• facebook
  • twitter
Tuesday, 1 April, 2025

ব্যর্থতা থেকেও ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস দেখালেন রোহিত শর্মা

রোহিত বলছেন, ‘আগের সিরিজে যেখানে ভুল ছিল, সেগুলো পরের সিরিজে মেটানোর চেষ্টা করেছি। একটা ফাইনাল ছাড়া আমরা সব জিতেছি।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

সব মানুষেরই জীবনপ্রবাহে নানারকম অঘটন ঘটে, আবার কখনও জীবন প্রবাহে রূপ বদলে যায়। এই ধারাটা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় খেলোয়াড়দের জীবনে। অনেক সময় দারুণ ফর্মে থাকেন কোনও ক্রিকেটার। আবার তার কিছুদিন বাদেই ব্যর্থতা তাঁকে হতাশ করে। এমনকি সেই সময় সেই ক্রিকেটার বা খেলোয়াড় নিজেকে সরিয়ে রাখার চিন্তা করেন। এমনকি অবসর নিয়ে চলে আসেন পরিবারে। এমনই ঘটনার কথা জানা গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার খেলোয়াড়ি জীবনে। যদি রোহিত শর্মা গত এক বছরে খেলোয়াড়ি জীবন প্রত্যক্ষ করা যায়, সেখানে দেখা যাবে, কখনও উত্থান আবার কখনও পতনের ছবি। আসলে মানসিক দিক দিয়ে যখন কোনও খেলোয়াড় ভেঙে পড়েন, তখন নিজের খেলার ছন্দ হারিয়ে ফেলেন। তখনই বিতর্ক তৈরি হয়। সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। তির্যক সমালোচনায় নিজেকে সরিয়ে রাখার ভাবনা তাঁকে বারবার পিছুটান নেয়। এমনই ঘটনার কাহিনি রোহিত শর্মার জীবনে উঁকি দিয়েছে।

গত বছর ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে উঠেও রোহিত শর্মা দেশবাসীকে খেতাব তুলে দিতে পারেননি। আবার আইপিএল ক্রিকেট শুরু হওয়ার আগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দল রোহিতের হাত থেকে অধিনায়কের ব্যাটনটা ছিনিয়ে নেয়। সেই জায়গায় হার্দিক পাণ্ডিয়াকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি মুম্বই দলের হয়ে খেললেও সুবিধা আদায় করতে পারেননি। তারপরেও ভারত সফরে আসে নিউজিল্যান্ড দল। সেখানেও রোহিত ব্রিগেডের ব্যর্থতা ধরা পড়ে। সেখান থেকে ভারতীয় দল যখন অস্ট্রেলিয়া সফরে যায়, সেখানেও একটা ব্যর্থতার ছবি বড় করে দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এত ব্যর্থতা রোহিত শর্মাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল। মানসিক দিক দিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিলেন।

শুধু তাই নয়, ওই ফরম্যাটে তিনি আর খেলবেন না বলে ঘোষণাও করে দেন। কিন্তু ভারতীয় দলের নির্বাচকরা তবুও রোহিতের উপরেই ভরসা রেখেছিলেন এবং টি-টোয়েন্ট চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রোহিত শর্মার নামই ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে রোহিত শর্মার ক্রিকেট জীবনে একটা পরিবর্তন আসে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাঁর খেলার ধরন একেবারেই বদলে গেল। রোহিতের পাশে বিরাট কোহলিও নিজেকে মানিয়ে নিলেন। তাই রোহিত বলেছেন, সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে। ব্যর্থতা কখনওই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আগেও বলেছি, আবারও বলছি, জীবনে উথালপাথাল আসে। তাই বলে হতাশায় ঘরের মধ্যে চার দেওয়ালে বন্দি থাকার কোনও কারণ নেই।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আইসিসি টুর্নামেন্টে ২৪ ম্যাচের মধ্যে ২৩ ম্যাচ জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। কীভাবে সেটা সম্ভব হল? রোহিত বলছেন, ‘আগের সিরিজে যেখানে ভুল ছিল, সেগুলো পরের সিরিজে মেটানোর চেষ্টা করেছি। একটা ফাইনাল ছাড়া আমরা সব জিতেছি। ওটা জিততে পারলে আমরা তিনটি বড় আইসিসি টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকতাম। বাইরে থেকে আমাদের সফরটা সুন্দর। কিন্তু কঠিন সময়ও এসেছে। আর এত কিছুর পর সেটা আমরা উদযাপন করতে চাই।’ সবার উচিত, মন থেকে ভয় শব্দটা একেবারেই উড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে উইকেটে দাঁড়িয়ে নিজের খেলা শুধু নয়, দলের সতীর্থ খেলোয়াড়দের সাহস দেওয়া যায়। সেই কারণে ক্রিকেটের সংজ্ঞায় বলতে হয়, আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে খেলতে পারলে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা চাপে পড়ে যাবে। তাই মাঠে নেমে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রতিপক্ষের সামনে মোকাবিলা করতে হয়। এই কথার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলেন ‘হিটম্যান’ রোহিত শর্মা।