ভারতের তরুণ ক্রিকেটার যশস্বী জয়সওয়ালের দ্বিতীয় ইনিংসে আউট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যশস্বীকে আউট দেওয়া বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকত শিরোনামে উঠে এসেছেন। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে তিনি তৃতীয় আম্পায়ারছিলেন। কারণ তিনি স্নিকো মিটারের তথ্য নাকচ করে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। আবার এই সিদ্ধান্তের প্রশংসাও পেয়েছেন তিনি। ৭১তম ওভারে যশস্বী যখন আউট হন, তখন ভারতীয় দল ২০০ রানে পিছিয়ে রয়েছে। আর বাকি ছিল ২১ ওভার। এই আউট ভারতীয় শিবিরে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হয়। যশস্বী যদি উইকেটে থাকতেন, তাহলে ম্যাচটি ড্র হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তৃতীয় আম্পায়েরর সিদ্ধান্ত নিয়ে এই সময় থেকেই আলোচনা শুরু হয়ে যায়। কে এই তৃতীয় আম্পায়ার?
শরফুদ্দৌলা সৈকতের জন্ম বাংলাদেশের ঢাকায়। ৪৮ বছর বয়সী এই আম্পায়ার ঢাকা মেট্রোপলিসের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন। তারপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। বাংলাদেশের আমেরিকান আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানব সম্পদ বিষয়ে এমবিএ করেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। তিনি বাঁহাতি স্পিনার ছিলেন। তাঁর দখলে আসে ৩১টি উইকেট। ব্যাট হাতে বড় অঙ্কের রান বলতে ৪৪। ২০০১ সালের পর তিনি আর ক্রিকেট খেলতে মাঠে নামেননি। পাঁচ বছর বাদে আবার তিনি ক্রিকেট মাঠে ফিরে আসেন অন্য ভূমিকায়। তিনি আম্পায়ারের ড্রেসে খেলা পরিচালনা করতে মাঠে নামেন। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা ম্যাচে তাঁর অভিষেক আম্পায়ার হিসেবে। বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে আইসিসি এলিট প্যানেলে তাঁর নাম ওঠে। ইতিমধ্যেই তিনি ২৪টি টেস্ট, ১০০টি একদিনের ম্যাচ ও ৭৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। মেয়েদের ক্রিকেটেও তিনি আম্পায়ারিং করেছেন।
এখন প্রশ্ন হল, সোমবারের এই আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিসের বিতর্ক? তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে যখন তিনি আউটের ব্যাপারটা দেখলেন, তারপরেই তিনি বলেন, ‘স্নিকোতে কোনও বড় স্পাইক দেখা যায়নি।’ তারপরেই তিনি আউট বলে ঘোষণা করে দেন। তিনি আরও বলেন, ভিডিয়োতে দেখা গেছে বল গ্লাভসে লেগেছে। বলের দিক পরিবর্তন হয়েছে। সেই যুক্তিতে স্নিকোতে ব্যাটে বা গ্লাভসে বল লাগার কোনও প্রমাণ না পাওয়া গেলেও তৃতীয় আম্পায়ার আউটের পক্ষেই সবুজ সংকেত দেন। তবে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক রবি শাস্ত্রী বলেন, এই ধরনের আউট সন্দেহজনক হলে তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকেই মেনে নিতে হয়। আবার কেউ কেউ বলেছেন, বাংলাদেশের এই আম্পায়ার সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবুও বিতর্কের উপর ইতি টানা যাচ্ছে না।