আবাসিক চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন দিল্লি এইমসে, ক্যাম্পাসের মধ্যে নিরাপত্তার আশ্বাস 

চিকিৎসকদের কাছে  দ্রুত কাজে ফেরার আবেদন জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু নিজেদের অবস্থানে অনড় আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। আর জি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল দেশে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সুপ্রিম কোর্টের পর এবার চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার আবেদন জানাল দিল্লি এইমস।  স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থার কথাও জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 
 

আবাসিক চিকিৎসকদের আবার কাজে ফেরার জন্য আবেদন জানাল দিল্লি এইমস৷ একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, ক্যাম্পাসের মধ্যে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলি দেখাশুনো করার জন্য একটি অভ্যন্তরীণ অডিট করা হবে ৷ প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার সমস্যা ও চিকিৎসকদের অন্যান্য অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে৷ আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের দাবিতে দিল্লি এইমসের আবাসিক চিকিৎসকরা ধর্মঘটে সামিল হন ৷

নিরাপত্তা অডিট ছাড়াও দিল্লি এইমস প্রশাসন পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে শিশু-প্রসূতি ব্লকের মূল প্রবেশ ও প্রস্থান ফটক গুলিতে এআই প্রযুক্তি নির্ভর সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ এই ধরনের ক্যামেরা আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সংশ্লিষ্ট ব্লকে আসা সবাইকে চিনতে সক্ষম হবে ৷ নিরাপত্তা কর্মীদের ঘনঘন প্রবেশ ও প্রস্থানকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে সাহায্য করবে ৷ ফলে অযাচিত কর্মীদের যাওয়া আসা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে ৷

দিল্লি এইমসের ডিরেক্টর ভি শ্রীনিবাস বলেছেন যে, “পুরো এইমস পরিবার প্রিমিয়ার হাসপাতাল এবং সারা দেশে সমস্ত স্বাস্থ্য সেবা পেশাদারদের সুরক্ষায় পাশে দাঁড়িয়েছে ৷ তবে চিকিৎসক হিসেবে আমাদের সবার প্রথম কর্তব্য হল যে সমস্ত রোগীরা আমাদের কাছে আসছে তারা যাতে চলে না যায় তা নিশ্চিত করা ৷ প্রশাসন স্বাস্থ্য সেবা, পেশাদার, কর্মী, রোগী ও আগত মানুষজনের সুরক্ষা নিরাপত্তার বিষয়ে এইমস দিল্লিতে একটি সহযোগিতামূলক অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অডিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ এর জন্য একটি ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে ৷”


আরজি কর মামলায় শুনানির সময় দেশের শীর্ষ আদালত চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করার নির্দেশ দেয় । তা নিয়ে অল ইন্ডিয়া রেসিডেন্টস অ্যান্ড জুনিয়র ডক্টর্স জয়েন্ট অ্যাকশন ফোরাম জানিয়েছে, হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে এটি মূল সমস্যাগুলির সমাধান করবে না।’ একইসঙ্গে প্ল্যাটফর্মের তরফে বলা হচ্ছে, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা বরাবরই অবহেলিত। যুগের পর যুগ পর্যাপ্ত অর্থ সাহায্য মেলে না। দেশের প্রধান বিচারপতির দেওয়া নির্দেশ হয়তো বর্তমান সমস্যার সমাধান করতে পারবে কিন্তু, স্থায়ী সমাধান এতে আসবে না।

যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের দাবিগুলি পূর্ণ হচ্ছে আন্দোলন চলবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে এই সংগঠন। প্রকৃত অপরাধীরা  সাজা না পাওয়া পর্যন্ত এবং স্থায়ী সমাধান না হলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি সম্ভব হয় বলেও জানানো হয়েছে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে। আরজি কর হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডাক্তাররাও জানিয়ে দিয়েছেন কোনওভাবেই অবস্থান থেকে পিছু হটছেন না তাঁরা। 
 
ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন স্পষ্ট জানিয়েছে, ‘ইটস নাও অর নেভার’। স্বাস্থ্যমন্ত্রক যতক্ষণ না চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় সঠিক পদক্ষেপ করছে ততদিন আন্দোলন চলবে। তাই আউডডোর পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখাই হবে। যদিও জরুরি বিভাগ যে শুরু থেকেই চলছে তাও স্পষ্ট করা হয়েছে। আগামী ২২ তারিখ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। আপাতত তার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ সহ চিকিৎসক মহল।