অলিম্পিক্স পদকজয়ীকে হারিয়ে চমক ঐহিকার

বাংলার টেবলটেনিস তারকা খেলোয়াড় ঐহিকা মুখার্জি আবার চমক দিলেন। বিশ্বের এক নম্বর টেবলটেনিস তারকা চিনের সুন ইয়েংসাকে হারিয়ে সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন। আর এবারে দক্ষিণ কোরিয়ার শিন ইউবিনকে হারিয়ে ঐহিকা আবার শিরোনামে উঠে এলেন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, দক্ষিণ কোরিয়ার এই খেলোয়াড় প্যারিস অলিম্পিক্স গেমসে পদক জিতেছিলেন। এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ টেবলটেনিসে দলগত খেলায় ভারতীয় দল শেষ আটে পৌঁছে গেল। ওই দলগত খেলায় ঐহিকা দুরন্ত পারফর্ম করে দক্ষিণ কোরিয়ার সেরা খেলোয়াড়কে হারিয়ে ভারতীয় দলকে অনেকটাই এগিয়ে দেন। ঐহিকা এই মুহূর্তে বিশ্ব টেবল টেনিসে ক্রমতালিকায় ৯২ স্থানে রয়েছেন। আর দক্ষিণ কোরিয়ার শিন ইউবিন রয়েছেন ৮ নম্বরে। প্যারিস অলিম্পিক্স গেমসে তিনি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই ঐহিকার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা খুব একটা সহজ ছিল না। ঐহিকার সঙ্গে শিন ইউবিনের লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল। বাংলার ঐহিকা টক্কর দিয়েছেন প্রথম গেম থেকেই।

প্রথম গেমে ঐহিকা ১১-৯ পয়েন্টে শিন ইউবিনকে হারিয়ে দেন। তবে দ্বিতীয় গেমে শিন ইউবিন ১১-৭ পয়েন্টে ঐহিকাকে পরাস্ত করেন। তৃতীয় গেমে দারুণ লড়াই হয় দুই খেলোয়াড়ের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ঐহিকা ১২-১0 পয়েন্টে পিছনে ফেলে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার খেলোয়াড়কে। পরের লড়াইয়ে আবার শিন ইউবিন ঘুরে দাঁড়িয়ে ঐহিকার কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন ১১-৭ পয়েন্টে। সবাই অপেক্ষা করছিলেন পঞ্চম গেমের ফলাফল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। ঐহিকা শেষ গেমে দুরন্ত ভূমিকা নিয়ে ১১-৭ পয়েন্টে দক্ষিণ কোরিয়ার শিন ইউবিনকে হারিয়ে ম্যাচ জিতে যান। ম্যাচ জেতার পরেই ঐহিকা লাফিয়ে উঠে দর্শকদের অভিনন্দন জানান। দেখা গিয়েছে, ঐহিকা সবসময় বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে দারুণ পারফর্ম করে থাকেন। এবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। ভাবতেই পারা যায়নি, অলিম্পিক্সে পদকজয়ী খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ঐহিকা নিজের দাপট দেখাতে পারবেন।দলে মণিকা বাত্রা, শ্রীজা আকুলার মতো অলিম্পিক্সে খেলা খেলোয়াড় থাকলেও সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নামেন ঐহিকা।

ইউবিনের বিরুদ্ধে ঐহিকা কাজে লাগান তাঁর অ্যান্টি-স্পিন রাবার ব্যাট। এই ধরনের ব্যাটে নিয়ন্ত্রণ দরকার হয়। সেটাই করে দেখালেন ঐহিকা। নেটের অনেক কাছে খেলছিলেন তিনি। যখনই সুযোগ পাচ্ছিলেন ফোরহ্যান্ড টপস্পিনে বিভ্রান্ত করছিলেন ইউবিনকে। যখন ব্যাকহ্যান্ড মারছিলেন তখন ইউবিনের শরীরের থেকে দূরে মারছিলেন তিনি। নিজের উচ্চতা কাজে লাগান ঐহিকা। উচ্চতা কম হওয়ায় ঐহিকার শট ফেরাতে সমস্যা হচ্ছিল ইউবিনের।


উল্লেখ্য, প্যারিস অলিম্পিক্সে ভারতের মহিলা দলের রিজ়ার্ভ খেলোয়াড় ছিলেন ঐহিকা। মণিকা ও শ্রীজা ছাড়া দলে সুযোগ পেয়েছিলেন অর্চনা কামথ। সেই সময় ঐহিকাকে না নেওয়ায় অনেক সমালোচনা হয়েছিল। এশিয়ান গেমসে ভারতের হয়ে টেবল টেনিসে প্রথম পদকজয়ী ঐহিকার বদলে অর্চনাকে সুযোগ দিলেও লাভ হয়নি ভারতের। হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। অলিম্পিক্সের পরেই টেবল টেনিস ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন অর্চনা। সেই কারণেই হয়তো এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় দলে খেলছেন ঐহিকা। ইউবিনকে হারিয়ে আরও এক বার সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন বাংলার মেয়ে। এখন বোঝাই যাচ্ছে প্যারিস অলিম্পিকস গেমসে ভুল করেছিলেন ঐহিকাকে না খেলতে দিয়ে।