স্পেনের ছন্দময় ফুটবলকে ইংল্যান্ডের বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল চ্যালেঞ্জ ছুঁড়বে!

ইউরো কাপের মেগা ফাইনাল

প্যারিস: ইউরো কাপের মেগা ফাইনালে রবিবার৷ সম্মুখ সমরে স্পেন আর ইংল্যান্ড৷ ইংল্যান্ডের কাছে এটা অত্যন্ত মর্যাদার লড়াই৷ স্পেনের বিরুদ্ধে জেতার জন্য অধিনায়ক হ্যারি কেন সহ অন্যান্য খেলোয়াড়রা মুখিয়ে রয়েছেন৷ তার প্রধান কারণ হল স্পেন যে স্টাইলে ফুটবল খেলে, সেই ফুটবলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গেলে কৌশলগত ফুটবল না খেলতে পারলে ইংল্যান্ডের বিপদ ঘনীভূত হবে৷ তাই অত্যন্ত সতর্কতা নিয়ে খেলতে হবে ইংল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ স্পেনের বিরুদ্ধে৷ স্পেন সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র পেয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবে আত্মবিশ্বাসী স্পেনকে চাপে ফেলার জন্য ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটকে অনেক অঙ্ক কষতে হবে৷

তাই ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা নিজেদের দক্ষতা প্রকাশ করতে না পারলে সেক্ষেত্রে ম্যাচ নিজেদের হাতে রাখা সম্ভব হবে না৷ স্পেন অনেক বেশি পাসিং ফুটবল খেলে থাকে৷ তারা যখন আক্রমণে উঠে আসে, তখন দেখা যায়, সম্মিলিতভাবে সেই প্রয়াসকে কার্যকরী করতে সবাই এগিয়ে থাকে৷ প্রতিটি মুহূর্তকে প্রত্যক্ষ করতে না পারলে ইংল্যান্ডের কাছে চাপ হয়ে যাবে৷ ইংল্যান্ডের সমর্থকদের কাছে বারবার পরিচিত দৃশ্য দেখে হতাশের ছবি প্রকাশ পেয়েছে৷ ফাইনালে উঠে তারা যেমন হেরে গিয়েছে, আবার কখনও টাইব্রেকারে গোল করতে না পেরে হারের মুখে পড়তে হয়েছে৷ ১৯৬৬ সালের পর কোনও বড় ট্রফি ইংল্যান্ডের ঘরে আসেনি৷


তাই ইউরো কাপের ফাইনালের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ইংল্যান্ডের সমর্থকরা৷ আশায় বুক বেঁধেছেন তাঁরা৷ আসলে কয়েক বছর ইংল্যান্ডের ফুটবলের চেহারা অনেক বদলে গিয়েছে৷ বর্তমান কোচের প্রশিক্ষণে উন্নততর জায়গায় পৌঁছেছেন ফুটবলাররা৷ টাইব্রেকার মারতে গিয়ে ভয় পাচ্ছেন ফুটবলাররা৷ আবার শেষ মিনিটে গোল করতেও দেখা যাচ্ছে ইংল্যান্ডকে৷ সব মিলিয়ে বলতে পারা যায়, ইংল্যান্ড দল ভালো খেলা উপহার দেওয়ার জন্য তৈরি রয়েছে৷ কোচ সাউথগেট বলেছেন, আমরা শুধু একটা প্রতিযোগিতা নিয়ে ভাবি না৷ এবারে পুরো দলটা সেরা খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছে৷ ২০১৬ সাল থেকে ইংল্যান্ডের কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন সাউথগেট৷ সেই বছরই আইসল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়ে ইউরো কাপ থেকে বিদায় নিয়েছিল ইংল্যান্ড৷

তারপরেই কোচ সাউথগেটকে দেখা হাল ধরতে৷ ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলে সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল ইংল্যান্ড৷ আবার ২০২১ সালে ইউরো কাপের ফাইনলে উঠেছিল ইংল্যান্ড৷ ফ্রান্সের কাছে হারতে হয়েছিল ইংল্যান্ড দলকে৷ আর এবারেও ইউরো কাপের ফাইনালে উঠেছে হ্যারি কেনরা৷ গত ৭০ বছরে একবারই কোনও বড় প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলেছে ইংল্যান্ড৷ ইংল্যান্ড এই মুহূর্তে ইউরো কাপের ফাইনাল খেলার জন্য মানকিভাবে এগিয়ে রয়েছে৷ তারা প্রত্যেকেই জানেন প্রতিপক্ষ স্পেনের বিরুদ্ধে খুব সহজেই লড়াই করা যাবে না৷ তবে স্পেন যে ধারায় ফুটবল খেলে, সেই ধারাকে রুখে দিতে গেলে ইংল্যান্ডকে অবশ্যই ফিল্ড গোল করতে হবে৷ ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়রা অনেক সময় শক্তি প্রয়োগ করে খেলে খেলার ছন্দকে নষ্ট করে দেন৷ তাঁরা যে.নতেন প্রকারেণ জেতার জন্য কৌশলগত ফুটবল খেলার চেষ্টা করেন৷ অনেক সময়ই পরিকল্পনাহীন ফুটবল খেলে৷

স্পেন দলে বেশকিছু প্রতিভাবান ফুটবলার রয়েছে, ইংল্যান্ড দলেও তার ব্যতিক্রম নয়৷ স্পেন সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে দিয়ে নতুন ছন্দে ফিরে এসেছে৷ বিশেষ করে তাদের তিকিতাকা প্রয়াসকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে৷ বিশেষ করে, ওলমোর পায়ে ভালো জাদু আছে৷ তারপরে দলে বিস্ময় বালক ইয়ামালের কথা সবার কাছে পৌঁছে গিয়েছে৷ অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবলার৷ বল পায়ে পড়লেই ইয়ামাল যেমন চনমনে হয়ে ওঠেন৷ প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে টলমল করে দিতে পারে পায়ের সূক্ষ্ণ কাজে৷ নতুন কোচ ফুয়েন্তে মনে করেন, আক্রমণ ভাগের মতো রক্ষণভাগের ফুটবলাররাও দারুণ সচেতন কীভাবে বিপক্ষ দলের আক্রমণকে রুখে দিতে হবে৷ বিশেষ করে রবিন লে নর্মান ও দানি কার্ভাবান৷ আবার ইংল্যান্ড দলের ওলি ওয়াটকিনস গোলের মধ্যে রয়েছেন৷ দারুণ সুযোগসন্ধানী ফুটবলার৷ বক্সের মধ্যে বল পেলে গোল করতে ওস্তাদ৷ তাই ইউরোর মেগা ফাইনাল একে অপরকে টেক্কা দিতে ইংল্যান্ড যেমন লড়াই করবে, তেমনই স্পেনের ফুটবলাররাও জাদু দেখিয়ে বাজিমাত করার চেষ্টা করবেন৷ সব মিলিয়ে বলতে পারা যায় ইউরো মেগা ফাইনাল ফুটবল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যেই শেষ হবে৷