• facebook
  • twitter
Sunday, 8 September, 2024

৩  ঘন্টার জন্য বেরিয়ে নিখোঁজ ১০ দিন, জঙ্গল থেকে উদ্ধার করল ড্রোন

ক্যালিফোর্নিয়া, ১০ জুলাই –  মাত্র তিন ঘণ্টার জন্য হাঁটতে বেরিয়ে নিখোঁজ।  তারপর যেন সেই চেনা গল্পের ছন্দে ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ এর মতো চেনা পরিচিত রাস্তা থেকে এক অজানা জগতে পাড়ি। হাঁটতে গিয়ে যে তাঁর জীবনে এমন বিপদ ঘনিয়ে আসবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি বছর চৌত্রিশের লুকাস ম্যাকক্লিশ। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সান্টা ক্রুজ়ের পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়ে দিক্‌ ভুলে

ক্যালিফোর্নিয়া, ১০ জুলাই –  মাত্র তিন ঘণ্টার জন্য হাঁটতে বেরিয়ে নিখোঁজ।  তারপর যেন সেই চেনা গল্পের ছন্দে ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ এর মতো চেনা পরিচিত রাস্তা থেকে এক অজানা জগতে পাড়ি। হাঁটতে গিয়ে যে তাঁর জীবনে এমন বিপদ ঘনিয়ে আসবে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি বছর চৌত্রিশের লুকাস ম্যাকক্লিশ। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সান্টা ক্রুজ়ের পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়ে দিক্‌ ভুলে পথ হারিয়ে ফেলেন।  অবশেষে ১০ দিন পর লুকাসকে জঙ্গলে খুঁজে পান  উদ্ধারকারীরা।

ঘটনার শুরু ১১ জুন। সেদিনই পথ চলা শুরু করেছিলেন লুকাস। যাত্রাপথ ছিল মাত্র তিন ঘণ্টার। ফলে সঙ্গে বিশেষ কিছুই ছিল না লুকাসের। এমনকি, মোবাইল ফোনও না । লুকাসের পরিবারের লোকেরাও তাঁর নিঁখোজ হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানতেন না । ১৬ জুন পারিবারিক নৈশ্যভোজে লুকাস যোগ না-দেওয়ায় তাঁরা চিন্তায় পড়ে যান। তারপরই পুলিশে খবর দেওয়া, শুরু হয় খোঁজখবর।
 
পথ হারিয়ে জঙ্গলে ৯ রাত, ১০ দিন কাটানোর পর লুকাসের সন্ধান পাওয়া যায় । শেরিফের অফিস থেকে জানানো হয়, অনেকেই জঙ্গল থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার শুনতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক কোন জায়গা থেকে সেই শব্দ আসছিল তা  ঠাওর করা যাচ্ছিল না। লুকাসকে খুঁজতে ড্রোনের সাহায্য নিয়েছিল সান্টা ক্রুজ় শেরিফের অফিস। কে-৯ স্নিফার কুকুরের সাহায্যও নেওয়া হয়েছিল।
 

উদ্ধারকারীদের দেখার পর  কান্নায় ভেঙে পড়েন লুকাস। লুকাস বলেন, “সারা বছরের হাঁটা এই ১০ দিনে হেঁটে নিয়েছি আমি । জলের তৃষ্ণা মেটাতে  ঝর্না থেকে জুতোয় ভরে জল খেয়েছি। খিদের মুখে বুনো ফল খেয়ে দিন কাটিয়েছি। সাহায্যের জন্য প্রাণপণ চেঁচিয়েও কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারিনি। আমি ক্লান্ত।” লুকাস দিনের বেলায় রোদ এড়িয়ে থেকেছেন এই ক’দিন। রাতে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে গাছের ফাঁপা গুঁড়িতেও আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “এক দিন একটি পাহাড়ি সিংহ আমার পিছু নিয়েছিল। বেশ কিছু ক্ষণ সে আমায় অনুসরণ করে। যদিও আমি তার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেই চলছিলাম।” 

লুকাসের ওজন কমেছে  ১৩ কেজি। প্রাথমিক চিকিৎসার হয়েছে তাঁর। শরীরে বড় কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। চেনা রাস্তা যা এভাবে  হারিয়ে ফেলবেন তা স্বপ্নেও ভাবতেও পারেননি লুকাস। তার কথায় , “এই রাস্তায় আরও অনেক বার হেঁটেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক দাবানলের ফলে যাত্রাপথের বদল ঘটেছে।  হারিয়ে গেছে পুরোনো চিহ্ন। রোজই মনে হত রাত ৮টার মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে পারব।” সব শেষে যোগ করেন, “সারা জীবন এখানেই আমার বসবাস, উত্তর থেকে দক্ষিণে অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছি। কখনওই বুঝতে পারিনি আমাদের পাহাড়গুলি এতটা নির্মম।” ১০ দিন পর লুকাসকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয় ড্রোনের সাহায্যে।  তাঁকে ফিরে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস পরিবারেও।