• facebook
  • twitter
Thursday, 26 December, 2024

সিরিয়ার ৭৫টি আইসিস জঙ্গিদের ঘাঁটিতে হামলা চালাল আমেরিকা

বিদ্রোহীরা দামাস্কাসের দখল নেওয়ার পরেই সিরিয়ার আইসিস জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। রাজধানী দামাস্কাস এখন বিদ্রোহীদের দখলে। সেই সুযোগে সিরিয়ায় হামলা চালাল আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার ৭৫টি আইসিস ঘাঁটিতে গোলাবর্ষণ করেছে তারা। এ নিয়ে রবিবার বিবৃতিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।আসাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়াকে 'ন্যায়বিচারের মৌলিক কাজ ' এবং 'সিরিয়ার জনগণের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত ' বলে অভিহিত করেন বাইডেন।

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সিরিয়া ছেড়েছেন।বিদ্রোহী নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বিশাল জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে ঘোষণা করেন, ‘এই মহান বিজয়ের পর এই অঞ্চলের জন্য একটি নতুন ইতিহাস লেখা হচ্ছে।’  তাঁর ঘোষণা, কোনও গোষ্ঠী নয়, জিতে গিয়েছে গোটা সিরিয়াই। অন্যদিকে, বিদ্রোহীরা দামাস্কাসের দখল নেওয়ার পরেই সিরিয়ার আইসিস জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। রাজধানী দামাস্কাস এখন বিদ্রোহীদের দখলে। সেই সুযোগে সিরিয়ায় হামলা চালাল আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের তরফে জানানো হয়েছে, সিরিয়ার ৭৫টি আইসিস ঘাঁটিতে গোলাবর্ষণ করেছে তারা। এ নিয়ে রবিবার বিবৃতিও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।আসাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়াকে ‘ন্যায়বিচারের মৌলিক কাজ ‘ এবং ‘সিরিয়ার জনগণের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত ‘ বলে অভিহিত করেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘ইসলামিক স্টেটকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে দেওয়া হবে না।’

সিরিয়ায় আসাদের পতনের পর থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠেছে আমেরিকা। বিদ্রোহীদের জয়ের কয়েক ঘণ্টা পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের তথা আইএসআইএস শিবিরগুলিকে লক্ষ্য করে একাধিক বিমান হামলা চালায়। রবিবার রাতে সিরিয়ার অন্দরে ৭৫টি আইসিস জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে তারা হামলা চালিয়েছে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্ট জানিয়েছেন, সিরিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তরের সুযোগে নিজেদের চাঙ্গা করে তোলার চেষ্টা করবে আইসিস জঙ্গিরা। সেটা আমেরিকা কিছুতেই হতে দেবে না। ইতিমধ্যেই সিরিয়ায় মোতায়েন রয়েছে ৯০০ মার্কিন সেনা।  মার্কিন সেনাবাহিনী বি-৫২ বোমারু বিমান, এফ-১৫ জেট এবং এ-১০ বিমান সহ একাধিক বিমান বাহিনীর সাহায্যে হামলা চালায়।    
 
রবিবার ভোরে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসে ঢুকে পড়েন বিদ্রোহীরা। দামাস্কাসে ঢুকে ‘যুগের অবসান’ ঘোষণা করেন তাঁরা ।  ‘স্বাধীনতা’র আনন্দে সিরিয়ার কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয় রাজনৈতিক বন্দিদের। রবিবার গভীর রাতে মস্কোর তরফে জানানো হয়, সপরিবারে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন আসাদ। তার পরেই বিজয়োল্লাসে ফেটে পড়ে সিরিয়ার বিদ্রোহী সংগঠন তাহরির আল শাম। আসাদের পতন প্রসঙ্গেও রবিবার হোয়াইট হাউস থেকে মন্তব্য করেন বাইডেন। তাঁর কথায়, ‘এত দিনে ন্যায়বিচার হয়েছে। সিরিয়ার পীড়িত জনগণের কাছে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
 
আল কায়দার শাখা সংগঠনের প্রধান জোলানি বিখ্যাত উম্মায়াদ মসজিদে গিয়ে বিজয় ভাষণ দেন। বিদ্রোহী নেতা বলেন, ‘ আমাদের সাফল্য গোটা মধ্যপ্রাচ্যের কাছেই ঐতিহাসিক। কেবল আমরা নয়, জিতে গিয়েছে গোটা দেশ। যাঁরা  কারাগারের অন্ধকারে কষ্ট সহ্য করেছেন, তাঁদের হাত ধরেই এই  সাফল্য এসেছে। আজ পরিশুদ্ধ হল সিরিয়া।’ 
 
২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার মসনদে ছিলেন আসাদ। তাঁর পরিবার ছয় দশক ধরে সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিল। ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে, বাস্তুচ্যুত করেছে জনসংখ্যার অর্ধেককে। গত ২৭ নভেম্বর সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম। ধীরে ধীরে তারা দামাস্কাসের দিকে অগ্রসর হয়। দখল করে নেয় একের পর এক শহর। রবিবার বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাজধানীতে ঢুকে পড়লে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট আসাদ।আসাদ সরকারের পতন রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাসের আশা জাগিয়ে তুললেও আইসিস-এর পুনরুত্থান এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা নিয়েও উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে প্রবেশ করেছে সিরিয়া। এই পরিস্থিতিতে সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে আন্তর্জাতিক মহল।