পুজোর সাজে সাজবে পাহাড়, পরিক্রমা এবার আলিপুরদুয়ারে

আকাশে বাতাসে আগমনীর সুর। ঢাকে কাঠি পড়ল বলে। ফের সময় এসেছে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার। বাঙালির দুর্গোৎসব তো শুধু জাঁকজমকের নয়, এ উৎসব মানবিকতারও। আজ থেকে ১০ বছর আগে সমাজের দুঃস্থ পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর এক মানবিক সংকল্প নিয়ে পথচলা শুরু করে একদল মানুষ। লক্ষ্য ছোঁয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সংখ্যাটা নেহাতই হাতে গোনা। এদের একদল ভাবি সাংবাদিক আর কয়েকজন সাংবাদিক গড়ার কারিগর। বরাবরই শারদোৎসব উদযাপনে অন্য ধারার প্রয়াস নিয়ে এসেছে কলকাতার মণীন্দ্র চন্ত্র কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগ। গত ১৩ বছরের মতো এ বছরও তার অন্যথা হয়নি।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর, শনিবার আয়োজিত হচ্ছে পুজো পরিক্রমা। এবার চতুর্দশ বর্ষের গন্তব্য আলিপুরদুয়ার জেলার উত্তরে এক পিছিয়ে পড়া গ্রাম জলদাপাড়া। এখনও আধুনিকতার সঙ্গে মেলবন্ধন হয়নি মানুষের। পাশেই ভারত-ভুটান সীমান্ত। সেখানে নদীর চরেই হবে এবারের পুজো পরিক্রমা। ওখানকার ৩০০ জন শিশু আর ১০০ জন মহিলার জন্য নতুন জামাকাপড়, শাড়ি কেনা থেকে শুরু করে এই পুজো পরিক্রমার যাবতীয় খরচের অর্থ কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা নিজেরাই সংগ্রহ করেছে। কলেজের অন্য বিভাগের অধ্যাপকেরাও হাসিমুখে এগিয়ে এসেছেন এই উদ্যোগে।

বর্তমানে যেখানে হানাহানি, স্বার্থপরতা গ্রাস করছে যুবসমাজকে, সেখানে দাঁড়িয়ে শহরের এই কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পুজোর খরচ বাঁচিয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য এত কিছু করছে। তাও ১৩ বছর ধরে। এমন উদ্যোগ কিন্তু গোটা ভারতে সত্যিই বিরল। কারণ ওরা ভেবেছে উৎসব সবার, তাই আনন্দও সবার।


২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার শিশুদের হাতে নতুন জামা তুলে দিয়ে তাদের সঙ্গে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নেবে শহরের এই কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। ওরা ওদের ভাষায় গাইবে, নাচবে, কবিতা বলবে। ওদের পছন্দসই খাবারেরও আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকমুক্ত সুস্থ পরিবেশ গড়ার বার্তাও দেওয়া হবে। এত কম সময়ে বিভাগের সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যা নিঃসন্দেহে আজকের দিনে এক অভিনব উদ্যোগ। শিশুগুলোর মুখে হাসি ফুটিয়ে তোলাই এই পুজো পরিক্রমার মূল প্রয়াস।