আজ জয়ের খোঁজে ঘরের মাঠে লাল-হলুদ ব্রিগেড

নিজস্ব প্রতিনিধি— এ বারের আইএসএল ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে প্রথম থেকেই দল গঠনে বিশেষ নজর দিয়েছিলেন কর্মকর্তারা। এমনকি কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাতের সঙ্গে কথা বলে বিদেশি খেলোয়াড়দের পাশে স্বদেশি ফুটবলারদেরও সেইভাবে চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল। এবং বেশ কয়েকমাস আগে থেকেই প্রস্তুতি পর্বও শুরু হয়েছিল আইএসএল ফুটবলে খেলার জন্য। কিন্তু যখনই লাল-হলুদ ব্রিগেড মাঠ নামল, তখন তাদের দাপট দেখতে পাওয়া গেল না। হয়তো ভিনরাজ্যে গিয়ে তাদের প্রথম দুটো ম্যাচ খেলতে হয়েছে। ভিনরাজ্যে খেললেও দুটো ম্যাচই হারতে হবে, তা ভাবা যায়নি। আসলে দলের মধ্যে কোথায় যেন একটা সমন্বয়ের অভাব ছিল। যার ফলে রক্ষণভাগের ভুলে গোল হজম করতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। আবার দেখা গিয়েছে, খেলার শেষ ১০ থেকে ১৫ মিনিটে খেলোয়াড়রা বেদম হয়ে পড়ছেন। যার ফলে প্রতিপক্ষ দলের আক্রমণে হিমশিম খেতে হচ্ছে রক্ষণভাগকে।

আনোয়ার আলিকে এনেও সেই ভাবনা থেকে মুক্তি পাননি কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। পরপর দুটো ম্যাচে হার স্বীকার করতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। প্রথম ম্যাচে হেরে গিয়েছে বেঙ্গালুরু এফসি’র কাছে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের কাছে পৌঁছেও শেষ পর্যন্ত হার স্বীকার করতে হয়েছে কেরল ব্লাস্টার্সের কাছে। এই হারের পরেই সমর্থকরা কোচ কুয়াদ্রাতকে ঠিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না। কোচের কোথায় যেন একটা গলদ রয়েছে। তা খুঁজে বার করতেই হবে। এমন একটা ভাবনা কর্মকর্তাদের কথাবার্তায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দুটো ম্যাচ হারার পরে কোচকে রাখা হবে কিনা, তা নিয়েও চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে ক্লাব অভ্যন্তরে।

শুক্রবার ঘরের মাঠে খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল। বিপক্ষে এফসি গোয়া। তবে একটি ব্যাপারে স্বস্তি পাবে সমর্থকরা ভিড় করবেন গ্যালারিতে। তাঁদের উৎসাহ ও উদ্দীপনায় খেলার চরিত্র হয়তো বদলেও যেতে পারে। ইতিমধ্যেই আরও কিছু সমস্যা আছে, সেই সমস্যাগুলি কীভাবে সমাধান করা যায়, এই বিষয়েও বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন কোচ নিজে। কোচ কুয়াদ্রাত মনে করেন, অনেক সময় দেখা গিয়েছে খেলার মধ্যে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করতে মাঝমাঠের খেলোয়াড়রা সেইভাবে সক্রিয় হচ্ছেন না। কেন হচ্ছেন না, সেটাও ভাবতে হবে। এখন টোটাল ফুটবল খেলা হয়। সেখানে নির্দিষ্টভাবে কারওর ওপরে নির্ভর করা হয় না। তাই আশা করা যায়, সব ভুল শুধরে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এবং প্রথম জয়ের মুখ দেখার সার্থক রূপ দিতে সেরা খেলা উপহার দেবেন ফুটবলাররা। ডুরান্ড কাপের পর আবার যুবভারতীতে খেলতে নামবে ইস্টবেঙ্গল।


পর পর ম্যাচ হেরে যে চাপ বাড়ছে তা স্বীকার করে নিলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রতও। তিনি বলেন, ‘শুরুটা ভাল হয়নি। চাপ তো থাকবেই। সব ম্যাচের আগেই চাপ থাকে। এই ম্যাচের আগেও রয়েছে। আমরা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছি। বেশ কিছু তরুণ ভারতীয় ফুটবলার রয়েছে আমাদের দলে। সেই সঙ্গে ভাল মানের বিদেশি রয়েছে। সকলের মধ্যে বোঝাপড়াটা প্রয়োজন। দলে কিছু ফুটবলারের চোট রয়েছে। গোয়ার বিরুদ্ধে কে কে খেলতে পারবে সেটা কাল বুঝতে পারব।’

যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে কিছু অসুবিধা হবে। সাধারণত কলকাতার মাঠে বৃষ্টির মধ্যে খেলতে অভ্যস্ত দল। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, বেশ কয়েকজন বিদেশি ফুটবলার রয়েছেন, তাঁরা কীভাবে বৃষ্টিভেজা মাঠে খেলবেন, সেটাও কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়। তবু বিশ্বাস, ইস্টবেঙ্গলের সব ফুটবলার উজাড় করে খেলার জন্য তৈরি রয়েছেন। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে চোটের কারণে দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসের খেলা নিয়ে সংশয় রয়েছে। জ্বর হয়েছে সাউল ক্রেসপোর। আসলে তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। সেই কারণে তাঁর খেলার কোনও সম্ভাবনাই নেই।

স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করা হয়েছে। রক্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ক্রেসপোর ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। সেই কারণে তিনি কতদিন বাদে মাঠে নামবেন, তা নিয়ে কোচ এখনই কিছু বলতে পারলেন না। কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচে ক্রেসপো জ্বর নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন। তাই তরুণ ফুটবলারদের উপরই নির্ভর করবেন কোচ। হয়তো গোলরক্ষক বদল হতে পারেন। দেখা যেতে পারে প্রথম একাদশে দেবজিতকে। অনুশীলনে দেবজিতকে নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত করেছেন গোলরক্ষক কোচ।