সিঙ্গাপুরে শুরু বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই

প্রতীকী চিত্র

২৫ নভেম্বর থেকে বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ানশিপের আসর বসেছে সিঙ্গাপুরের রির্সট স্যানটোসে। চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্য্যন্ত। প্রতিদ্বন্দী, বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান চিনের জি এম ডিং লিরেন ও চ্যালেঞ্জার ভারতের জি এম গুকেশ ডমনারাজু। ১৪ টা গেমের মধ্যে যে ৭.৫ পয়েন্ট অর্জন করবেন তিনিই হবেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশিপের পুরস্কার মূল্য হোল ২,৫০০,০০০ ডলার।

গেমগুলোর সময় সীমা হোল প্রথম ১২০ মিনিটে দিতে হবে ৪০ চাল, পরবত্তী ৬০ মিনিট দিতে হবে ২০ চাল ও অতিরিক্ত ১৫ মিনিট গেম শেষ হওয়া পর্য্যন্ত। এছাড়া ৩০ সেকেন্ড ইনক্রিমেন্ট পাবে প্রতিটি চালের জন্য এবং দেখা যাবে ৬১ চালের পর।

৩২বছর বয়সী ডিং লিরেন বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান এবং রেটিং হোল ২৭২৮ এবং বিশ্বের ২৩নং দাবাড়ু। অপর দিকে ১৮ বছর বয়সী গুকেশ ডোমনারাজু বর্তমান ক্যান্ডিডেট চ্যাম্পিয়ান ও রেটিং ২৭৮৩ এবং বিশ্বের ৫ নং দাবাডু। গুকেশ এবার কনিষ্ঠতম ক্যান্ডিডেট চ্যাম্পিয়ান। এর আগে কনিষ্ঠতম ক্যান্ডিডেট চ্যাম্পিয়ান হয়েছেন ম্যাগনাস কার্লসেন (২০১৩),পিটার লেকো (২০০২),গ্যারি কাসপারভ (১৯৮৩) মিথাইল টাল (১৯৬১),
এবার এই চ্যাম্পিয়ানশিপে এগিয়ে আছেন ভারতের গুকেশ। তার কারন গুকেশের সাম্প্রতিক সাফল্য। এর মধ্যে আছে সম্প্রতি দাবা অলিম্পিকে সোনা জেতা, যেখানে বিশ্বের তাবড় তাবড় দাবাড়ুরা খেলেছেন। তাছাড়া অনেকগুলো টুর্নামেন্টের ফল ভাল। অন্য দিকে ডিং লিরেন সম্প্রতি দেড় বছর কোনও রকম টুর্নামেন্ট খেলেননি। যদিও উনি এব্যপারে পাত্তা দিতে চান না। উনি বলেছেন, ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশিপের খেলা অন্যরকম। আমি আশা রাখি আমার ফর্ম ফিরে পাব।’


বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান দাবাড়ু বিশ্বনাথ আনন্দ বলেন যে তিনি ভাবতেই পারেন নি যে গুকেশ এত তাড়াতাড়ি উন্নতি করবে। গুকেশ প্রথমবার প্রথম শ্রেণীর দাবা টুর্নামেন্ট খেলে নভেম্বর ২০১৩-এ। তখন তার বয়স ৭ বছর। বাবা রজনীকান্তের সাথে এসেছিল চেন্নাই অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশিপের আনন্দ ও কার্লসেনের খেলা দেখতে। এটা তার ইচ্ছে ছিল শখের দাবা ছেড়ে আরো ভাল করে দাবা খেলতে। তার ১১ বছর পরে তার পরিণত দাবাড়ু হিসাবে আত্মপ্রকাশ। গুকেশ হলো ভারতের কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ড মাস্টার, বিশ্বের তূতীয় কনিষ্ঠতম, বিশ্বের তৃতীয় কনিষ্ঠতম দাবাড়ু যে ২৭০০ রেটিং এ পৌছায়।

এটা সম্ভব হয়েছে কঠিন পরিশ্রম, নিয়ম মেনে তৈরি হওয়া। গুকেশ চেন্নাই এর ভেলা মান বিদ্যালয়ের ছাত্র, যে স্কুল থেকে ১৬ জন গ্র্যান্ড মাস্টার ভারতের। ওই স্কুলের ছাত্র ছিল গ্র্যান্ড মাস্টার প্রজ্ঞানন্দ। গুকেশ কার্লসেনের খেলায় অনুপ্রাণিত হয়,তার আক্রমণাত্মক খেলা ও তার নিজস্ব স্টাইলে খেলা। কার্লসেন আদর্শ হলেও বিশ্বনাথন আনন্দ তার মেন্টার।কার্লসেনের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশিপে খেলতে লেগেছে এক যুগ, সেখান গুকেশের মাত্র কয়েক বছর। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানশিপে খেলতে ডিং লিরেনকে স্পষ্টতই চিন্তায় থাকতে হবে। দশ মাস আগে গুকেশ ক্ল্যাসিক দাবায় জিতেছিলেন। তার প্রধান সমস্যা হোল এন্ড গেমে। খেলাটিকে নিজের দিকে আনতো না পারা। সেখানে ডিং ধীর স্থির, খেলাটা কোনখানে ধরতে হবে জানেন। খেলাটি যে আকর্ষনীয় হবে তা বুঝতে পারা যাচ্ছে।