রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে আরও রুশ সেনাবাহিনীতে থাকা আরও এক ভারতীয়র মৃত্যু হল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। জখম হয়েছেন আরও একজন ভারতীয়। পাশাপাশি ভারতের তরফে একথাও জানানো হয়েছে যে, এ ব্যাপারে রাশিয়ার সরকারকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয়দের দ্রুত ফেরাতে হবে, সেই কথাও জানানো হয়েছে।
রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে থাকা সব ভারতীয়কে দেশে ফেরাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘কেরলের এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। আরেকজন আহত, মস্কোর একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।’ পাশাপাশি দিল্লিতে রাশিয়ার দূতাবাসেও যোগাযোগ করেছে সরকার। এসনটাই জানিয়েছেন রণধীর জয়সওয়াল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, বাকি ভারতীয় নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’ এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে একটি পোস্টও করেন জয়সওয়াল।
কেরলের ত্রিশূরের বাসিন্দা বিনিল বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ করতেন। তবে মোটা বেতনের চাকরির জন্য তিনি রাশিয়ায় যান। বিনিল এবং তাঁর এক বন্ধু রাশিয়ায় পাড়ি দেন। যদিও পরে তাঁরা জানতে পারেন, সেখানে তাঁদের কাজ করতে হবে রুশ সেনার হয়ে। বিনিলের পরিবারের দাবি, তাঁদের ছেলে বিনিল এবং তাঁর বন্ধু জৈন ড্রোন হামলায় আহত হন। পরে বিনিলের মৃত্যু হয়। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিনিলের দেহ দ্রুত দেশে ফেরাতে মস্কোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে দিল্লি।
২০২৪ সালের শুরুর দিকেই রুশ সেনায় ভারতীয়দের নিয়োগের বিষয়টি নজরে আসে। রুশ সেনার সহযোগী হিসাবে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রায় শতাধিক ভারতীয়কে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ওই ভারতীয়দের রুশ সেনায় নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের পরিস্থিতিতেও তাঁদের ব্যবহার করা হয়েছিল বলে খবর।
গত বছরের জুলাই মাসে মস্কো সফরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রুশ সেনাবাহিনীতে ভারতীদের উপস্থিতি বিষয়ে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা হয় প্রধানমন্ত্রীর। একান্ত বৈঠকে ভারতীয় নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে পুতিনকে অনুরোধ করেন মোদী। তার পর থেকেই একে একে রুশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে পুতিন সরকার। কিন্তু তার পরও এখনও কয়েক জন ভারতীয় রুশ সেনাবাহিনীতে আছেন। তাঁদেরই ফেরানোর ব্যাপারে আবার এক বার তৎপর হল দিল্লি।
গত বছরের অক্টোবরে সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল যে, ৮৫ জন ভারতীয় নাগরিককে রাশিয়ার সেনাবাহিনী থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ জনকে মুক্তির চেষ্টা চলছে।