ইউনূস সরকারের রোষের মুখে রেজওয়ানা, থামতে চলেছে ‘সুরের ধারা’

রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও মহম্মদ ইউনূস। ফাইল চিত্র।

ইউনূস সরকারের রোষের মুখে এবার প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। তাঁর গানের স্কুলের জমির লিজের চুক্তিকে বৃহস্পতিবার বাতিল ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ভূমি মন্ত্রক থেকে এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। এই খবর সামনে আসতেই সাংস্কৃতিক মহলে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়।

১৯৯২ সালে রেজওয়ানা সঙ্গীতশিক্ষার উদ্দেশ্যে তাঁর গানের স্কুল ‘সুরের ধারা’ খোলেন। শেখ হাসিনার অধীনে আওয়ামি লিগ সরকার তাঁকে এই গানের স্কুলের জন্য ঢাকার মহম্মদপুর থানার রামচন্দ্রপুর মৌজায় ০.৫১২০ একর জমি লিজে দেয়। হাসিনা সরকারের পতন, মহম্মদ ইউনূসকে মুখ্য উপদেষ্টা পদে বসিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন – এইসমস্ত রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কোপ এসে পড়ল এবার রেজওয়ানার ‘সুরের ধারা’-র উপর।

ভূমি মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সরকারি নথি অনুযায়ী লিজে দেওয়া ওই জমি ‘খাল’ শ্রেণির। অবৈধভাবে ওই জমি লিজে দেওয়ায় খালের জলের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। এই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত বলে তাঁর চিঠিতে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রকের খাস জমি-১ শাখার উপসচিব মহম্মদ আমিনুর রহমান।


বাংলাদেশি নাগরিক হলেও পূর্ব-পশ্চিম দুই বাংলাতেই রেজওয়ানার অগণিত ভক্তকুল রয়েছে। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে তিনি যথেষ্টই প্রসিদ্ধ। তাঁর বিরুদ্ধে এহেন সিদ্ধান্তকে ‘অবিচার’ বলেই মনে করছেন অনেকে। ২০১৬ সালে তাঁকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’-এ ভূষিত করা হয়, যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার। ২০২৪ সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে ২০১৭ সালে ‘বঙ্গভূষণ’ এবং ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ উপাধি দেওয়া হয়। বর্তমানে সঙ্গীতচর্চার পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক এবং নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করছেন।