ফিটনেস-এর গোপন কথা

উৎসবের মরশুমই হল স্টাইলিশ হয়ে ওঠার আদর্শ সময়। ফিগার বা ফিজিক সুন্দর হলে, যে-কোনও পোশাকেই আপনাকে ভালো মানাবে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেদও বাড়ে। আর তখনই টনক নড়ে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের কথা মনে হয়। ওজন বাড়ছে বুঝলেই খাবারের পরিমাণে যেমন রাশ টানা দরকার, তেমনই প্রয়োজন ব্যায়ামের।
টলিপাড়ার ‘ফিটনেস ফ্রিক কাপল’ হিসেবে খুবই জনপ্রিয় গৌরব চট্টোপাধ্যায় এবং দেবলীনা কুমারের জুটি। অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন দুজনেই। উভয়েই মনে করেন সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যায়াম করার বাড়তি কিছু সুফল আছে৷ দেবলীনা বলেন,‘আমার মেন্টাল হেলথ ভালো হয় ব্যায়াম করার কারণে। শরীরে হ্যাপি হরমোনস নিঃসৃত হবার ফলে স্ট্রেস রিলিফ হয়। আর সুন্দর দেখতে লাগে বলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, সেটাও কিন্তু অস্বীকার করার জায়গা নেই।’

সুডৌল গঠনের কথা ভেবে অনেকেই ব্যায়াম শুরু করেন ঠিকই তবে বেশিদিন চালিয়ে যেতে পারেন না। বিশেষ করে যাদের ব্যায়াম করার একেবারেই অভ্যাস নেই, প্রথম প্রথম ওয়ার্কআউট-এর পরেই তাদের ক্লান্ত লাগতে পারে। পেশিতে ব্যথা হতে পারে। তবু হাল ছেড়ে দেবেন না। কিছুদিনের মধ্যেই দেখবেন ব্যায়াম করার ফলে শরীর কেমন ঝরঝরে লাগবে।

আজকাল সকলেই মেদহীন পেট পেতে মরিয়া। ভিড় বাড়ছে জিমগুলিতে। গৌরবের মতে, ‘সামগ্রিকভাবে মানুষের জীবনশৈলীতে একটা পরিবর্তন এসেছে। মানুষ কিছুটা সচেতন হয়েছে ‘কোয়ালিটি অফ লাইফ’ বিষয়ে। কী খাচ্ছি, কেমনভাবে জীবন কাটাচ্ছি, সেটার উপর নির্ভর করে সবটা’।


বয়স যা-ই হোক,ব্যায়াম শুরু করতে কখনও ভয় পাবেন না- এমনই মত গৌরবের। উত্তমকুমার প্রসঙ্গে গৌরব বলেন, ‘সে সময় এত জিম কালচার ছিল না বটে কিন্তু দাদু খুবই স্বাস্থ্যসচেতন ছিলেন, ভালো সাঁতারু ছিলেন। যোগব্যায়াম, হাঁটা এগুলো করতেন নিয়মিত। কাজেই সাধারণ মানুষ যদি জিম-এ না-ও যান, তার পরিবর্তে বাড়িতেই স্ট্রেন্থ ট্রেনিং বা মাসল মেনটেইন করার জন্য রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং প্রভৃতি করতেই পারেন। একটা জিনিস শুধু খেয়াল রাখা দরকার- সারাদিনে আপনি কতটা ক্যালোরি ইনটেক করছেন আর কতটা বার্ন করছেন’।

কিন্তু সহজে কি মেদ কমানো যায়? দেবলীনা স্পষ্ট ভাষায় বললেন, ‘ফ্যাট রিডাকশন আসলে একটা মিথ। চটজলদি স্নেহপদার্থ কমানো প্রায় অসম্ভব। আমাদের সবারই পেটে অ্যাবস আছে, যেটা মেদের স্তর জমার কারণে চোখে পড়ে না। দীর্ঘদিন ধরে ওয়েট ট্রেনিং এবং কার্ডিয়ো ভাস্কুলার এক্সারসাইজ চালিয়ে যেতে পারলে, তবেই অ্যাবস স্পষ্ট হবে শরীরে।’

সুতরাং এবছর উৎসবের আনন্দে বাড়তি খাবার খেয়ে ফেলবেন না। ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার আগেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যত বেশি বৃদ্ধি পাবে মেদ, ততই কিন্তু কঠিন হবে সেটা কমানোর প্রক্রিয়া।