বর্ডার-গাভাসকার টেস্ট ম্যাচে শুক্রবার দ্বিতীয় খেলায় ভারত মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। অবশ্য এই খেলাটি দিনে-রাতে হবে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় দল প্রথম টেস্ট ম্যাচে অভাবনীয় জয় তুলে নিয়েছে। তাই আত্মবিশ্বাসী রোহিত শর্মা ব্রিগেড অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। দুই দলের কাছেই এই ম্যাচটি অত্যন্ত মর্যাদার, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দিন-রাতের ম্যাচে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া ভারতের বিরুদ্ধে ১২টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ১১টি ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে। পরিসংখ্যান দিক দিয়ে বিচার করতে গেলে অস্ট্রেলিয়া অবশ্যই এগিয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, গতবার এই মাঠেই দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচে ৩৬ রানে ভারতীয় দল আউট হয়ে গিয়েছিল। সেই লজ্জার দিনটির কথা মনে রেখেই ভারতীয় দল এবারে পাল্টা আঘাত হানতে চাইছে। এমনকি সবসময় মনে রাখতে হবে, রেকর্ড ভাঙার জন্যই অপেক্ষা করতে হয় পরবর্তী খেলার জন্যই। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বলতে দ্বিধা নেই, ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা জোর গলায় বলেছেন, রেকর্ড তৈরি হয় ভাঙার জন্যই। তবে, দ্বিতীয় টেস্টে ভারতীয় দল জেতার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। অস্ট্রেলিয়াকে সমীহ করেই খেলবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ভারতের লক্ষ্য ম্যাচ জেতা। সেই লক্ষ্য জয়ের জন্য ক্রিকেটাররাও তৈরি রয়েছেন।
প্রথম টেস্ট ম্যাচে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরা। এবারে সেই অধিনায়কের ব্যাটনটা রোহিত শর্মার হাতে। অভিজ্ঞ রোহিত নিশ্চয়ই চেষ্টা করবেন, অস্ট্রেলিয়াকে চাপে রেখে দ্বিতীয় টেস্টেও জয়ের হাসি হাসতে। রোহিত মনে করেন, সবসময় বর্তমানের কথা ভেবেই মাঠে নামতে হয়। অতীতে কী হয়েছে, সেই ভাবনাকে দূরে রেখে সামনের পথটাকে উজ্জ্বল করাই হল ক্রিকেটারদের কাজ। এটা ঠিক, গোলাপি বলে অস্ট্রেলিয়া ভালোই খেলে থাকে। সিরিজটা ভারতীয় দল দারুণভাবে শুরু করেছিল, সেটাকে মাথায় রেখেই এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। লম্বা সময় ধরে এগিয়ে যাওয়াটাও সবার মনে রাখতে হবে। পার্থের মতো যদি ভারতীয় দল খেলতে পারে, তাহলে ম্যাচ ছিনিয়ে নেওয়াটা কোনও অসম্ভব ব্যাপার নয়। গোলাপি বলে খেলায় খুব যে সমস্যা হবে, তাও নয়। আলোর ঝলকানিতে কিছু কিছু সময় বলের গতিকে অনুধাবন করা সম্ভব হয় না। শুধু এটা ভারতীয় দলের জন্য প্রযোজ্য নয়, অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রেও একই সমস্যার তৈরি হতে পারে। ভারতীয় দল লাল বলে খেলেছে। তবে, সেই তুলনায় গোলাপি বলে খেলা একটু আলাদা হয়ে থাকে। গত তিনদিন ধরে গোলাপি বলে ভারতীয় দল অনুশীলন করেছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারা যায়, মাঠে নেমে ভারতীয় দল নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে।
রোহিত শর্মা আরও বলেছেন, নতুন পরিকল্পনায় যখন খেলতে হয়, তখন দু’দলের কাছেই চ্যালেঞ্জ থাকবে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করেই খেলতে হবে। নিজেদের প্রমাণ করার জন্য মানসিক ভাবে তৈরি থাকতে হয়। মাঠে নামার আগে পরিবেশকে বুঝে নিতে হবে। আর বুঝে নিতে পারলেই কোনও সমস্যাই বড় করে দেখা দেবে না।
এদিকে প্রথম টেস্টে ভারতীয় দলের যে দাপট দেখতে পাওয়া গিয়েছে, তাকে হাতিয়ার করেই দ্বিতীয় টেস্টেও অস্ট্রেলিয়াকে কোণঠাসা করার একটা পরিকল্পনার রূপরেখা তৈরি করা হবে। দলের তরুণ ক্রিকেটাররা নজর কাড়ছেন, এটাও ভালো দিক। বিশেষ করে যশস্বী জয়সওয়াল যেভাবে ব্যাট করছেন, তা ভারতীয় দলের কাছে প্লাস পয়েন্ট। ঋষভ পন্থও ভালো খেলছেন, রানও পাচ্ছেন। এটা অবশ্যই ভালো বার্তা। আবার অভিজ্ঞ ও নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি পুরনো ফর্মে ফিরে এসেছেন। কোহলিকে নতুনভাবে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তাই ভারতীয় দলে উৎসাহের জোয়ার নেমে এসেছে। শুভমন গিল দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে নামবেন। শুভমন গিলকে নতুন করে পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। তাঁর ব্যাটে বড় রান আসবে, এই বিশ্বাস আছে। আবার তরুণ প্রজন্মের খেলোয়াড়রা ভারতীয় দলকে সমৃদ্ধ করছেন। পাশাপাশি বলতে দ্বিধা নেই,যশপ্রীত বুমরা যেভাবে প্রতিপক্ষ দলের উইকেট ভেঙে দিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছেন, তা ভাবা যায় না। একটা সময় মনে হত, বিদেশের মাটিতে খেলতে নামলে ভারতীয় দল অস্বস্তির মধ্যে থাকত। কিন্তু তা আজ সেই ভাবনার জায়গা পায় না। তারপরে তরুণ ক্রিকেটাররাও সাহসী ভূমিকা নিয়ে খেলার চেষ্টা করে থাকেন, যা সবার কাছে বড় প্রেরণা।