• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

লা লিগায় গোলও নেই মেসি–রোনাল্ডো না খেলায়

মাদ্রিদ– গোল করাকে ডালভাতে বানিয়ে ফেলেছিলেন তাঁরা৷ লা লিগায় নিজেদের সময়ে ম্যাচের পর ম্যাচ গোল করেছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো৷ লিগে সবচেয়ে বেশি গোল করার তালিকাতেও জ্বলজ্বল করছে দুজনের নাম৷ ৫২০ ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে মেসির গোল ৪৭৪ আর ২৯২ ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনালদোর গোল ৩১১৷ সামগ্রিকভাবে মেসি এগিয়ে থাকলেও ম্যাচ প্রতি গোলে দাপট

মাদ্রিদ– গোল করাকে ডালভাতে বানিয়ে ফেলেছিলেন তাঁরা৷ লা লিগায় নিজেদের সময়ে ম্যাচের পর ম্যাচ গোল করেছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো৷ লিগে সবচেয়ে বেশি গোল করার তালিকাতেও জ্বলজ্বল করছে দুজনের নাম৷ ৫২০ ম্যাচে বার্সেলোনার হয়ে মেসির গোল ৪৭৪ আর ২৯২ ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে রোনালদোর গোল ৩১১৷

সামগ্রিকভাবে মেসি এগিয়ে থাকলেও ম্যাচ প্রতি গোলে দাপট ‘সিআর সেভেন’এর৷ মেসির ম্যাচপ্রতি ০.৯১ গোলের বিপরীতে রোনালদোর গোল ১.০৭৷ এ তো গেল সামগ্রিক গোলের প্রসঙ্গ৷ মৌসুম হিসেবেও গোল করায়ও রাজত্ব দুজনের৷২০০৯–১০ থেকে ২০২০–২১—এই ১২ মৌসুমে লা লিগায় গোল করায় একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো৷ এই ১২ মৌসুমে কেবল একবার দুজনের বাইরে কেউ লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন৷ সেটা ২০১৫–১৬ মৌসুমে—৪০ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন লুইস সুয়ারেজ৷

তবে এটাও মনে রাখা দরকার যে এই ১২ মৌসুমে মেসির সঙ্গে রোনালদোর লড়াই হয়েছে ৮ মৌসুম (২০১৭–১৮ মৌসুম পর্যন্ত৷ ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসের যোগ দেন রোনালদো)৷ যেখানে মেসি ৫ বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে পিচিচি জিতেছেন এবং রোনালদো জিতেছেন ৩ বার৷ পর্তুগিজ মহাতারকার বিদায়ের পর টানা তিন মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন মেসি৷

সব মিলিয়ে নিজের লা লিগা ক্যারিয়ারে মেসি সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন ৮ বার৷ এ সময়ে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলও করেছেন আর্জেন্টাইন তারকা৷ ২০১১–১২ মৌসুমে মেসি একাই করেছিলেন ৫০ গোল, যা এখন পর্যন্ত এক মৌসুমে লা লিগায় সর্বোচ্চ গোল৷ এমনকি এই ১২ মৌসুমের মধ্যে কেবল একবার গোলসংখ্যা ৩০–এর নিচে নেমেছিল৷ ২০১৯–২০ মৌসুমে ২৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন মেসি৷ রোনালদো অবশ্য তখন আর স্পেনে ছিলেন না৷

২০২১ সালের গ্রীষ্মে নাটকীয় এক দলবদলে মেসি বার্সা ছেড়ে চলে যান পিএসজিতে৷ ফলে ২০২১–২২ মৌসুম থেকে মেসি–রোনালদোর দুজনকে ছাড়াই শুরু হয় লা লিগার পথচলা৷ দুজনকে ছাড়া প্রথম মৌসুমে লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলদাতা হন করিম বেনজেমা৷ ব্যালন ডি’অর জেতার পথে ২০২১–২২ মৌসুমে বেনজেমা লিগে গোল করেছিলেন ২৭টি৷

পরের মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন বায়ার্ন মিউনিখ থেকে বার্সেলোনায় আসা রবার্ট লেভানডফস্কি৷ ২৩ গোল৷ লেভার চেয়ে কম গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার দৃষ্টান্ত সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০০১–০২ মৌসুমে৷ সেবার দেপোর্তিভো লা করুনার হয়ে ২০ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন দিয়েগো ত্রিস্তান৷

চলতি মৌসুম (২০২৩–২৪) মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০০১–০২ মৌসুমকে৷ সে মৌসুমের পর এবারও এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২০ গোল হয়েছে৷ চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোল করেছেন জিরোনার আর্তেম দোভবি (২০)৷ ইউক্রেনিয়ান এই স্ট্রাইকারের হাতে এখনো দুই ম্যাচ বাকি৷ এই দুই ম্যাচে গোল করে অন্তত ২০০১–০২ মৌসুমের চেয়ে ওপরে থেকে শেষ করার সুযোগ আছে দোভবিকের৷

দোভবিক যদি সবার ওপরে থেকে শেষ করেন তবে ১৪ বছর পর রিয়াল–বার্সার বাইরে অন্য কোনো ক্লাবের খেলোয়াড় সর্বোচ্চ গোলদাতা হবেন৷ এই দুই ক্লাবের বাইরে সর্বশেষ ২০০৮–০৯ মৌসুমে আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩২ গোল করেছিলেন দিয়েগো ফোরলান৷ দোভবিকের ২০ গোলের পর গোল করায় এবার যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে আছেন ভিলারিয়ালের আলেক্সান্দার সোরলোথ (১৯) ও রিয়ালের জুড বেলিংহাম (১৮)৷ তিনে আছেন বার্সার লেভানডফস্কি (১৭)৷

এখন রিয়াল–বার্সার কোনো খেলোয়াড়ের সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে হলে পরের তিন ম্যাচে দারুণ কিছুই করে দেখাতে হবে বেলিংহাম ও লেভাকে৷ সে সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে দোভবিক যেন তাঁর নিজের তিন ম্যাচে আর কোনো গোল না করেন, নয়তো কাজটা তাঁদের জন্য আরও কঠিন হয়ে যাবে৷

ইউরোপের শীর্ষ ৫ লিগের মধ্যেও গোল করায় আশ্চর্য পতন দেখেছে লা লিগা৷ এই পাঁচ লিগের মধ্যে শীর্ষ গোলদাতা বিবেচনা করলে সবার নিচে লা লিগার অবস্থান৷ এ তালিকায় ৩৬ গোল করে সবার ওপরে হ্যারি কেইন৷ জার্মান বুন্দেসলিগার ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে এ গোলগুলো করেছেন কেইন৷

এরপর ২৭ গোল করে দ্বিতীয় স্থানে আছেন পিএসজিকে বিদায় বলা কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হলান্ড৷ আর সিরি ‘আ’র ক্লাব ইন্টার মিলানের হয়ে ২৪ গোল করা লাওতারো মার্তিনেজ আছেন তালিকার চতুর্থ স্থানে৷

লিগ মৌসুম অবশ্য এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি৷ সব লিগেই কিছু ম্যাচ বাকি আছে৷ লা লিগার দলগুলোরও ৩টি করে ম্যাচ বাকি৷ এই ম্যাচগুলো দিয়ে দোভবিক–বেলিংহাম– লেভারা দারুণ কিছু করে অন্য কোনো লিগকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন কি না, সেটাই এখন
দেখার অপেক্ষা৷