সন্তোষ জয়ী ফুটবলারদের বাংলার কোনও দলে দেখা যাচ্ছে না

ফাইল চিত্র

বাংলায় রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগের ইস্ট জোনের খেলা চলছে। ছয় দলের ইস্ট জোনে বাংলা থেকে পাঁচটা দল অংশগ্রহণ করছে। অপর দল আইএসএলের ওড়িশা এফসি। আইএসএল ও আই লিগের টিমগুলি থেকে এবার ইস্ট জোনে খেলার সুযোগ মিলছে। আইএসএল ও আই লিগ দলগুলি বাদ দিয়েও গতবার ইস্ট জোনের রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগে কলকাতা লিগের কালীঘাট মিলন সংঘ ও অ্যাডামাস ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব খেলার সুযোগ পেয়েছিল। এবার ইস্ট জোনে কেবলমাত্র আইএসএল ও আই লিগের টিমগুলি সুযোগ পেয়েছে।

রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগ সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সহযোগিতায় দেশের উদীয়মান ফুটবলারদের সর্বভারতীয় স্তরে আত্মপ্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। আঞ্চলিক পর্যায় থেকে সর্বভারতীয় পর্যায়ের পর আন্তর্জাতিক স্তরের ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট টুর্নামেন্টে খেলার সুবর্ণ সুযোগ এই রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এছাড়াও দেশের উদীয়মান ও প্রতিভাবান ফুটবলারদের আইএসএল ও আই লিগের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাবের স্কাউটদের নজরে পড়ার সুযোগ থাকে। প্রধানত অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবলারদের নিয়েই এই টুর্নামেন্ট হয়।

সদ্য বাংলা দল জাতীয় স্তরের সন্তোষ ট্রফি ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনালে বাংলা দল কেরল রাজ্য দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। চ্যাম্পিয়ন বাংলা দলের কোনও ফুটবলারকেই রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগের কোনও দলের হয়েই খেলতে দেখা যাচ্ছে না। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার কাছে পরাজিত কেরল দলের কিছু ফুটবলারকে ইস্টবেঙ্গল এফসি’র হয়ে ডেভেলপমেন্ট লিগে খেলতে দেখা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত বলা যায় যে, ২০২১-২২ মরশুম পর্যন্ত সন্তোষ ট্রফিতে অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবলার হিসেবে ৫ জন ফুটবলারকে ২০ জনের স্কোয়াডে রাখা বাধ্যতামূলক ছিল।


রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগ চালু হওয়ার পর, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন সন্তোষ ট্রফি থেকে জুনিয়র ফুটবলার রাখার বাধ্যতামূলক নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয়। ফলতঃ রাজ্যের প্রতিভাবান জুনিয়র ফুটবলারদের সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আত্মপ্রকাশে এখন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলার তিন বড় দল সমেত বাংলা থেকে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনে অংশগ্রহণকারী পাঁচ দলের মধ্যে চার দলেই বাংলার প্রতিভাবান ফুটবলারদের খুব কম সংখ্যায় প্রথম একাদশে দেখা যাচ্ছে। ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব ছাড়া ইস্ট জোনে অংশগ্রহণকারী বাংলার অপর চার দলেই ভিন্ন রাজ্যের ফুটবলারদের আধিপত্য দেখা যাচ্ছে। এতে করে বাংলার প্রতিভাবান ফুটবলারদেরই বঞ্চিত করা হচ্ছে। বাংলার সন্তোষ ট্রফি জয়ের পরেও বাংলার ফুটবলারদের প্রতি এমন মনোভাব প্রকাশ করা হচ্ছে।

সন্তোষ ট্রফি জয়ে বাংলার ফুটবলারদের তিন বড় ক্লাব ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান এখন সংবর্ধনা দিচ্ছে। এবং এইসব অনুষ্ঠানে বাংলার ফুটবলের উন্নতির নানা পরিকল্পনার কথা ক্লাবকর্তারা ও প্রাক্তন ফুটবলাররা বলছেন। কিন্তু রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগ আমাদের ক্লাবকর্তাদের মুখের কথা ও বাস্তব প্রতিফলনের ফারাক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।

আইএফএ’র পরিচালনায় কলকাতার লিগের প্রথম বিভাগ ও প্রিমিয়ার ডিভিশন মিলে ৫০-এর ওপর ফুটবল ক্লাব আছে। লিগে অংশগ্রহণকারী কয়েক হাজার ফুটবলারদের মধ্য থেকে অনুর্ধ্ব-২১ প্রতিভাবান ফুটবলারদের রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ডেভেলপমেন্ট লিগে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাটা তবে কারা পালন করবে? আইএসএল ও আই লিগের ক্লাবগুলো ছাড়াও বাংলা থেকে বিভিন্ন একাডেমি বা অন্যান্য ক্লাবগুলোকেও এই রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনে খেলার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। এতে করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিভাবান ফুটবলাররা এই ডেভেলপমেন্ট লিগ খেলার সুযোগ পাবে।