মায়ানমারে সদ্যই ঘটে গিয়েছে সুপার-টাইফুন ‘ইয়াগি’। ফলবশত মায়ানমারের বহু জায়গা এখন বন্যাবিধ্বস্ত। এমনই সময়ে ত্রাণে বিতরণ করা খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ ১৩৩ জন শরণার্থী! মায়ানমারের রাজ্য প্রশাসনিক পরিষদের তথ্যদল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ওই ১৩৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার সকালে বাগো অঞ্চলের ওক্টুইন শহরাঞ্চলের স্থানীয়দের সেমাই ভাজা, সস, ভাত এবং তেঁতুল-ডিমের তরকারি খেতে দেওয়া হয়। স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকেই অনেকের পেটব্যথা, বমি, ডায়রিয়া হতে দেখা যায়। অসুস্থদের দ্রুত তাউঙ্গো জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬৫ জনকে ভর্তি করানো হয়, ৬৮ জনকে ওপিডিতেই দেখানো হয়। ভর্তি হওয়া রুগীদের মধ্যে ৪১ জন সেরে ওঠায় বৃহস্পতিবার সকালেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরেকটি পৃথক ঘটনায় নে পি তাও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তাতকোন শহরাঞ্চলের শতাধিক ব্যক্তি খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদেরকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মায়ানমারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বন্যা কবলিত এলাকার স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের অনুরোধ করেছেন, যাতে ত্রাণের খাবার সুরক্ষিত এবং স্বাস্থ্যকর হয়।
প্রসঙ্গত, টাইফুন ইয়াগির কবলে প্রবল বন্যায় বিধ্বস্ত মায়ানমার, ভিয়েতনাম, কলম্বিয়া, থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশ। এই বছরে এশিয়ায় হওয়া সবথেকে শক্তিশালী ঝড় এই সুপার-টাইফুন ইয়াগি, জাপানি ভাষায় যার অর্থ ‘ছাগল’ বা মকর তারামণ্ডল। এই বিধ্বংসী ঝড় এবং তার ফলশ্রুতি হিসেবে হওয়া বন্যায় বিধ্বস্ত মায়ানমার-সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নানা দেশ। মায়ানমারের ৫৬টি শহরে হওয়া এই বন্যায় সরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত ২৬৮ জন হত, নিখোঁজ ৮৮ জন। মায়ানমারের এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মায়ানমারের সেনাপ্রধান মিন আউং লাইং জানিয়েছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যে সবার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ২০২১ এর সেনা অভ্যুত্থান পরবর্তী বিপর্যয়ের মধ্যে এই বন্যা পরিস্থিতিতে মায়ানমারের বর্তমানে শোচনীয় অবস্থা।