বাংলাদেশে ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি বা লকডাউন শেষে অফিস আদালত খোলার প্রথম দিনেই আজ করোনা মহামারীতে রেকর্ড ৪০ জনের মৃত্যুর খবর দিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের কথাও জানানো হয়। আর গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৫৪৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ পর্যন্ত মোট মারা গেলেন ৬৫০ জন। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানানো হয়। সব মিলে দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৪৭ হাজার ১৫৩ জন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় সংক্রমিত ১ হাজার ৭৬৪ জন শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন। ব্রিফিংএ আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪০৬ জন। এ নিয়ে সর্বমোট ৯ হাজার ৭৮১ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৯৪০ টি নমুনা। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তের ঘোষণা আসে। আর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
করোনার ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানায় জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, লকডাউন উঠে গেছে। এখন সবাইকে আরও বেশি সাবধান থাকতে হবে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে, করোনা প্রতিরোধে যা সবাইকে মেনে চলতে হবে। মাস্ক পড়া অত্যাবশ্যক।
বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবসের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অধ্যাপক সুলতানা তামাক ছাড়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ধুমপায়ীরা করোনায় আক্রান্ত হলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি এবং মৃত্যু ঝুঁকিও বেড়ে যায়। করোনাভাইরাসের মহামারী ঠেকাতে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে সীমিত আকারে আজ থেকে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস খুলেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও চালু হয়েছে পুরোদমে। এমনকি সীমিত পরিসরে গণপরিবহণ, যাত্রীবাহী নৌযান ও ট্রেনচলাচল শুরু হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভোলা হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে করোনাভাইরাস (কোভিড ১৯) দ্বারা আক্রান্ত না হয় সেজন্য এখনই শিক্ষ প্রতিষ্ঠান খাোলা হবে না। রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে ২০২০ সালের মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ কার্যক্রমের উচ্ছ্বাধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হয়তো কলেজ এখন আমরা খুলবো না, খুলতে পারছি না। আমরা ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে চাচ্ছি। যাতে এই করোনাভাইরাস দ্বারা শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত না হয়, কারণ এরা আমাদের ভবিষ্যৎ। আমি ভবিষ্যৎ তো ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। সেই কারণে আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনই উন্মুক্ত করবো না। আমরা দেখি এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারলে পর্যায়ক্রমে তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত করার।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে অনুরোধ করবো সবাই যেন ঘরে বসে পড়াশোনা করে। এটা পড়াশোনার একটা ভালো সুযোগও। আমাদের নিজেদেরও এখন বেশি কাজ নেই, অনেক কিছু জানার, পড়ার সুযোগ পাচ্ছি। সেটাও কম কথা না। এখানে আমি বলবো সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করবে।