আজ মহারণে মোহনবাগানের সামনে বেঙ্গালুরু, টিফো নিয়ে মাঠে প্রবেশ নিষেধ, পুলিশের তৎপরতা

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি ( (Photo: iStock)

গতবারের চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপারজায়ান্টস ইন্ডিয়ান অয়েল ডুরান্ড কাপ ফুটবলে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসি’র বিরুদ্ধে। এই ম্যাচটি দুই দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেষ চারের ম্যাচে যে দলই জিতবে, সেই দলই ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে যাবে বলে খেলোয়াড়রাও তৈরি হয়েছেন। একে অপরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বাজিমাত করার লক্ষ্যে সেরা খেলা উপহার দেওয়ার জন্য দুই দলের কোচ নতুন নতুন পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। বিশেষ কবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেডে নতুন স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনা চাইছেন ডুরান্ড কাপ ফুটবলে নতুন উদ্যমে ফুটবলাররা খেলুক। শেষ আটের ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে টাইব্রেকারে পাঞ্জাব ফুটবল ক্লাবকে হারিয়ে মোহনবাগান শেষ চারে পৌঁছেছে। কিন্তু সেদিনের ম্যাচের সঙ্গে কোনওভাবেই তুলনা করা যাবে না বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে লড়াইকে। কোচ মোলিনা যেমন আশাবাদী, তেমনই দলের সমর্থকরাও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে তারাই ফাইনালে আবার লড়াই করবেন।

গত ম্যাচে মনবীর সিং ও জেসন কামিংস দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে বেশ ভালো ফুটবল খেলেছেন। শুধু ভালো খেলেছেন তাই নয়, গোল করেছেন এবং গোল করার মতো সুযোগও তৈরি করে দিয়েছেন এই দুই ফুটবলার। আবার এঁদের পাশে লিস্টন কোলাসো, দিমিত্রি পেত্রাতোস, গ্রেগ স্টুয়ার্ট, শুভাশিস বোস ও টম অ্যালফ্রেডকেই প্রথম একাদশে রেখে কোচ দল গঠন করতে চাইবেন। আসলে দিমিত্রি পেত্রাতোস যে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে খেলেন, ততে বিপক্ষ দলের ফুটবলাররা বেশ কিছুটা চাপে পড়ে যান। এটাও দেখতে হবে, মাঝমাঠ থেকে ফুটবলাররা কীভাবে আক্রমণভাগে বল বাড়িয়ে দেন। তাই বলের সাপ্লাই লাইনটাকে ঠিক রাখতে হবে। নিঃসন্দেহে বলা যায়, সবুজ-মেরুন শিবিরে গোল করার মতো খেলোয়াড়ের অভাব নেই।

আবার অন্যদিকে বেঙ্গালুরু এফসি খুব সহজেই হাল ছেড়ে দেবে না। যে দলে সুনীল ছেত্রীর মতো ফুটবলার থাকেন, সেই দলকে সবসময় সমীহ করে খেলতে হবে। তাঁর অভিজ্ঞতাই কথা বলবে। গোলের সুযোগ পেলেই সুনীল ছেত্রী ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে জানেন। সুনীলের পাশে দিয়াজের মতো ফুটবলার রয়েছেন। গত ম্যাচে দিয়াজের গোলেই কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে জয় পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ের প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নামবে বেঙ্গালুরু দল, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন হয় না।


এদিকে আরজি কর কাণ্ডে ডুরান্ড কাপে নিরাপত্তার প্রশ্নে ডার্বি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছিল। সেই কারণে পরবর্তী ম্যাচগুলো ডুরান্ড কর্তৃপক্ষ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে কলকাতা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণে আয়োজনে কোনওরকম অসুবিধা হবে না। তারপরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, একটি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল খেলা যুবভারতীতেই অনুষ্ঠিত হবে। সেই মতো প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচ মঙ্গলবার খেলতে নামছে মোহনবাগান ও বেঙ্গালুরু এফসি। এই ম্যাচকে ঘিরে অবশ্যই উত্তেজনা ও উন্মাদনা তুঙ্গে। এই ম্যাচের কথা ভেবেই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কোনওভাবেই মাঠে টিফো নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।

সেই সময় স্মোক ক্যান্ডেল ও অন্য কোনও দাহ্য পদার্থ নিয়ে কোনও দর্শক প্রবেশ করতে পারবেন না স্টেডিয়ামে। এই বিষয়টি পুলিশের পক্ষ থেকে দুই দলকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ডুরান্ড কমিটিকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দর্শকদেরও সচেতন করতে দলের পক্ষ থেকে যেন বলা হয়, তার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও এবারে ডুরান্ড কাপ ফুটবল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। তাই বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা অবশ্যই অপেক্ষায় থাকবেন, মোহনবাগান ফাইনাল খেলুক এবং খেতাব ঘরে আনুক।