• facebook
  • twitter
Wednesday, 11 December, 2024

হার্দিকের দাপটে সৈয়দ মুস্তাক আলি ক্রিকেট থেকে বাংলার বিদায়

বাংলার হয়ে জুটি বাঁধেন ঋত্ত্বিক রায়চৌধুরি ও শাহবাজ আহমেদ। ঋত্বিক ২৯ রান করেন। শাহবাজ একাই লড়াই করেন। কিন্তু তিনি পাশে কাউকে পাননি। পর পর উইকেট হারাতে কোনও জুটি বাঁধতে পারেনি বাংলা।

হার্দিক পান্ডিয়া।

না, হলো না। বাংলার স্বপ্নভঙ্গ। গ্রুপ ম্যাচগুলিতে বাংলা যেভাবে প্রতিপক্ষ দলগুলিকে হারিয়েছে, তাতে আশা করা গিয়েছিল, কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলার ক্রিকেটাররা অবশ্যই দাপট দেখিয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ক্রিকেটে শেষ চারের ম্যাচে খেলার ছাড়পত্র আদায় করে নেবে। সেই আশাতে সুদীপ ঘরামিরা নিজেদের তৈরি করে নিয়েছিলেন। আবার যেখানে মহম্মদ শামির মতো বোলারকে পাওয়া গিয়েছে, তখন এই আশা বাংলা করতেই পারেনি। কিন্তু পারলেন না মহম্মদ শামি। পারলেন না শাহবাজ আহমেদ। আসলে বিপক্ষ বরোদা দলে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার মতো ক্রিকেটাররা রয়েছেন। সেই জায়গায় কঠিন লড়াই হবে, এটা স্বাভাবিক ছিল। বরোদা বেশ শক্তিশালী দল, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। বুধবার বাংলা চ্যালেঞ্জ জানিয়েও ব্যাটিং ব্যর্থতায় হার স্বীকার করে নিল হার্দিক পাণ্ডিয়াদের কাছে। বাংলাকে হারতে হল ৪১ রানে। আর এবারে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হল বাংলাকে।

টসে জিতে বাংলার অধিনায়ক সুদীপ ঘরামি বল করার সিদ্ধান্ত নেন। টানটান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে খেলা শুরু হয়। বাংলার বোলিং আক্রমণে প্রথম দিকে বেশ সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল বরোদা দল। চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে যেভাবে বাংলা দল জয় তুলে নিয়ে এসেছিল, তাতে বিশ্বাস হয়েছিল বরোদা দলকে সমস্যায় ফেলে দিয়ে বাংলা দল এগিয়ে যাবে। কিন্তু সেই আশা প্রথম দিকে উঁকি দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি বাংলা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বরোদার জয়ের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার শাশ্বত রাওয়াত ও অভিমন্যু সিংহ। ৯.৪ ওভারে ৯০ রানের জুটি বাঁধেন তাঁরা। নতুন বল কাজে লাগাতে পারেননি শামি, কণিষ্ক শেঠরা। ফলে উইকেট পড়েনি। শাশ্বত ৪০ ও অভিমন্যু ৩৭ রান করেন। তিন নম্বরে নেমে বড় রান পাননি হার্দিক। ১০ রান করে আউট হন তিনি। অধিনায়ক ক্রুণাল করেন ৭ রান। এই দুই ব্যাটসম্যান রান না পাওয়ায় বরোদা দল ২০০ রানে পৌঁছতে পারেনি। ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান করে বরোদা। বাংলার বোলারদের মধ্যে এই ম্যাচে সেই ছন্দ দেখতে পাওয়া যায়নি। যার ফলে ১৫ রান অতিরিক্ত যোগ হয়েছে বরোদার স্কোরবোর্ডে। তা না হলে খেলার ছবি পাল্টে যেত। শামি ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। প্রথম দিকে শামির বল সেইভাবে বরোদার ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে পারেনি। তবে, শেষ দিকে উইকেট পেলেও শুরুতে উইকেট তুলতে না পারায় সমস্যায় পড়ে বাংলা।

বাংলার সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭৩ রানের। ওই রান তাড়া করতে বাংলার খেলোয়াড়রা সাহসী ভূমিকা নিতে পারেননি। আবার দ্রুত রান তুলতে শুরু করেছিলেন অভিষেক পোড়েল। সমস্যা হচ্ছিল আর এক ওপেনার করণ লালের। তিনি ৬ রান করে আউট হন। অধিনায়ক সুদীপ ঘরামি ২ ও ঋত্ত্বিক চট্টোপাধ্যায় শূন্য রানে আউট হওয়াতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়।। অভিষেক ২২ রান করে ফেরায় বড় ধাক্কা খায় বাংলা।

ব্যাট হাতে রান না পেলেও বল হাতে নজর কাড়লেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। অভিজ্ঞতাকে হাতিয়ার করে নতুন বলে উইকেট নিলেন তিনি। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট তুলে নেন হার্দিক। তাঁর দাপটে ম্লান হয়ে গেল শামির বোলিং। বরোদার আর এক পেসার মেরিওয়ালাও ৩টি উইকেট নিয়ে দলের জয়কে সহজ করে দেন।

বাংলার হয়ে জুটি বাঁধেন ঋত্ত্বিক রায়চৌধুরি ও শাহবাজ আহমেদ। ঋত্বিক ২৯ রান করেন। শাহবাজ একাই লড়াই করেন। কিন্তু তিনি পাশে কাউকে পাননি। পর পর উইকেট হারাতে কোনও জুটি বাঁধতে পারেনি বাংলা। যার ফলে ম্যাচ হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়। ৩৬ বলে ৫৫ রান করে আউট হন শাহবাজ। শাহবাজ চলে যাওয়ার পরেই বোঝা গিয়েছিল বাংলার পক্ষে এই ম্যাচ টেনে ধরা সম্ভব হবে না। বরোদার বোলাররা স্বচ্ছন্দে বল করে জয়ের পথকে সরল করে দেন। দু-ওভার বাকি থাকতেই ১৩১ রানে অল আউট হয়ে যায় বাংলা। আশা জাগিয়েও বাংলা সাফল্যের মুখ দেখতে পেল না। যার ফলে লক্ষ্মীরতন শুক্লার বাংলা এই প্রতিযোগিতার শেষ চারে খেলার সুযোগ হারালো।