মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীর হার মাত্র ১০ শতাংশ, কোনও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি বিজেপি

আর কয়েকদিন পরই মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন। উল্লেখযোগ্য হল, মহারাষ্ট্র রাজ্য নির্বাচনকমিশনের তরফে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এবারের নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীর হার মাত্র ১০ শতাংশ। ফলে বিষয়টি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক চর্চায় উঠে আসছে মুসলিম প্রার্থী নিয়ে প্রায় সব দলই বিজেপিকে অনুসরণ করছে। কারণ এবারের নির্বাচনে কোনও মুসলিম প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। এমনকি কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনাও হাতে গোনা কয়েকজন মুসলিমকে প্রার্থী করেছে। ফলে এটা খুবই স্পষ্ট যে, আসন্ন মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা খুবই কম। বিশেষ করে প্রথম সারির রাজনৈতিক দলগুলিতে মুসলিম প্রার্থীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

মহারাষ্ট্রে আগামী ২০ নভেম্বর এক দফায় ভোট গ্রহণ হবে। তথ্য প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, রাজ্য বিধানসভার ২৮৮টি আসনের মধ্যে ১৫০ টি আসনে কোনও মুসলিম প্রার্থী নেই। কোনও দলই ওই আসনগুলিতে মুসলিম প্রার্থী দেয়নি। তবে উল্লেখযোগ্য হল, তুলনায় ছোট দলগুলির সংখ্যালঘু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মুসলিম প্রার্থী দিয়েছে আসাউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম। অন্যদিকে অজিত পাওয়ারের এনসিপি পাঁচজন মুসলিমকে প্রার্থী করেছে। মুসলিমদের প্রার্থী করা বন্ধ করে দিয়েছে বিজেপি।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছেন মোট ৪,১৩৬ প্রার্থী। এই প্রার্থীরা রাজ্যের মোট ২৮৮টি আসনে নির্বাচনী লড়াইয়ে সামিল হবেন। এর মধ্যে মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র ৪২০। অর্থাৎ, মোট প্রার্থীর মধ্যে মুসলিম প্রার্থীর প্রতিনিধিত্ব  ১০ শতাংশের সামান্য বেশি। আরও লক্ষ্যণীয় বিষয় হল এই ৪২০ জন প্রার্থীর অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যক আবার লড়ছেন নির্দল প্রার্থী হিসাবে। অর্থাৎ, কোনও রাজনৈতিক দলই তাঁদের টিকিট দেয়নি। নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ২৫০জন। 


নির্বাচনে মুসলিম প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এগিয়ে রয়েছে জাতীয় কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন মোট ৯ জন মুসলিম প্রার্থী।

মহারাষ্ট্রে মুসলিমদের সংখ্যা এক কোটি ৩০ লক্ষের বেশি, যা রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশ। তবে রাজ্যের ৩৫টি জেলার কোনওটিতেও ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়।রাজনৈতিক মহলের মতে, ১৯৯২ সালের আগে পর্যন্ত সব দলই  সংখ্যালঘুদের প্রার্থী করত। কিন্তু ওই বছর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলায় দাঙ্গার পর রাজ্যে মুসলিমদের প্রার্থী করার ব্যাপারে উৎসাহে ভাটা দেখা দেয়।