মলদ্বীপকে ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু’ বানাতে মাঠে নেমে পড়ল আমেরিকা

ওয়াশিংটন, ৯ ফেব্রুয়ারি– মলদ্বীপের নতুন শাসক মুইজ্জুর জমানায় ভারতের সঙ্গেও এই দ্বীপরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে গত কয়েক মাসে৷ কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে মুইজ্জু বরাবর চিনপন্থী হিসাবে পরিচিত৷ ক্ষমতায় আসার পরে প্রথমেই তিনি চিন সফর সেরে এসেছেন৷ অন্যদিকে, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো নয়, তাই মুইজ্জুরও ভারতের সঙ্গে সু-সম্পর্ক রাখতে রাজি নয়৷ তবে এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে আমেরিকা মলদ্বীপকে বন্ধু আখ্যা দিয়ে নতুন জল্পনার ইঙ্গিত দিল ওয়াশিংটন৷
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু দেশ মলদ্বীপ৷ ভারতের পড়শিকে এমন ভাবেই ব্যাখ্যা করল আমেরিকা৷ বৃহস্পতিবার তারা জানিয়েছে, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে মুক্ত, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রাখতে মলদ্বীপের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ৷ দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার বন্ধন দৃঢ় করতে বদ্ধপরিকর ওয়াশিংটন৷
সম্প্রতি আমেরিকার দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ায় দায়িত্বে থাকা সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু মলদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন৷ গত নভেম্বরেই মলদ্বীপে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে৷ সেই নতুন শাসকের সঙ্গে কথাবার্তা, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্যই আমেরিকার প্রতিনিধি হিসাবে গিয়েছিলেন ডোনাল্ড৷ প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি৷
তাঁর গত ২৯-৩০ জানুয়ারির মলদ্বীপ সফর প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মুখপাত্র বলেন, ‘‘মলদ্বীপের সঙ্গে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করতে আমেরিকা আগ্রহী৷ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় মলদ্বীপ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু৷’’
মলদ্বীপে আমেরিকার কোনও দূতাবাস এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি৷ তা তৈরির কাজ চলছে৷ দূতাবাস দ্রুত গডে় তোলার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে দুই রাষ্ট্রের৷
উল্লেখ্য, মলদ্বীপের নতুন শাসক মুইজ্জু বরাবর চিনপন্থী হিসাবে পরিচিত৷ ক্ষমতায় আসার পরে প্রথমেই তিনি চিন সফর সেরে এসেছেন৷ ভারতের সঙ্গেও এই দ্বীপরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে গত কয়েক মাসে৷ এই পরিস্থিতিতে মলদ্বীপের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট পেশ করেছে বিশ্ব অর্থভান্ডার আইএমএফ৷ তারা মলদ্বীপকে সতর্ক করে জানিয়েছে, ঋণের দায়ে ফেঁসে যেতে পারে মুইজ্জু সরকার৷ ঋণ নেওয়ার নিরিখে তারা ‘বড় ঝুঁকি’র মধ্যে রয়েছে৷ উল্লেখ্য, মলদ্বীপকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ বাডি়য়ে দিয়েছে চিন৷ আইএমএফ চিনের নাম না করেই দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সতর্ক করেছে৷
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লক্ষদ্বীপ সফরকে কেন্দ্র করে মলদ্বীপের মন্ত্রীদের অবমাননাকর মন্তব্য ভারতের সঙ্গে এই পড়শি দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে৷ মুইজ্জু মলদ্বীপের মাটি থেকে ভারতের সেনা সরিয়ে নিতেও বলেছেন৷ বেঁধে দিয়েছেন সময়৷ এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সঙ্গে মলদ্বীপের ঘনিষ্ঠতা ভারতের পক্ষে আশার, না হতাশার, তার উত্তর দেবে সময়৷