• facebook
  • twitter
Tuesday, 11 March, 2025

অপমান মেনে নিতে পারেননি রবিচন্দ্রন অশ্বিন

অশ্বিনের বাবা ছেলের হঠাৎ অবসর নেওয়ার কথা জানতে পেরে হতবাক হয়ে যান। তিনি বলেন, ছেলে রবিচন্দ্রন অসম্মানিত হওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। বাড়ি থেকে বাইকে ছেলেকে নিয়ে অনুশীলনে পৌঁছে দেওয়ার কথা ভুলে যায়নি।

ভারতীয় ক্রিকেট দলের ১৪ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। অস্ট্রেলিয়া সফর চলাকালীন তৃতীয় টেস্ট ম্যাচের শেষ দিনে বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করে দেন। সম্পর্ক শেষ হওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার অশ্বিন দেশে ফিরে এলেন। চেন্নাই বিমান বন্দরে এই দিন পৌঁছনোর পরেই অশ্বিন ঘেরাটোপে বাড়ির পথে পা বাড়ান। এমনকি তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি।

বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। ব্রিসবেন ছাড়ার আগে সতীর্থদের উদ্দেশে বেশকিছু কথা বলেছেন অশ্বিন। প্রয়োজনে তাঁদের পাশে থাকার কথা বলেছেন। তবে বাড়িতে ফিরে আসার পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘অনেকের জন্য তাঁর অবসর নেওয়ার আবেগ, ক্রিকেটের প্রতি আবেগ তো থাকবে। ধীরে ধীরে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে হবে। এই অবসর আমার জন্যে মুক্তি এবং সন্তুষ্টি। বেশ কিছুদিন ধরেই অবসরের কথা আমার মাথায় ঘুরছিল। তবে হঠাৎই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। ব্রিসবেনে তৃতীয় টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ দিনে পাকা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পঞ্চম দিনে প্রকাশ্যে আনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও ক্লাব ও আইপিএল ক্রিকেটে খেলবেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, তা বলতে দ্বিধা করেননি। অর্থাৎ পুরনো ক্লাব চেন্নাই সুপার কিংস দলের হয়ে খেলতে দেখা যাবে অশ্বিনকে। অশ্বিন জানান, চেন্নাই দলের হয়ে যতদিন পারবো, ততদিন খেলে যাব। অবাক হওয়ার কোনও কারণ নেই। ক্রিকেটার অশ্বিনের আরও কিছু দেওয়ার আছে। নিজ রাজ্য দলে খেলার ইচ্ছা থেকে সরে দাঁড়াইনি।

এদিকে অশ্বিনের বাবা ছেলের হঠাৎ অবসর নেওয়ার কথা জানতে পেরে হতবাক হয়ে যান। তিনি বলেন, ছেলে রবিচন্দ্রন অসম্মানিত হওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। বাড়ি থেকে বাইকে ছেলেকে নিয়ে অনুশীলনে পৌঁছে দেওয়ার কথা ভুলে যায়নি। ছেলেকে অপমান করা হয়েছে। তাঁর অবসর নেওয়ার পিচনে অনেক কারণ আছে। অবসর নেওয়াটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু কেউ বা কারা অপমান করতে পারেন না।

প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিং বলেন, আসলে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ইংল্যান্ড সফরে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলেই হয়তো অশ্বিন মাঝপথে অবসর নেওয়ার কথা ভেবেছেন। কিন্তু রবিচন্দ্রণের বাবা ও পরিবার অবসরের কথা শুনে খুশি হতে পারেননি। যদি কোনও খেলোয়াড় ধারাবাহিকভাবে অসম্মানিত হন, তিনি কখনও নীরবতা পালন করতে পারেন না। অবসর নেওয়াটা পরিবারের কাছে বড় একটা ধাক্কা।

ভারতের জার্সিতে ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচে অভিষেক হয় তামিলনাড়ুর এই তারকা ক্রিকেটারের। তারপর থেকে একের পর এক সাফল্যের সিঁড়িতে পা রেখেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ওই বছরেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়। ভারতীয় দলের হয়ে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেন ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ভারতের হয়ে তিনি ১০৬ টেস্টে ২০০ ইনিংসে ৫৩৭টি উইকেট পেয়েছেন। এক ইনিংসে তাঁর সেরা বোলিং ৫৯ রানে ৭ উইকেট দখল করা। একদিনের ক্রিকেটে ১১৬টি ম্যাচে ১৫৬ উইকেট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৬৫ ম্যাচে ৭৫টি উইকেট নেওয়া। তাই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ক্রিকেট জীবন অবশ্যই উজ্জ্বল।