ব্রিসবেনে গাব্বার মাঠে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট যুদ্ধ। তৃতীয় টেস্ট ম্যাচের আগে দুই দলই একটি করে জয় পেয়েছে। তাই তৃতীয় টেস্ট ম্যাচটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশেষ করে ভারতীয় দলের কাছে। ব্রিসবেনে ভারতীয় দল ১০ উইকেটে হার স্বীকার করার পরেই ঘুরে দাঁড়াতে চায় গাব্বার মাঠে। কিন্তু প্রথম দিনেই বৃষ্টি যেভাবে খেলা ভেস্তে দিয়েছে, তারপরেই চিন্তার মধ্যে পড়েছে রোহিত ব্রিগেড। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০০৩-২০০৪ সালে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে একটি মাইলস্টোন হয়ে রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই অস্ট্রেলিয়াকে চাপে রাখা যায়, তা সৌরভ গাঙ্গুলি বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দল ম্যাচ জিতেছিল। বিরাট কোহলি ও অজিঙ্কা রাহানের হাত ধরে দু’বার বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি জিতেছে ভারত।
এমনকি ২০০৩-২০০৪ সালে জয়ের কাছাকাছি ভারত পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়। সেবার সিরিজের প্রথম টেস্টটি হয়েছিল গাব্বাতে। টসে জিতে সৌরভ ফিল্ডিং নিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া দল ৩২০ রান করেছিল। তার জবাবে ভারতীয় দল ৪০৯ রান করে। অধিনাক সৌরভ গাঙ্গুলি একাই ১৪৪ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। লিড থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় দল জয়ের মুখ দেখতে পায়নি বোলিং ব্যর্থতার জন্য। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাথু হেডেন ৯৯ রানে, রিকি পন্টিং, ড্যানিয়েল মার্টিন ও স্টিভ ওয়ার অর্ধ শতরানের সৌজন্যে ৩ উইকেটে ২৮৪ রান করে দান ছেড়ে দেয়। ১৯৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ভারত ব্যাট করতে নেমেছিল। হাতে সময়ও ছিল অনেক। কিন্তু সেই ম্যাচটি নিস্ফলা হয়ে যায়। ড্র করেই ভারতীয় দল মাঠ ছাড়ে। তবে পরের ম্যাচে অ্যাডিলেডে সৌরভের দল জিতেছিল। আবার মেলবোর্নের মাঠে ভারতকে হারতে হয়। সিডনিতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি ড্র হয়ে যায়। সিরিজ জয় অধরাই থেকে যায়। আর এবারে বৃষ্টিভো গাব্বাতে ২১ বছর পর রোহিত শর্মাও যদি দ্বিতীয় ইনিংসের গেরোতে আটকে পড়েন, তাহলে সময়ের অভাবে জয় হাতছাড়া হয়ে যাবে। সেই কারণেই সিরিজের ফলাফলের ক্ষেত্রে আরও একটি নির্ণায়ক ম্যাচ হতে পারে গাব্বাতে।
২০০০ সালের পর ২৪টি টেস্ট আয়োজিত হয়েছে ব্রিসবেনে। সাম্প্রতিক অতীতের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০০ রানের কমে দল গুটিয়ে গেছে যারা প্রথম ব্যাট করতে নেমেছে। এখানকার পিচে গতি ও বাউন্স থাকায় জোরে বোলাররা বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিতে পারবেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৪ বছরে ৫৬১টি উইকেট তুলে নিয়েছে বোলাররা। স্পিনাররা ১৪২টি উইকেট পান। তাই দুই দলই তিন পেসারকে একাদশে রেখে এবারে মাঠে নেমেছে। ভারতের চতুর্থ পেসার হিসাবে বিকল্প খেলানো হচ্ছে নীতিশ রেড্ডিকে। আবার অস্ট্রেলিয়ার লাবু সেন হাত ঘোরাতে পারেন। সব মিলিয়ে বলতে পারা যায়, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুই শিবিরে একজন করে স্পিনারকে রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে চারজন পেসারকে রেখে আক্রমণ শানার কৌশল করা হয়েছে। তাই কোচদের ভাবনায় পেসারদের দিয়ে যেমন উইকেট ভাঙা যাবে, তেমনই আবার ব্যাটসম্যানরা সুযোগ বুঝে রানও করে ফেলতে পারবেন। তাই আগামী চারটি দিন দুই দলের কাছেই ভাইটার হয়ে দাঁড়িয়েছে।