কলকাতা নাইট রাইডার্সের বেশ কিছু ক্রিকেটার ইতিমধ্যেই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছেন। আর এই খেলোয়াড়দের পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে আইপিএলের উত্তাপ চড়চড় করে বাড়ছে। বুধবার সকালে উইকেটে পুজো দিয়ে প্রস্তুতিতে নেমে পড়ে নাইট শিবির। কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে ও কিউরেটর সুজন মুখার্জি নারকেল ফাটিয়ে উইকেটে বল করেন। ফুল-মালা ও ধূপ জ্বালিয়ে স্ট্যাম্প পুজো করা হয়। তারপরেই অনুশীলনের পর্বটা শুরু হয়ে যায়। নেটে কখনও দেখা গেল মনরিক নোখিয়াকে। কিন্তু বরুণ চক্রবর্তী, হর্ষিত রানা ও স্পেন্সার জনশন এখনও শিবিরে যোগ দেননি। শুরু থেকেই কলকাতা নাইটরাইডার্সের ক্রিকেটাররা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে নিজেদের ব্যস্ত রাখতে চাইছেন।
ইডেনের মাঝ পিচের পাশের উইকেটে থ্রো-ডাউনের টানা ইয়র্কার করতে দেওয়া হল আন্দ্রে রাসেলকে। আবার কখনও রাসেল ব্যাট করতে নেমে নিজের সেই মারমুখী চরিত্রকে প্রকাশ করলেন। অবশ্য দু-একটা বল তিনি যেভাবে ফসকালেন, তাতে মনে হল মানসিক দিক দিয়ে তিনি এখনও পুরোপুরি ফিট হতে পারেননি। অজিঙ্কা রাহানে ব্যাটিং করলেন। তাঁর ব্যাটিংয়ে সবসময় একটা দর্শনীয় মনোভাব থাকে। আবার অনেক সময় দেখা গেল ধ্রুপদি ঘরানায় তিনি ব্যাট করছেন। বেশ কিছুক্ষণ তিনি নিজেকে ঝালিয়ে নিলেন। তারপরেই তিনি মূল পিচের পাশের উইকেটে গিয়ে স্কুপ মারছেন। রাহানে স্কুপ শট খেলছেন এই দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না। কলকাতা নাইট রাইডার্সের নেতৃত্বে টি-টোয়েন্টি সাফল্য তুলে ধরতে চাইছেন বলে মনে হল। চোট-আঘাত ও ব্যক্তিগত সমস্যায় বেশ কয়েকটা মাস রিঙ্কু সিংকে পুরো ছন্দে দেখা যায়নি। তবে তিনি এদিন প্রথম থেকেই অনুশীলনে ছিলেন। শুরুতে ক্লাব হাউসের সামনে বেশ কিছুক্ষণ শ্যাডো প্র্যাকটিস করেন। এটা অনেকটা ঝড়ের আগে যে নিস্তব্ধতা দেখতে পাওয়া যায়, ঠিক তেমনই নেটে গিয়ে শুরু করলেন বোলারদের বল উড়িয়ে দিতে। এদিন শিবিরে বেশকিছু বোলার দেখতে পাওয়া গেছে অনুশীলনে। কখনও রাসেলের ইয়ার্কার সামলাচ্ছেন কেউ আবার রাহানের ব্যাটিং ও রিঙ্কুর ছন্দে ফিরে আসার লড়াই।
এদিন অদ্ভুত একটা দৃশ্য দেখা গেল। ক্রিকেটার ব্র্যাভোকে গায়ক হিসাবে। তিনি যখন গান করছিলেন, তখন মাঠে উপস্থিত বেশ কয়েকজন তাঁর গানের সঙ্গে গলা মেলালেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জন্য তিনি গানও লিখে ফেলেছেন। শোনা গেল ‘করব, লড়ব, জিতব’ সেই স্লোগান। আগামী দেড় মাস কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসেবে ব্র্যাভোকে দেখতে পাওয়া যাবে। তিনি রাসেল, নারিনদের চাঙ্গা করার জন্য নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পার্টির সময় দলকে যেমন নাচাবেন, তেমনই খেলার মাঠে দলকে উজ্জীবিত করবেন। তাঁর নিজের জার্সির পিছনে লেখা থাকবে ‘মিস্টার চ্যাম্পিয়ন’। প্রথম দিনেই অনুশীলনে বেশকিছু মজাদার ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনই ক্রিকেটারদের মধ্যে একটা আলাদা উন্মাদনা চোখে পড়ল।