনিত হয়েছিল ‘জয় বাংলা- বাংলার জয়’ গানটি।
সুরকার আনোয়ার পারভেজ ও প্রয়াত চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল শিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহর ভাই। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। আর ছেলে এ কে এম সায়েফ রহমতউল্লাহ যুক্ত্ররাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যাল্য থেকে এমবিএ করে এখন কানাডায় থাকেন। শাহনাজ রহমতউল্লাহকে ১৯৯২ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। বনানীতে সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।