মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস আবার পয়েন্ট নষ্ট করল। বুধবার কাস্টমসের বিরুদ্ধে যেভাবে গোলের সুযোগ হারিয়েছে, তাতে ১ পয়েন্ট পাওয়াটাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কাস্টমসের সঙ্গে মোহনবাগান ড্র করল গোলশূন্যভাবে। পয়েন্ট নষ্ট করায় মোহনবাগানের কাছে শেষ ছয়ে খেলা বেশ কঠিন হয়ে গেল। এই মুহূর্তে গ্রুপে তারা আবার পিছিয়ে পড়ল। এমনকি কোচ ডেগি কার্ডোজ বেশ চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলেন নকআউট পর্যায়ে তাঁর দল খেলতে পারবে কিনা। এবারে কলকাতা ফুটবল লিগে প্রথম থেকেই সবুজ-মেরুন ব্রিগেড তার পুরনো মেজাজ কোনও ম্যাচেই সেভাবে দেখাতে পারল না। ইতিমধ্যেই তারা ন’টা ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তার মধ্যে মাত্র তিনটি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছে। ডার্বি সহ দু’টি ম্যাচে হারতে হয়েছে তাদের। এই মুহূর্তে দলের সেরা খেলোয়াড় সুমিত রাঠিরা যেভাবে প্রতিপক্ষ দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নামছে, তাতে মনে হয় শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে তারা টিকে থাকতে পারবে তো? সামনেই রয়েছে ডুরান্ড কাপ ফুটবলের ডার্বি ম্যাচ। এই ডার্বি ম্যাচের আগে মোহনবাগানের এমন অবস্থা দেখে সমর্থকরাও কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের প্রশিক্ষণে কাস্টমস এদিন মোহনবাগানের বিরুদ্ধে বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও এমনই খেলা খেলেছিল কাস্টমসের ফুটবলাররা। এই দলে বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ফুটবলার রয়েছেন, যাঁরা মোহনবাগানের তরুণ ব্রিগেডের সামনে ভালো লড়াই করেছেন। বিশেষ করে বড় দলে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে গোলরক্ষক শুভম সেন এদিন সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন। তেমনই আবার রবি হাঁসদা, আকাশ মণ্ডল ও আমনরা যেভাবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ভালো খেলার নজির গড়লেন, তাতে স্পষ্টই বোঝা গিয়েছিল এই ম্যাচ সহজে শেষ হবে না। মোহনবাগানের গোলরক্ষক রাজা বর্মণ সবসময় একটা চাপের মধ্যে ছিলেন। এমনকি মাঝমাঠের খেলোয়াড়রাও সেইভাবে দিশা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ঘরের ছেলে সন্দীপ মালিক ও ফারদিন আলি মোল্লা অন্য দিনের তুলনায় এদিন অনেকটাই নিস্প্রভ ছিলেন। যার ফলে সেইভাবে মোহনবাগানের আক্রমণ চোখে পড়েনি। খেলার প্রথমার্ধে যে ধারায় দুই দলকে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল, তুলনায় দ্বিতীয় পর্বে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়ে খেলতে দেখা গিয়েছে কাস্টমসকে।
তবে, ডুরান্ড কাপ ফুটবলের ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগানের এই খেলোয়াড়রা অবশ্যই খেলবেন না। কিন্তু সমর্থকরা আশা করেছিলেন, এদিন মোহনবাগান জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বে। কিন্তু সেই আশা পূর্ণ হল না। এদিকে, কোচ হোসে মোলিনার নেতৃত্বে সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলাররা অনুশীলন করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন, বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভারতীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে যে সমন্বয়, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। এখনও দু’দিন হাতে রয়েছে। তাই যে অভাবটা অনুশীলনে দেখা গিয়েছে, তা পূরণ করে নিতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন কোচ নিজেও। বিদেশি খেলোয়াড়দের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন কোচ মোলিনা। ইতিমধ্যেই ডুরান্ড কাপের ডার্বি ম্যাচের টিকিটের চাহিদা বেশ তুঙ্গে উঠতে শুরু করেছে। এখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে অনুরোধের বার্তা। এখন দেখার বিষয়, ডার্বি ম্যাচের লড়াই কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছয়।