লকনউ সুপার জায়ান্টসঃ ৭ উইকেটে ১৬১ (২০ ওভার)
কেকেআরঃ ২ উইকেটে ১৬২ (১৫.৪ ওভার)
নিজস্ব প্রতিনিধি– ধোনিদের বিরুদ্ধে হারের হ্যাংওভার কাটিয়ে কেকেআর রবিবার সন্ধ্যায় এমনভাবে ফিরে এল যা দেখে বোঝাই গেল না, কদিন আগে তারা চেন্নাই গিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে৷ আসলে ইডেনে খেলতে নামলে দলের চেহারা পুরোপুরি বদলে যায়৷ গ্যালারি ভর্তি ফ্যানদের চিৎকারে কোথা থেকে যেন বাড়তি এনার্জি পেয়ে যায় বেগুনি জার্সির দলটি৷ সেই চেনা ছন্দ, সেই দাপট আর তাতেই ২৬ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে হারিয়ে দু নম্বরে থেকে গেল৷ পাঁচ ম্যাচ খেলে আট পয়েন্ট৷ প্লে অফ খেলার দিকে আরও এক পা বাডি়য়ে দিল কেকেআর৷
কলকাতায় খেলতে এসে বড় চমক দেওয়ার চেষ্টা করেছিল লখনউ সুপার জায়ান্টস৷ দলের ভাগ্য ফেরাতে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ওরা মাঠে নামল৷ কিন্ত্ত এই জার্সি বদল করলে দলের খেলার চেহারা কি বদলে যায়! ওদের প্রতিপক্ষ পাঞ্জাব বা অন্য কোনও দল নয়৷ দলের নাম কেকেআর৷ তার উপর খেলতে নামছে ইডেনে রাসেলদের ঘরের মাঠে৷ সেই দলের বিরুদ্ধে কী করে তারা মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়বে৷ সেটা সম্ভব হল না বলে গো হারান হেরে ঘরে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিল৷
কেকেআরের প্লাস পয়েন্ট ওপেনিংয়ে কিছু একটা করা৷ নারাইন বা সল্ট, দু’জনের কেউ একজন দাঁডি়য়ে গেলে বড় রানের দিকে ছোটে কেকেআর৷ আজও সেটাই হল৷ সুনীল নারাইন, অঙ্গকৃশ রগুবংশী শুরুতে ফিরলেও কেলা দরে নিলেন ফিল সল্ট৷ আগের দুটি ম্যাচে রান পাননি৷ কিন্ত্ত রবিরার সল্ট বড় ইনিংস খেলার মানসিকতা নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন৷ তাঁর সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার৷ লখনউয়ের ১৬১ রান তাড়া করতে নেমে ৩.১ ওভারে ৪২ রানে দু’জন ফিরে গেলেন৷ দুটি উইকেট হারালেও রানের গড় এমন জায়গায় চলে গিয়েছিল যে কেকেআর শুরুতেই ম্যাচ নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছিল৷
তারপর সল্ট যে রুদ্রমূর্তি ধারণ করে প্রতিপক্ষ বোলারদের ঘাডে় চেপে বসলেন তা দেখে রাহুলও বুঝে গিয়েছিলেন, এই দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতা সম্ভব নয়৷ শেষ পর্য়ন্ত সেটাই হল৷ ২৬ বল বাকি থাকতে ইডেন রাঙ্গিয়ে দিল শাহরুখের দল৷ ম্যাচের সেরা সল্ট ৪৭ বল খেলে ৮৯ রানে ( ১৪টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওবার বাউন্ডারি) অপরাজিত থাকলেন৷ স্ট্রাইক রেট ১৮৯.৩৬৷ উল্টোদিকে দাঁডি়য়ে শ্রেয়াস আইয়ার ৩৮ বল খেলে ৩৮ করলেন৷ এই ম্যাচে শ্রেয়াসের খেলা নিয়ে কথা উটবে না৷ তিনি সল্টের পাশে দাঁডি়য়ে স্ট্রাইক রোটেট করেছেন৷ কিন্ত্ত মঙ্গলবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে তাদের খেলা৷ সেদিনও এমন মন্থর ব্যাটিং করলে কী লেখা হতে পারে৷ শ্রেয়াস কি নিজে বুঝতে পারছেন! আগের ম্যাচগুলিতেও তিনি এভাবে খেলে দলকে চাপের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন৷ এদিন ইডেনে একইভাবে খেললেন৷ এভাবে খেললে পারবেন তো!
সল্টের পর আলোচনায় আসবেন মিচেল স্টার্ক৷ তিনি উইকেট পাচ্ছেন না৷ এর আগে মাত্র দুটি উইকেট পেয়েছেন৷ তাই প্রায় ২৫ কোটি টাকার ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা উঠে গিয়েছে৷ মেন্টর গৌতম গম্ভীর পাশে আছেন৷ তিনি বলেছিলেন, ও ঠিক ঘুরে দাঁড়াবে৷ সেটাই লখনউয়ের বিরুদ্ধে যে হবে, সেটা আগে কে বুঝেছিলেন৷ ৪ ওভারে ২৮ রানে ৩ উইকেট৷ এমন বোলিং করতে পারলে সঞ্জু স্যামসনরা চাপে পড়বেন৷ তবে চোখে পড়ল নারাইনের বোলিং৷ তিনি ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে পেলেন ১ উইকেট৷ এখানেই রাহুলরা বড় ধাক্কা খেলেন৷ যেখান থেকে তাঁরা উঠে দাঁড়াতে পারলেন না৷ তাই প্রথম ১০ ওভারে ৭৫ রানের বেসি করতে পারেনি লখনউ৷ সেখানেই ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায়৷ রাহুল (৩৯), পুরান (৪৫), বাদোনি (২৯) ছাড়া কারোর ব্যাটে রান দেখতে পাওয়া যায়নি৷ রাহুল সব ম্যাচেই তিরিশের ঘরে ঢুকে আটকে যাচ্ছেন৷ এভাবে চললে কী করে তিনি বিশ্বকাপ দলে ঢোকার স্বপ্ন দেখতে পারেন! তাই না…!