ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের নতুন সচিব হয়েছেন দেবজিৎ শাইকিয়া। তিনি নিজে অসমের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। তাই ক্রিকেটারদের ফর্ম কেন হারায়, সে বিষয়ে জানা আছে। আবার খেলোয়াড়রা কেন ড্রেসিং রুমে নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব নষ্ট করেন কেন, সে বিষয়েও সজাগ দেওয়ার কথা বলেছেন নতুন সচিব। হয়তো সেই কারণেই ক্রিকেটারদের আরও ভদ্রলোক হওয়ার জন্যই দশটি নিষেধাজ্ঞা আনতে চলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড। এই নিয়মগুলি না মানলে, শাস্তিও হতে পারে। এমনকি ক্রিকেটাররা যদি বোর্ডের এই দশটি নিয়ম অমান্য করে, সেক্ষেত্রে তাদের আইপিএল খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। শুধু নিষেধাজ্ঞা নয়, আর্থিক জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। নিয়ম না মানলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে তাঁদের চিহ্নিত করা হবে। কাটা হতে পারে বার্ষিক চুক্তির টাকা এবং ম্যাচ ফি। তবে কোচ ও প্রধান নির্বাচককে জানিয়ে রাখলে ওইসব ক্রিকেটারদের ব্যাপরে অন্যরকম সিদ্ধান্তের কথা ভাবা হয়েছে।
বোর্ডের নিয়মের যে খসড়া তৈরি হয়েছে, তাতে প্রথমেই বলা হয়েছে, প্রত্যেক ক্রিকেটারকে ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে হবে। আবার পরিবারের সঙ্গে যাতায়াত করা চলবে না খেলা চলাকালীন। অতিরিক্ত মাল নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। বোর্ড বলতে চাইছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিলে ম্যাচে খেলোয়াড়দের ফিটনেস থাকবে এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের মধ্যে দিয়ে নিজেদের উন্নত করা সম্ভব হবে। অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা যখন খেলবেন, তখন তরুণ ক্রিকেটাররা তাঁদের দেশে উৎসাহিত হবেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ কেন নেবেন না, তা আগেই জানাতে হবে কারণ দেখিয়ে। নির্বাচক ও কোচরা যদি অনুমতি দেন, সেক্ষেত্রে ছাড় হতে পারে। কোনও ক্রিকেটার দলের বাইরে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে যাতায়াত করতে পারবেন না।
যদি দেখা যায় কোনও ক্রিকেটার পরিবারের সঙ্গে যাচ্ছেন, সেক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকবে। আবার বেশি মালপত্র নিয়ে সফরে যাওয়া যাবে না ক্রিকেটারদের। যদি তিরিশ দিনের জন্য সফরে যান ক্রিকেটাররা, সেক্ষেত্রে পাঁচটি ব্যাগ নিয়ে যেতে পারবেন। তার মধ্যে থাকবে দু’টি খেলার সরঞ্জামের কিট ব্যাগ। আর এই পাঁচটি ব্যাগের ওজন হবে ১৫০ কেজির মধ্যে। সাপোর্ট স্টাফরা নিতে পারবেন আশি কেজি ওজনের জিনিস। তাঁদের জন্য বরাদ্দ থাকবে তিনটি ব্যাগ। আর তিরিশ দিনের কমে যদি কোনও সফর হয়, সেক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ থাকবে চারটি ব্যাগ। একইভাবে ওজনও কমবে। আর সাপোর্ট স্টাফরা দু’টি ব্যাগ নিতে পারবেন। সেখানেও ওজন কমে যাবে। বাড়তি জিনিসের জন্য বোর্ড কোনও খরচা দেবে না।
অনুশীলনে তারকা ক্রিকেটারদের দলের অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে মাঠে আসতে হবে। কোনও ভাবেই হোটেলে থেকে সময় নষ্ট করা চলবে না। হোটেলে থেকে তাঁরা বিশ্রাম নিতে পারবেন। আবার সফরের মাঝে কোনও ক্রিকেটার বিজ্ঞাপনের জন্য কাজ করতে পারবেন। আবার ৪৫ দিনের বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দু’সপ্তাহেরও বেশি পরিজনরা থাকবে পারবেন। দু’সপ্তাহ ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিজনদের খরচ দেবে বোর্ড। তারপরে আর কোনও অর্থ দেওয়া হবে না বোর্ডের পক্ষ থেকে। আবার যদি দেখা যায় কোনও ক্রিকেটার তাঁর পরিবারকে নিয়ে আগেই পৌঁছে গেছেন, সেক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের সেই খরচ বহন করতে হবে। আবার কেউই সফর চলাকালীন কেউই আগে আসতে পারবেন না। তবে কোনও ক্রিকেটার প্রয়োজনে আগে ফিরে আসেন, সেক্ষেত্রে কোচের অনুমতি থাকা প্রয়োজন।