• facebook
  • twitter
Tuesday, 8 April, 2025

জাতীয় গেমস সাঁতার বিতর্কে রিপোর্ট চাইল রাজ্য ক্রীড়া দপ্তর

শোনা যায়, রিলে সাঁতারে প্রথমে নাম ছিল সৌবৃতির। তারপরে মৌবনী, স্নিগ্ধা ও স্বস্তিকা দাসের নাম লেখা হয়েছিল।

প্রতীকী চিত্র

জাতীয় গেমসে বাংলার সাঁতারুদের নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এমনকি একটি ইভেন্টে দলগতভাবে বাংলার সাঁতারুদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিজেদের মধ্যে ঝামেলা এমন স্তরে পৌঁছেছিল, তা প্রত্যক্ষ করার পরেই আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের নাম বাতিল করে দেওয়া হয়। কেন এমন ঘটনা ঘটল, এই বিষয়টি জানার পরেই রাজ্য সরকারের ক্রীড়া দপ্তর থেকে চিঠি দিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বেঙ্গল অলিম্পিক সংস্থার কাছে। এই চিঠির কথা বিওএ-র সভাপতি চন্দন রায়চৌধুরী স্বীকার করে নিয়েছেন।

তবে, তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, সাঁতার নিয়ে যখন একটা বিতর্ক তৈরি হয়, তখন তিনি ছত্তিশগড়ে পৌঁছতে পারেননি। তবে জাতীয় গেমস চত্বরে পৌঁছে তিনি এই ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করে একটা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে রাজ্য ক্রীড়া দপ্তরে। তিনি আরও বলেন, সাঁতার যেখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তা মূল কেন্দ্র থেকে অনেকটা দূরে। তাই সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা জানতে হবে। তারপরেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।

কী সমস্যা হয়েছিল, এই নিয়ে কথা উঠতেই জানা যায়, রিলে সাঁতারে নামার আগেই অংশগ্রহণকারী চার সাঁতারু উপস্থিত হয়েছিলেন। তারপরেই চারজনের মধ্যে বেশকিছু কথা কাটাকাটি হয় এবং এমন একটা সময় পৌঁছে যায়, যা ইগোর লড়াইয়ে পরিণত হয়। দু’টি সোনা ও একটি রুপোর পদকজয়ী সাঁতারু সৌবৃতি মণ্ডলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় স্বস্তিকা দাসের সঙ্গে। অবশ্য সৌবৃতি বর্তমানে বাংলায় থাকেন না। এমনকি বাংলার সাঁতারুদের সঙ্গে সেইভাবে পরিচিতিও নেই। দীর্ঘদিন তিনি দিল্লিতে কোচ পরিমল চৌধুরীর কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
বর্তমান বাংলার সাঁতারের পরিকাঠামোয় তাঁর পক্ষে অনুশীলন করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি দিল্লি চলে যান।

শোনা যায়, রিলে সাঁতারে প্রথমে নাম ছিল সৌবৃতির। তারপরে মৌবনী, স্নিগ্ধা ও স্বস্তিকা দাসের নাম লেখা হয়েছিল। তখন সৌবৃতি বলেন, আমার পক্ষে প্রথম সাঁতারু হিসেবে নামা সম্ভব হচ্ছে না। আমাকে সবার শেষে নামতে দেওয়া হোক। তখন স্বস্তিকা এর প্রতিবাদ করে বলেন, এটা ঠিক হচ্ছে না। কেন সৌবৃতি প্রথমে নামবে না? হয়তো দু’টি সোনার পদক পেয়েছে বলে অহঙ্কার তৈরি হয়েছে। তারপরেও একে অপরের বিরুদ্ধে নানারকম কথা বলতে শোনা যায়। সৌবৃতির অভিমত, বাংলা শিবিরে সমন্বয় ছিল না। নানারকম কথা শোনা গিয়েছে সৌবৃতির বিরুদ্ধে। সৌবৃতি বলেন, আমি কখনওই অহঙ্কার করে কথা বলিনি। স্বস্তিকা আমার ছোট বোনের মতো। সে যদি এভাবে ব্যবহার করে থাকে, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি আমার মায়ের সঙ্গেও এমনই ব্যবহার করা হয়েছে। যখন এই ঘটনা ঘটছিল, তখন কোনওভাবেই বাংলার কেউই কোনও প্রতিবা করেননি। স্বস্তিকা আমার মায়ের দিকে আঙুল তুলে বার বার কথা বলেছেন।

এদিকে আয়োজকরা এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ব্যাপারটা এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল, তাঁরা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি। সেই কারণে তাঁদেরকে ইভেন্ট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আবার রাজ্য সাঁতার সংস্থার সভাপতি রামানুজ মুখার্জি অদ্ভুত যুক্তি দিয়ে বলেছেন, এই ইভেন্টে কোনও পদক আসবে না বলেই নাম তুলে নেওয়া হয়েছে। বাংলা দলের শেফ দ্য মিশন বিশ্বরূপ দে বলেছেন, খবরটা পেয়েছি, কিন্তু আমি যে জায়গায় রয়েছি, সেখান থেকে সাঁতার ইভেন্ট যেখানে হচ্ছে, তা বহুদূর। সম্পূর্ণ ব্যাপারটা আমার জানা নেই। তবে, বাতিল করা হয়েছে, এটাও ঠিক নয়। তবুও বলব, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নিয়ে অবশ্যই জানাব কী ঘটনা ঘটেছিল। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, সৌবৃতি বাংলা দলের সঙ্গে থাকছেন না। তিনি মায়ের সঙ্গে আলাদা হোটেলে রয়েছেন। বাংলার অন্য প্রতিযোগীরা এই বিষয়টি কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না বলেই হয়তো এমন ঘটনা ঘটেছে।

News Hub