সরফরাজের ১৫০ রান, ১ রানের শতরানে বঞ্চিত ঋষভ

অনুশীলনে ভারতীয় দল (Photo: Surjeet Yadav/IANS)

ভারতের আতঙ্কটা এখনও কাটেনি। শনিবার চতুর্থ দিনের শেষে ভারত ৪৬২ রানের ইনিংস শেষ করল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আসলে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪৬ রান করায় বিপদ ঘনীভূত হয়। সেই খান থেকে এখনও তারা ছুটি নিতে পারেনি। ইংল্যান্ডকে পঞ্চম দিনে জিততে গেলে ১০৭ রান করতে হবে। অবশ্য পরিসংখ্যান দেখে বলতেই পারা যায় ভালো জায়গায় রয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের স্কোরবোর্ডটা ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অবশ্যই চার খেলোয়াড়কে প্রশংসা করতেই হবে। অধিনায়ক রোহিত শর্মা যেমন অর্ধ শতরান উপহার দিয়েছেন, তেমনই আবার সরফরাজ খান শত রান করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন। পাশাপাশি মাত্র ১ রানের জন্য শতরান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ঋষভ পন্থ। আর বিরাট কোহলি ৭০ রান করে আউট হলেও, সেই আউট নিয়ে সন্দেহ ছিল। আর এদিন নিউজিল্যান্ড খেলার শুরু করলে মাত্র ৪ বড় মাঠে গড়িয়েছে। তারপরেই আলোর অভাবের জন্য তারা আম্পায়ারকে অনুরোধ জানান। আম্পায়ার ব্যাপারটি উপলব্ধি করেন এবং পরবর্তী সময়ে বৃষ্টি আসাতে আর খেলা হয়নি। তবে, ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিরা আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তকে সেইভাবে মেনে নিতে পারেননি। তবে, নিউজিল্যান্ড কোনও রানই করতে পারেনি শেষ চার বলে।
ভারতের ঋষভ পন্থ ও সরফরাজ খান জুটি ভারতের অবস্থানকে একেবারেই বদলে দেন। এই জুটি ১৭৭ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। যার ফলে ভারত শক্ত মঞ্চে দাঁড়াতে পেরেছে। সরফরাজ ফিরে যাওয়ার পরেই ঘরের মাঠে বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি লোকেশ রাহুল। চা-পানের বিরতির আগে ভারতের রানসংখ্যা ছিল ৬ উইকেটে ৪৩৮ রান। তারপরেই ভারতীয় দলের চার খেলোয়াড় সেইভাবে বেশিক্ষণ উইকেটে দাঁড়াতে সাহস দেখাতে পারেননি। ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ৪৬২ রানে। অর্থাৎ ভারতীয় দল মাত্র ১০৬ রানে এগিয়ে থাকে নিউজিল্যান্ডের থেকে। বেঙ্গালুরু টেস্ট জিততে গেলে পঞ্চম দিনে নিউজিল্যান্ডকে ১০৭ রানে টার্গেট রাখতে হবে। ভারতীয় দলকে হারাতে গেলে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের খুব একটা বেগ পেতে হবে না, এমন ভাবনা অনেকেই করছেন। কিন্তু ভারতের বোলাররা তার জবাব দিতে তৈরি রয়েছেন। এটা মনে রাখতে হবে, ক্রিকেট সবসময় অনিশ্চয়তার খেলা। কেউ আগাম বলে দিতে পারবেন না, খেলার ফলাফল কোথায় গিয়ে থমকে দাঁড়াবে। একটা সময় এদিন খেলার মাঝপথে বৃষ্টি নামে। তখন উইকেটে ছিলেন সরফরাজ ও ঋষভ পন্থ। তখন ভারতের রানসংখ্যা ছিল ৩ উইকেটে ৩৪৪ রান। বৃষ্টি দেখে আম্পায়ার মধ্যাহ্নভোজের কথা ঘোষণা করে দেন। সেই মুহূর্তে ভারত ১২ রানে পিছিয়ে ছিল। সরফরাজ খান তখন উইকেটে দাঁড়িয়ে ১২৫ রানে আর ঋষভ পন্থ ৫৩ রানে নট আউট থাকেন। তারপরে খেলা যতই গড়িয়ে রয়েছে, ততই ভারতের এই দুই ব্যাটসম্যান মেজাজের সঙ্গে ব্যাট করেছেন। সবারই জানা আছে, ঋষভ পায়ে চোট পেয়ে প্রথম দিনের শেষে উইকেট রক্ষা করতে পারেননি। তাই তাঁর পরিবর্তে মাঠে ছিলেন ধ্রুব জুরেল। সেই ঋষভ পন্থ চতুর্থ দিনে মাঠে নেমে আবার স্বমহিমায় ফিরে এসেছেন। তাঁর অসাধারণ ৯৯ রান সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। আবার অন্যদিকে অবাক করলেন সরফরাজ খান। তিনি এখন ভারতীয় দলে পরিণত ব্যাটসম্যান, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ২০১৪ সালে তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম খেলতে নেমেছিলেন। খেলেছেন অনুর্ধ্ব ১৯ দু’টি বিশ্বকাপ। তারপরে ২০০৯ সালে হ্যারিস শিল্ডে একটি ম্যাচে ৪৩৯ করে সবার নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। আর অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ৫৬৬ রান করেছিলেন। এই সফল ক্রিকেটার সরফরাজের আবার বিতকও জড়িয়ে রয়েছে। তিনি বয়স ভাঁড়িয়ে ছোটদের দলে চলে এসেছিলেন।