• facebook
  • twitter
Thursday, 9 January, 2025

পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের সফরের আমন্ত্রণ বাংলাদেশের

ইউনূস সরকার আগেই পাক পণ্য লাল তালিকামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যবসার আড়ালে নানা হাতিয়ার, মাদক, জাল নোটের আদানপ্রদান হতে পারে আশঙ্কা।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেছে বাংলাদেশ সরকার। অন্যদিকে ভারত হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করলো। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা প্রসঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে। সেই সম্পর্কের ফাটল দিয়ে ঢুকে পড়েছে ভারতের শত্রু বলে পরিচিত পাকিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে লড়তে হাসিনাহীন বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও মজবুত করতে তৎপর তারা। একসময় চক্ষুশূল পাকিস্তান বর্তমানে বাংলাদেশের পরম মিত্র। পড়শি দেশে প্রভাব বিস্তার করতে এবার ঢাকায় আসছে ইসলামাবাদের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একাত্তরের গণহত্যা ভুলে গিয়েছে ‘নতুন’ বাংলাদেশ। ভারত বিদ্বেষকে হাতিয়ার করে পাকিস্তানকে আরও কাছে টানছে ইউনূস সরকার। বাংলাদেশকে বন্ধু করে ভারতকে অশান্ত করার ছকেই এগোচ্ছে পাকিস্তান। হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর গদি হারিয়ে দেশত্যাগের পর থেকেই মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের শেহবাজ শরিফ সরকার। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে অস্ত্র বোঝাই পাক জাহাজ।  এছাড়া পাক নাগরিকদের রাখা হচ্ছে পরম সমাদরে।

এবার ইউনূস সরকার ব্যবসার ক্ষেত্রেও পাক ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশের বাজার খুলে দিলো। জানা গিয়েছে, পাকিস্তান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফপিসিসিআই) ২৪ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁরা ঢাকায় থাকবেন।

সূত্রের খবর, ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশ বিদেশমন্ত্রকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে উচ্চ পর্যায়ের এই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা। এতে নেতৃত্ব দেবেন এফপিসিসিআইয়ের সভাপতি আতিফ ইকরাম শেখ এবং সিনিয়র সহসভাপতি সাকিব ফায়াজ মাগুন।

এই প্রতিনিধিদলে পাকিস্তানের বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা থাকবেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ৭১-এর নৃশংসতার পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য থাকলেও পাকিস্তানের প্রবেশ একপ্রকার নিষিদ্ধ ছিল বাংলাদেশে। এবার পাক ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর দু’দেশের বাণিজ্য সংস্থার মধ্যে মউ স্বাক্ষর হতে পারে বলে খবর। বিশেষ করে চাল আমদানি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশহাক দারের বাংলাদেশ সফরের কথা জানা গিয়েছিল।

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই ঢাকায় পা রাখবেন তিনি। এ নিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইশহাক দার বলেন, ‘ঢাকাকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে পাকিস্তান প্রস্তুত। আমাদের বিদেশ দপ্তর অর্থনৈতিক কূটনীতি অনুসরণ করছে। এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে আমরা পাশে থাকতে চাই।’ ইউনূস সরকারের আমন্ত্রণে তাঁর আসন্ন এই সফরকে যুগান্তকারী বলে উল্লেখ করেছে পাক বিদেশমন্ত্রক। প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সেই বৈঠকের পরও ঘোষণা করা হয় যে দুই দেশই বিভিন্ন স্তরে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করেছে। খবর অনুসারে, এবার বাংলাদেশে পাকিস্তানী ব্যবসায়ীদের ভিড় বাড়বে।

ইউনূস সরকার আগেই পাক পণ্য লাল তালিকামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যবসার আড়ালে নানা হাতিয়ার, মাদক, জাল নোটের আদানপ্রদান হতে পারে আশঙ্কা। এছাড়া হাসিনা সরে যাওয়ার পর মাথাচারা দিয়েছে পাকপন্থী জামাত। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়িয়ে তুলেছে আনসারুল্লা বাংলা টিম (এবিটি)। যাদের যোগাযোগ রয়েছে বিভিন্ন পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে।