শীত মানেই অর্ধেক দিন সূয্যি মামারও ছুটি৷ ফলে নো রোদ, নো ভিটামিন ডি৷ তবে শুধু রোদই যে ভিটামিন ডি-এর উৎস তা নয়৷ অনেক রকম খাবার এবং ওষুধ থেকেও এই ভিটামিন পাওয়া যায়৷ তবে ভোরের সূর্যের আলো শরীরে ভিটামিন ডি এর মাত্রা বাড়ানোর সর্বোত্তম ও সবচেয়ে প্রাকৃতিক উপায়৷
ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের সুস্থ কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ এটি একটি অপরিহার্য পুষ্টি আর বিভিন্ন খাবারের পাশাপাশি এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে অর্জিত হতে পারে সূর্য থেকে৷
ভিটামিন ডি এর পর্যাপ্ত মাত্রা শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে৷ এটি ইমিউন ফাংশন উন্নত করে, বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকে সহজ করে৷ এ ছাড়াও উদ্বেগ কমাতে এবং সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷
কিন্ত্ত আমাদের মধ্যে অনেকেই এই ভিটামিনটিকে গুরুত্ব দেই না৷ বিশেষ করে শীতের মরশুমে এই ভিটামিনের ঘাটতির ফলে শরীরে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তা সম্পর্কেও অনেকে জানেন না৷ তাই আজকে জেনে নিন, এই শীতে যেসব অস্বাভাবিক লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি—
১. যদিও প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন বা সংক্রমণে ভোগেন?
আপনি যদি প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পডে়ন, বিশেষ করে সর্দি-কাশি বা ফ্লুতে আক্রান্ত হন এটি ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কমে যাওয়ার একটি কারণ হতে পারে৷ কারণ ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখা এবং অসুস্থতা সৃষ্টিকারী ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করা৷ তাই প্রায়ই অসুস্থ মানে ভিটামিন ডি নড়বড়ে৷
২. প্রায়ই ক্লান্ত এবং দুর্বল?
শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতির কারাণে প্রায়শই সাধারণ ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব হতে পারে৷ এমনকি দুর্বলতার কারণে সিঁডি় বেয়ে উঠতে বা মেঝে থেকে উঠতে বা নিচু চেয়ারে বসতেও অসুবিধা হতে পারে৷ তাই এ শীতে আপনার এমন মনে হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ৷
৩. হাড় ও পিঠে ব্যথা
ভিটামিন ডি আমাদের হাডে়র স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে৷ কিন্ত্ত আপনার যদি নিয়মিত হাডে় এবং পিঠের নিচের দিকে ব্যথা হয় তবে এটি হতে পারে শরীরে অপর্যাপ্ত ভিটামিন ডি মাত্রার লক্ষণ৷
৪. বিষাদ-বিষন্নতা
বিষন্নতা বা মেজাজ খারাপ হয়ে যাওয়াও ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ হতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে তাদের মধ্যে বিষন্নতা দেখা দিতে পারে৷ আর এটি মৌসুমী বিষন্নতা বা সাধারণত শীতের সময়ে ঘটতে দেখা যায়৷
৫. চুল পড়া
মহিলাদের মধ্যেই এই সমস্যার বেশি প্রবণতা দেখা যায়৷ কারণ তারা তাদের সৌন্দর্যের মাপকাঠি হিসেবে চুল নিয়ে এতটাই চিন্তামগ্ন থাকেন যে চুল পড়ার আগেই যেন তা নিয়ে মানসিক চাপে পড়ে যান৷ এই চুল ওঠার সমস্যাটি প্রায়ই মানসিক চাপের জন্য দায়ী হয়ে থাকে৷ আবার এ সমস্যাটি ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণেও হতে পারে৷ একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম হলে চুল পড়ার প্রবণতা বেশি থাকে৷
৬. পেশী ব্যথা
প্রায় সময়েই পেশীতে ব্যথার আসল কারণ চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে৷ তবে কিছু প্রমাণ রয়েছে যে, ভিটামিন ডি এর অভাবে পেশী ব্যথার একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে৷ ভিটামিন ডি রিসেপ্টর নোসিসেপ্টর নামক স্নায়ু কোষে উপস্থিত থাকে৷ আর এ কারণে ভিটামিন ডি এর অভাবে পেশিতে ব্যথা অনুভব হতে পারে৷