বীরভূমের রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করতে এবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করল সিবিআই।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে প্রকাশ, গত ২১ মার্চ ভাদু শেখ খুন হওয়ার পর তাঁর দেহ আনা হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
সেই সময় তাঁর একশোর বেশি অনুগামী হাসপাতালে ভিড় করেছিলেন। কারা এসেছিলেন হাসপাতালে?
তাঁদের কেউ বগটুই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কি না, তা জানতে ২১ মার্চ সন্ধে থেকে ২২ মার্চ সন্ধে পর্যন্ত হাসপাতালের ২৬টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গত বুধবার সংগ্রহ করে নিয়ে যান সিবিআইয়ের অফিসাররা। এই ফুটেজ এর আগে সংগ্রহ করেছিল সিট।
অভিযোগ, সিটের থেকে সেই ফুটেজ পায়নি সিবিআই। এবার তারা নিজেরাই সংগ্রহ করল ফুটেজ।
অন্যদিকে, তৃণমূলের নেতৃত্বে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মাফিয়ারাজ চলছে। জেপি নাড্ডাকে দেওয়া রিপোর্টে এমনই দাবি করল বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল।
সিবিআই তদন্ত চলার সময় এই ধরনের রিপোর্ট তদন্তকে প্রভাবিত করবে বলে পাল্টা অভিযোগ আনলেন তৃণমূলনেত্রী। আর এ নিয়েই ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে তৃণমূল ও বিজেপি।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের নেতৃত্বে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মাফিয়ারাজ চলছে। আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
বিজেপির রিপোর্টের ১৯ নম্বর পাতায় আরও দাবি করা হয়েছে বগটুইয়ের গণহত্যার শিকড় লুকিয়ে আছে বখরায়।
অর্থাৎ তোলাবাজির বেআইনি টাকার ভাগ। ভাদু শেখ তাঁর সহযোগীদের বখরার ভাগ দিতে চাননি।
এখান থেকেই তৃণমূলের অনুগত, মাফিয়াদের আরেকটা গোষ্ঠী তৈরি হয়। এরপর ভাদু শেখ খুন হন এবং তার প্রতিশোধ হিসেবে বগটুইয়ে গণহত্যাকাণ্ড ঘটে।
বগটুইয়ের গণহত্যাকাণ্ড হিমশৈলের চূড়া মাত্র প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের রাজনৈতিক মাফিয়ারা নিয়মিত এভাবে তোলা আদায় করে।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনার উৎপত্তি, রাজনীতি এবং অপরাধ জগতের আঁতাঁত থেকে, যা তৃণমূল সরকারের ছত্রছায়ায় বেড়ে চলেছে। তোলাবাজির বেআইনি টাকা যাচ্ছে তৃণমূলের কোষাগারে।
যারা এখন মানুষের টাকা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে, আঞ্চলিক থেকে জাতীয় দল হয়ে উঠতে চাইছে।
এখন দেখার এইসব বিষয় সিবিআই তদন্ত প্রক্রিয়ায় উঠে আসে কিনা? কেননা সিবিআই নিয়ে বরাবরই সরব শাসক দল তৃণমূল।
প্রশাসনিক স্তরে পুলিশের পরে এবার কী রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নামও জড়িয়ে যেতে বসেছে বগটুই গণহত্যার পরিপ্রেক্ষিতে?
বীরভূমের রামপুরহাটের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের বগটুই গ্রামের শেখ ভাদুকে ২১ মার্চ রাত্রে রামপুরহাটে বোমা মেরে খুন করা হয়।
আর তারপরই শেখ ভাদুর অনুগামীরা বগটুই গ্রামে ব্যাপক হামলা চালায় এবং শারীরিক অত্যাচারের পরে বহু সংখ্যক মানুষকে পুড়িয়ে মারে বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রামেরই শেখ সোনার বাড়ির ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।
দমকল বাহিনী ওই ঘর থেকে উদ্ধার করেছিলো সাতটি আগুনে পোড়া মৃতদেহ। যে গুলি পুড়ে কয়লা হয়ে গিয়েছিলো বলে বলা হয়।
মৃতদেহগুলি রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে, সেগুলি প্রশাসনিকভাবে কবর দিয়ে দেওয়া হয়।
নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত রাজ্য সরকার সিট-এর হাতে দেয়। পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্ট এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে।