দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহ আরও দুদিন, মঙ্গলকোটে বাজ পড়ে মৃত ৪

নিজস্ব প্রতিনিধি– আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করেছে বর্ষা। বেশ সক্রিয় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। যার জেরে বিপাকে পড়তে পারে উত্তরবঙ্গ-সিকিম। ইতিমধ্যেই উত্তরের পাঁচ জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় একদিনে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিরও আশঙ্কাও রয়েছে। অধিক বৃষ্টির কারণে ধস নামতে পারে দার্জিলিং,সিকিম,কালিম্পংয়ে।

তিস্তা,জলঢাকা,সঙ্কোশ,তোর্সা নদীতে জল বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।এদিকে, দক্ষিণবঙ্গের এখনই বদলাবে না। বৃহস্পতিবার  পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুদিন পশ্চিম বর্ধমান,পশ্চিম মেদিনীপুরে কমলা সতর্কতা রয়েছে। বুধবার পর্যন্ত পুরুলিয়াতে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি থাকবে। তবে সপ্তাহের শেষে বিক্ষিপ্ত ঝড়-বৃষ্টির আশা রয়েছে। শনি-রবিবার গরমের দাপট খানিকটা কমতে পারে। প্রবল গরমে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ  । জেলায় জেলায় গরম ও চরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় রয়েছে । মঙ্গল ও বুধে গরম হতে পারে আরও তীব্র। দু’দিনে এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়তে পারে। আগামী  বৃহস্পতিবার  পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা তীব্র তাপপ্রবাহের কবলেই থাকবে।কিছু জেলায় চলবে মৃদু তাপপ্রবাহ। দু একটি জেলায় চূড়ান্ত আপেক্ষিক আর্দ্রতা থাকবে। ফলে গরমের কষ্ট বাড়তে পারে।সকাল থেকে ঘাম প্যাচপ্যাচে গরম থাকবে। মঙ্গলবার ও বুধবার তেমন ভাবে বৃষ্টি হবে না যদিও। বরং দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের চার জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে।

বুধবার বিকেলের পর থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে। বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কতা থাকবে বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া জেলাতে। চরম গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে। বুধবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে। বেশ কয়েক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে । বৃহস্পতিবার বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে।উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। উপরের দিকের পাঁচ জেলাতে বৃষ্টি চলবে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি , আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলাতে ভারী বৃষ্টি হবে। সঙ্গে দমকা বাতাস বইবে। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং জেলায় অভিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে।


ভারী বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে মালদা উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। দার্জিলিং এবং কালিম্পং ভারী বৃষ্টি সঙ্গে দমকা ঝড় বাতাসের সম্ভাবনা। গত সোমবার বিকেলে মাঠে গরু চড়ানোর সময় মঙ্গলকোটের কানাইডাঙ্গা গ্রামের কাছে মৃত্যু হয়েছে দুই ভাইয়ের।মৃতদের নাম বিজয় ঘোষ (৫৫) এবং অজিত ঘোষ (৫৯)। একই সময়ে মঙ্গলকোটের ঠ্যাঙ্গাপাড়া গ্রামের কাছে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে জিল্লাল মোল্লা (৬২) নামে এক গ্রামবাসীর। এদিনই বিকেলে মঙ্গলকোটের সাকোনা গ্রামে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে রুবিনা বিবি (৩৭) নামে এক বধূর। জানা গিয়েছে রুবিনা বিবির বাড়ি বীরভূমের নানুর। তিনি সাকোনা গ্রামে আত্মীয়বাড়িতে এসেছিলেন। আত্মীয় বাড়ির কাছে মাঠে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তাঁর।

এদিন বজ্রপাতে মঙ্গলকোটে তিনটি গরুও মারা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলকোটের কৈচর বাজার থেকে কিছুটা দূরে কানাইডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা অজিত ঘোষ ও বিজয় ঘোষ নামে দুই গোপালক তখন তাদের গরুগুলি নিয়ে মাঠে চড়াচ্ছিলেন। আকাশে মেঘ দেখেই গরুগুলি তাড়িয়ে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। তখনই কার্যত বৃষ্টিহীন মেঘে বজ্রপাতে লুটিয়ে পড়েন দুজনেই। পরে খবর পেয়ে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রায় একই সময়ে মঙ্গলকোটের ঠ্যাঙ্গাপাড়া গ্রামের কাছে মাঠে গরু চড়ানোর সময় জিল্লাল শেখ মাঠে গরু চড়ানোর সময় বজ্রপাতে মারা যান। তার একটি গরুও মারা যায়। এদিন সন্ধ্যার মুখে কাটোয়া শহরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। একটি ডাবগাছে বাজ পড়লে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে গাছটি। মঙ্গলকোটের নপাড়া গ্রামে হাসনানাহারা খাতুন নামে দশম শ্রেনীর এক ছাত্রী বজ্রপাতে জখম হয়। তাকে মঙ্গলকোট ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে ।