ভারত থেকে বেশ ভালো পরিমাণই আলু-পেঁয়াজ আমদানি করত বাংলাদেশ। কিন্তু চিন্ময় দাস গ্রেপ্তারের পর দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের যথেষ্ঠ অবনতি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সবজির ক্ষেত্রে ভারত নির্ভরতা কমাতে চায় বাংলাদেশ। সেই জন্য আলু ও পেঁয়াজ আমদানিতে বিকল্প খুঁজছে বাংলাদেশ। বেশ কিছু দেশকে চিহ্নিত করার কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) এই বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলেছে। আলু-পেঁয়াজ আমদানির সঙ্গে যুক্ত আমদানিকারক, উৎপাদক, পাইকার, কৃষি মন্ত্রক সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছে বাণিজ্য মন্ত্রক। বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন বলেন, আলু ও পেঁয়াজের জন্য বিকল্প উৎসকে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। শীঘ্রই এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আলু বিষয়ে পুরোপুরি ভারতের ওপরই নির্ভরশীল বাংলাদেশ। বর্তমানে শুরু ভারত থেকেই আলু আমদানি করে বাংলাদেশ। আর পেঁয়াজ মূল সরবরাহকারী হল ভারত ও মায়ানমার। এর পাশাপাশি পাকিস্তান, চিন ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করছে বাংলাদেশ। এই তিন দেশেই পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়াতে চায় বাংলাদেশ। আর আলুর আমদানির জন্য চারটি দেশের কথা বলেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সেগুলি হল – জার্মানি, মিশর, চিন ও স্পেন।
আলু ও পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প উৎস বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) শীর্ষ আধিকারিক সেলিম রায়হানশ বলেন, শুধু আলু-পেঁয়াজ নয়, অন্য নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রেও ভারতের বিকল্প উৎস দেশ খোঁজা করা দরকার। এ ব্যাপারে বিটিটিসির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হল – বছরের কোন সময়ে কোন পণ্যের ঘাটতি থাকে, তা আগেই বের করা এবং সে অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া।
ভারতে আলু-পেঁয়াজের দাম খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। বিটিটিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২ ডিসেম্বর ভারতে পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি টন ৫৬৪ মার্কিন ডলার। এক মাস আগে যা ছিল ৫১০ ডলার। এক বছর আগে এই দাম ছিল ২৪৪ ডলার। অর্থাৎ, মাত্র এক বছরের ভারতে পেঁয়াজের পাইকারি দাম দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আলুর ক্ষেত্রেও চিত্রটা খুব একটা আলাদা নয়।
শনিবার বিটিটিসির চেয়ারম্যান মইনুল খান বলেন, সবজির ক্ষেত্রে সব সময় একাধিক দেশ থেকে আমদানি করার সংস্থান থাকা উচিত। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজের ট্রাক আসত দিনে ৪০ থেকে ৫০টি। এখন আসছে ১০ থেকে ১২টি। এর ফলে দেশের বাজারগুলিতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। বছরে বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৬ থেকে ২৮ লক্ষ টন। ফলে একাধিক উৎস থাকলে তো ভালোই হবে।