• facebook
  • twitter
Tuesday, 7 January, 2025

সন্তোষ জয়ী ফুটবলারদের চাকরি, বাংলার ফুটবলে নবজাগরণের ডাক মুখ্যমন্ত্রীর

রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরি সুযোগ মিলে যাওয়াতে, ফুটবলাররা একদিনের টুর্নামেন্টে নয়,কলকাতা লিগে এখন নিজেদের সেরাটা দিতে উদগ্রীব হয়ে থাকবে।

ফাইল চিত্র

৭৮ তম সন্তোষ ট্রফি জয়ী ফুটবলারদের রাজ্য সরকার পুলিশের বিভিন্ন পদে চাকরি দিচ্ছে। সম্ভবত আগামী ৮ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি ফুটবলারের হাতে চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার তুলে দেবেন। ২০২২ সালে বাংলা দল জাতীয় গেমসের ফুটবলে সোনার পদক পেয়েছিল। সোনাজয়ী বাংলা দলের ফুটবলারদেরও চাকরি দেওয়ার তোরজোড় শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত বলা যায় ২০১৬-১৭ মরশুমে বাংলা দল সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে বারের সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের অনেক ফুটবলারদেরও এখনো চাকরি হয়নি। হয়তো বা আগামীদিনে বিগত সন্তোষ ট্রফি জয়ী ফুটবলারদের চাকুরীর কথাও ভাবা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের সন্তোষ ট্রফি জয়ী ফুটবলারদের যে তৎপরতায় চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেন, এক কথায় বাংলার ফুটবলে তা অনন্য নজির বলা যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সদিচ্ছায় আগামী দিনে বাংলার ফুটবলে নতুন জোয়ার আসতে বাধ্য হবে। ফুটবল খেলেও যে জীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায়, চাকরির সুযোগ মেলে– এ নজির আগামী দিনের বাংলার ফুটবলারদের প্রেরণা যোগাবে। বাংলার ফুটবলারদের কেবলমাত্র সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সরকারের দেওয়া এই চাকরির নজির বাংলার ফুটবলারদের সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ভালো পারফরমেন্সের জন্য মোটিভেশন যোগাবে।

একসময় কলকাতা লিগের ছোট ক্লাবে খেলেও সহজে সরকারি চাকরি পাওয়া যেত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা লিগের ছোট ক্লাবে খেলে চাকরি তো পাওয়া যেতই না, বরং বাংলার হয়ে সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিনিধিত্ব করে সাফল্য নিয়ে আসলেও, রাজ্য সরকারের চাকরির সুযোগ মিলছিলনা। একসময় ব্যাংক ও রেল সমেত বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে খেলোয়ারদের চাকুরী পাওয়ার কোটা ছিল। কলকাতা লিগের পাশাপাশি অফিস লিগ গড়ের মাঠের জমজমাট লিগ ছিল। কলকাতা লিগ এখন কোনোক্রমে মাত্র দু মাসের লিগে পরিণত হয়েছে। খেলোয়াড় রিক্রুটমেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য অফিস লিগে এখন অধিকাংশ অফিস ক্লাব অংশগ্রহণ করে না।

বাংলার সন্তোষ ট্রফি জয় এবং অতি সক্রিয়তায় সফল ফুটবলারদের চাকরির সুযোগ করে দেওয়াতে, কলকাতা লিগ ও অফিস লিগের কর্মকর্তারা হয়তো আগামী দিনে নতুন চিন্তা ভাবনায় তাদের লিগকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
ইতিপূর্বে কলকাতা লিগ ও অফিস লিগের অতীত জৌলুস হারাতে বসেছে। এই সুযোগে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে একদিনের টুর্নামেন্টগুলোর রমরমা বেড়ে যায়। সপ্তাহের প্রায় প্রত্যেক দিনই এই টুর্নামেন্টগুলি আয়োজন হয়ে থাকে। নগদ টাকা রোজগারের সুযোগ থাকায়, বাংলার ফুটবলারদের কাছে কলকাতা লিগের পরিবর্তে এই সমস্ত টুর্নামেন্টগুলোই অগ্রাধিকার পেয়ে আসছিল। কারণ কলকাতা লিগে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ ক্লাবগুলো থেকে ২/৩ মাসের বেশি রোজগারের সুযোগ থাকেনা!

রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরি সুযোগ মিলে যাওয়াতে, ফুটবলাররা একদিনের টুর্নামেন্টে নয়,কলকাতা লিগে এখন নিজেদের সেরাটা দিতে উদগ্রীব হয়ে থাকবে। কলকাতা লিগে নিজেদের সেরা পারফরমেন্স দিয়ে বাংলা দলে সুযোগ করে নেওয়ার প্রতিযোগিতা আরো বেড়ে যাবে এবং সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় নিজেদের সেরাটা দিয়ে সাফল্য ছিনিয়ে আনার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।

রাজ্য সরকার চাকরির সুযোগ করে দেওয়াতে কেবল কলকাতা ফুটবল লিগের মান বাড়বে তা নয়, জেলার ফুটবলে এখন নতুন উন্মাদনা শুরু হবে। জেলা লিগের প্রতিযোগিতার মান বাড়বে সেখান থেকেও ভালো ভালো ফুটবলার উঠে আসবে। আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট এখন আরও প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরির নজির বাংলার ফুটবলের নবজাগরণের শুভসূচনা হিসেবে আশা করা যেতে পারে।