সাত দিনে লুট হওয়া অস্ত্র ফেরানোর হুইপ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের 

পড়শী বাংলাদেশে অশান্তির আগুন জলে উঠেছিল ছাত্র বিক্ষোভের জেরে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের আগুন পুড়িয়েছে দেশের গোটা শাসন ব্যবস্থাকেই। পাল্টে দিয়েছে হাসিনা সরকারকে। দেশে বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু হাসিনার পরিত্যাগের পর দেশে অরাজকতা-লুটরাজে লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয়েছে আন্দোলনকে।

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ার পরই গণবভন থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি স্থানে যেভাবে ভাঙচুর-লুটপাট করা হয়েছে তাতে গোটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন খোরাক। ছড়িয়ে পড়া নানান ভিডিওতে দেখা গিয়েছে কিভাবে একদল উন্মুক্ত জনতা গণভবন থেকে দামি জামদানী শাড়ি থেকে শুরু করে হাঁস, মুরগি, কিংবা ড্রেসিং টেবিল, এসি থেকে মাথার বালিশ- হাসিনার পছন্দের যা কিছু ছিল, সব তুলে নিয়ে যায়। বাদ যায়নি গণভবন। লুটপাট, ভাঙচুর, মারধর, খুন— কিছুই বাদ যায়নি। বিভিন্ন থানা এবং অস্ত্রভান্ডারে লুট চালানো হয়েছে। যে যেমন পেরেছেন, অস্ত্র তুলে নিয়েছেন। সেই সব লুট হওয়া অস্ত্রই এখন অন্তবর্তী সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারও গঠিত হয়েছে। তার পর এখনও পুরোপুরি শান্ত হয়নি ভারতের পড়শি দেশ। সে দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় হিংসার ঘটনা ঘটছে। অস্ত্র নিয়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। তার পরই নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। লুট হওয়া সব অস্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘১৯ অগস্টের মধ্যে থানায় সব অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান করছি।’


বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় সাখাওয়াত বলেন, ‘নিষিদ্ধ অস্ত্র সাধারণ মানুষের হাতে কী ভাবে গেল? একটা দেশে এমন চলতে পারে না। যাঁদের কাছে নিষিদ্ধ অস্ত্র আছে, আমি তাঁদের অনুরোধ করছি সাত দিনের মধ্যে যেন থানায় তা জমা করে দেন। নিজে না হলেও অন্য কারও হাত দিয়ে অস্ত্র থানায় পৌঁছে দিন।’ সাখাওয়াত আরও জানিয়েছেন, যদি সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা না পড়ে, তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। লুট হওয়া অস্ত্র খুঁজতে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে বলেও জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘মারামারি করে কোনও লাভ নেই। আমরা আর কোনও মৃত্যু চাই না।’ সাখাওয়াত জানান, দেশের পুলিশের পোশাক এবং লোগো পরিবর্তন করা হবে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঢাকার থানাগুলি প্রায় অচল হয়ে পড়ে। প্রায় সব থানাই পুলিশশূন্য। শুধু থানা নয়, ঢাকার রাস্তায় পুলিশের দেখা মেলেনি। ভেঙে পড়েছিল পুলিশের জরুরি পরিষেবাও।