নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা ময়দানে মোহনবাগান নামের সঙ্গে যে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে, তা ক্রমেই কি হারিয়ে যাচ্ছে? কলকাতা ফুটবল লিগে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের এমন করুণ অবস্থা অতীতে সমর্থকরা দেখতে পেয়েছেন কিনা, এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতেই পারে৷ মঙ্গলবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে মোহনবাগান মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতা পুলিশের সঙ্গে৷ পুলিশের প্রতিরোধকে কোনওভাবেই টপকে যেতে পারল না সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা৷ খেলা শেষ হল ১-১ গোলে৷ কী হয়েছে মোহনবাগানের? পাঁচটা ম্যাচ খেলা হয়ে গেল৷ তার মধ্যে পিয়ারলেসের বিরুদ্ধে কষ্টার্জিত জয় ছাড়া আর পুরো পয়েন্ট নিয়ে ঘরে আসতে পারেনি৷ প্রথম ম্যাচে ভবানীপুরের সঙ্গে গোলশূন্যভাবে খেলা শেষ করে৷ দ্বিতীয় ম্যাচে ২-২ গোলে রেনবো ক্লাবের সঙ্গে খেলা শেষ করে পয়েন্ট নষ্ট করতে হয়েছিল মোহনবাগানের৷ আর তারপরের ম্যাচ বলতে ডার্বি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ১-২ গোলে হেরে গিয়ে মোহনবাগান অনেকটা পিছিয়ে পড়ে৷ তবে পিয়ারলেসের সঙ্গে জেতার পরে অনেকেই আশা করেছিলেন হয়তো মোহনবাগান ঘুরে দাঁড়াবে৷ সেই আশা অধরাই থেকে গেল৷
কল্যাণীর মাঠে সমর্থকদের সেইভাবে চোখে পড়ল না, কিন্ত্ত মোহনবাগানের খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রকাশ করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হন৷ যে দলকে নিয়ে মোহনবাগান সমর্থক অনেক আশার জাল বুনেছিলেন, তাঁরা ধীরে ধীরে হতাশায় মুখ লুকিয়ে ফেলছেন৷ যে খেলায় মোহনবাগান দুটো পেনাল্টি পায়, তা থেকে গোল করতে পারবে না এটা ভাবা যায়! এখন প্রশ্ন থেকে যায়, কোচ ডেগি কার্ডোজের প্রশিক্ষণে খেলোয়াড়রা নিজেদের কীভাবে তৈরি করছেন৷ শেলার শুরুতেই মোহনবাগান এগিয়ে যেতে পারত৷ সেখানেও ব্যর্থতা৷ হয়তো ব্যর্থতার চাপে মোহনবাগান তাদের নিজেদের খেলা হারিয়ে ফেলেছে৷ ১৮ মিনিটের মাথায় সুহেল ভাটের শট বারের পাশ দিয়ে চলে যায়৷ খেলার ২৬ মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের ফারদিন আলি মোল্লার কর্নার থেকে বল পেয়ে সুহেল ভাট দক্ষতার সঙ্গে গোল করেন৷ ৩৮ মিনিটে টংসিনের সঙ্গে সাহিল শেখের সংঘর্ষ হয়৷ তাতে রেফারি সাহিলকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সাবধান করে দেন৷ খেলার প্রথমার্ধের ৪৪ মিনিটের মাথায় মোহনবাগান পেনাল্টি পেয়ে যায়৷ বক্সের মধ্যে সুহেল ভাটকে ফাউল করেন পুলিশের ডিফেন্ডার৷ রেফারি পেনাল্টি দিতে কোনও দ্বিধা বোধ করেননি৷ স্পট কিক থেকে গোল করতে পারেননি ফারদিন৷ ফারদিনের শট বাঁচিয়ে দেন পুলিশের গোলরক্ষক মহিদুল৷
খেলার দ্বিতীয় পর্বে পুলিশ আরও বেশি আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে মোহনবাগান শিবিরে হানা দিতে থাকে৷ পাল্টা আঘাত হেনে মোহনবাগান পুলিশের দুর্গে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করে৷ তারই মধ্যে লেওয়ান কাস্তানাকে ফাউল করেন বক্সের মধ্যে পুলিশের রক্ষণভাগের ফুটবলার৷ আবার পেনাল্টি পায় মোহনবাগান৷ এবারে পেনাল্টি নিতে আসেন অভিষেক সূর্যবংশী৷ অভিষেকের শট বারের উপর দিয়ে চলে যায়৷ স্বাভাবিকভাবে পুলিশের আক্রমণ বাড়াতে কোচ খেলোয়াড় পরিবর্তন করেন৷ আক্রমণে গতি বাড়তে পুলিশ ফুটবলাররা মোহনবাগান শিবিরে আবার আঘাত হানেন৷ সেই আক্রমণ থেকে রবি দাস গোল করে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন৷ তারপরেই জোটবদ্ধভাবে পুলিশের ফুটবলাররা ব্যারিকেড তৈরি করে মোহনবাগানের আক্রমণকে ছত্রভঙ্গ করে দেন৷ রেফারি দ্বিতীয় পর্বে ৯ মিনিট সংযুক্ত সময় দেন৷ তারই মধ্যে পুলিশের তৌহিদ ও মোহনবাগানের অভিষেক সূর্যবংশী লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যান৷ শেষ পাঁচ মিনিট দুই দলই ১০ জন করে খেলেন৷ কিন্ত্ত ওই খেলায় আর কোনও গোলের ব্যবধানে পরিবর্তন হয়নি৷